somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আগাচৌ সমাচার: আল্লাহ মানুষকে এত বেকুব বানায় কেমনে?

১৩ ই মে, ২০০৮ সকাল ১১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাগো বিবর্ন আবদুল গাফফার চৌধুরীকে নিয়ে একটা পোস্ট দিছে। লাইভ দেখতে হলে এখানে টিপি দেন, আর ওখানে লেখককর্তৃক ডিলিট হয়ে গেলে এই পোস্টের পরিশিষ্ঠ দেখুন।

বিবর্ন লিখেছেন,

"১৯৭৫ সালের জুন মাসে সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে ততকালীন সরকার নিয়ন্ত্রনের ৪টি পত্রিকার প্রধান, বর্ষীয়ান লেখক, সাংবাদিক, কবি ও বুদ্ধিজীবী জনাব আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী এসেছিলেন ভেসিনের বাংলাদেশীদের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে। এয়ারপোর্টে স্বাগত জানাতে আয়োজকদের সাথে আমিও গিয়েছিলাম। জনাব চৌধুরী খুব ধীর পায়ে বেরিয়ে এলেন ইমিগ্রেশন পেরিয়ে। বয়সের ভার সামলাতে হাতে লাঠি। খুব যত্ন করে বুদ্ধিজীবীর কোমর পেঁচিয়ে হাটছেন চল্লিশোর্ধ এক বাঙালী রমনী। আয়োজকরা নিজেদের মধ্যে এক পশরা চোখাচোখী করে নিল। কবির সাথে কোন নারী আসবে তারা আগে থেকে জানে না। নারীর জন্য আলাদা থাকার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। মেয়ের বয়সী মহিলার প্রতি বুদ্ধিজীবীর কেয়ারীং এবং মহিলার মুখে 'গাফ্ফার ভাই' ডাকটা উপস্থিত অনেকের কাছেই অসস্তি লাগছিল।"

খুব মজাদার কথা নিঃসন্দেহে। ১৯৩৪ সালে জন্ম নেয়া গাফফার চৌধুরী ১৯৭৫ সালে ৪১ বছর বয়সেই বয়সের ভার সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। :P

চল্লিশোর্ধ বাঙালি রমনীর কাছে ৪১ এর আগাচৌ পিতার বয়সী। ;)

জনাব লেখক আবার এর প্রত্যক্ষদর্শী, তিনি নিজেই আগাচৌকে স্বাগত জানাতে এয়ারপোর্টে গিয়েছিলেন। :D

লেখার তথ্যসূত্র চাইলাম। সে ত্যানা পেচায়। লেখক নাকি তার এক বন্ধু, এই ব্লগেও লেখে বলে তার নাম প্রকাশ করা যাবে না। :| আমি শুধু জানতে চাইছিলাম, এইরম রূপকথা লেখা বেকুবটা কে, সাপ্তাহিক ২০০০ এর কোনো রাইটার, নাকি এডিটর, নাকি বিবর্ন নিজে।

(পোস্ট এই পর্যন্তই)_____________________________________________
পরিশিষ্ট:

একজন আগাচৌ সমাচার বা আমার দেখা বুদ্ধিজীবী!!

(লেখক: বিবর্ন)

১৯৭৫ সালের জুন মাসে সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে ততকালীন সরকার নিয়ন্ত্রনের ৪টি পত্রিকার প্রধান, বর্ষীয়ান লেখক, সাংবাদিক, কবি ও বুদ্ধিজীবী জনাব আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী এসেছিলেন ভেসিনের বাংলাদেশীদের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে। এয়ারপোর্টে স্বাগত জানাতে আয়োজকদের সাথে আমিও গিয়েছিলাম। জনাব চৌধুরী খুব ধীর পায়ে বেরিয়ে এলেন ইমিগ্রেশন পেরিয়ে। বয়সের ভার সামলাতে হাতে লাঠি। খুব যত্ন করে বুদ্ধিজীবীর কোমর পেঁচিয়ে হাটছেন চল্লিশোর্ধ এক বাঙালী রমনী। আয়োজকরা নিজেদের মধ্যে এক পশরা চোখাচোখী করে নিল। কবির সাথে কোন নারী আসবে তারা আগে থেকে জানে না। নারীর জন্য আলাদা থাকার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। মেয়ের বয়সী মহিলার প্রতি বুদ্ধিজীবীর কেয়ারীং এবং মহিলার মুখে 'গাফ্ফার ভাই' ডাকটা উপস্থিত অনেকের কাছেই অসস্তি লাগছিল।
মহিলার নাম পারভীন সুলতানা। পলাশী থেকে ধানমন্ডি নাটকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের অভিনেত্রী তিনি। স্বামী নেই। একা থাকেন লন্ডনে। লেখকের সফর সংগী হতে পছন্দ করেন। বয়সী সাংবাদিক লন্ডনের বাইরে সফর করলে তিনি সাথে থাকেন। কথা প্রসঙ্গে জানালেন, লেখকের সেবায় নিজেকে কোরবান করতেও রাজী আছেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বুদ্ধিজীবী গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করলেন। ৩৮ মিনিটের বক্তৃতা শুনলাম মন্ত্রমুগ্ধের মতো। পরদিন সকালে আবারো দেখা করতে গেলাম। ইচ্ছে ছিল লেখকের সাথে ভেনিস ঘুরব। গোনদলায় (ভেনিসের নৌকা বিশেষ) চড়ব। মাঝিদের গলায় ভেনিসের আনচলিক গান শুনব। কিন্তু কে জানতো এক মহা বিব্রতকর অবস্থা অপেক্ষা করছে!
রাগে ফুসে ফুসে উঠছেন বুদ্ধিজীবী। গলার বয়সী রগগুলো ফুলে উঠেছে। চোখে মুখে জমা হয়েছে রক্ত। হুমকির সুরে বললেন, তোমাদের বিরুদ্ধে আমি পত্রিকায় লিখব।
তার রাগের কারন জানতে পারলাম দুটি! প্রথমত অনুষ্ঠানে পারভিন সুলতানাকে বক্তৃতা করতে দেয়া হয়নি। দ্বিতীয়ত রাতে বুদ্ধিজীবী তার রুমে একবোতল রেড'লেবেল ও একজোড়া গ্লাস পাঠাতে বলেছিলেন। আয়োজকরা পাঠিয়েছে রেড'ওয়াইন!
আয়োজকরা বার বার ক্ষমা চাচ্ছে ওইতিহাসিক একুশের গানের লেখকের কাছে। তারা বলছে, পারভীন আপা আসবেন আগে থেকে জানা না থাকার কারনে তার নাম বক্তৃতার খাতায় রাখা সম্ভব হয়নি। আর যাকে বর্ষীয়ান বুদ্ধিজীবী রেড লেবেলের কথা বলেছেলেন সে ভুল শুনেছে। ফলে রেড লেবেলের পরিবর্তে পাঠিয়েছে রেড ওয়াইন!
বুদ্ধিজীবী তাদেরকে ক্ষমা করতে পারলেন না। লন্ডনে ফিরে ভেনিস সফরের কথা লিখলেন ঢাকার একটি দৈনিকে। একটি লিখার মধ্যে যতটা সত্য বিকৃত করা যায়, নিজেকে বিসর্জন দেয়া যায়- তার সব চেষ্টাই তিনি করেছেন যত্ন করে। যাদের পকেটে সওয়ার হয়ে স'বান্ধব ভেনিস ভ্রমন করলেন তাদের নামটুকু উল্লেখ করার মতো সামান্য উদারতা তিনি দেখাতে পারেননি। কার সুন্দরী বউ তার পা ছুঁয়েছে, বাড়িতে ডেকে শুটকি ভর্তা নিজ হাতে থালায় তুলে দিয়েছে, যুবতী কন্যা সঙ্গযুগিয়েছে তা লিখেছেন বেশ খুটিয়ে খুটিয়ে। অনুষ্ঠানে নাচতে দেখে এক সুন্দরী শোড়ষীকে বড্ড মনে ধরে বুদ্ধিজীবীর। লন্ডন থেকে ফোন করে তার নাম জেনে লিখেছেন মনের মাধুরী মিশিয়ে। ধান ভানতে শিবের গানের মতো প্রথম আলো এবং যায়যায়দিন'র বিরুদ্ধে খিস্তি করতে ভোলেননি। বিভ্রান্তি দিয়েছেন দেশের রাজনৈতিক প্রসঙ্গে। ভেনিসের একমাত্র বাংলা রেডেও 'রেডিও বাজে' নিয়েও দিয়েছেন মনগড়া তথ্য।
কেন তিনি এমন করলেন? এ প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। আমি তাকে শ্রদ্ধা করতে চাই। নোংরা কিছু বলে মনের দৈন্যতা প্রকাশ করতে চাই না। ছোট করতে চাই না প্রিয় লেখক জনাব চৌধুরীকে। হয়তো বয়সের ভারে অনেক কিছু সাভাবিক ভাবে নেয়ার ক্ষমতা তিনি হারিয়েছেন। কিন্তু আমরা তাকে আরো উদার দেখতে চাই। শেষ বয়সে অন্তত একটি হলেও সঠিক ও সত্য কলাম দেখতে চাই। যা ঘুনে ধরা আমাদের সমাজকে সভ্য হতে শেখাবে।



লিখাটি সাপ্তাহিক ২০০০ এ প্রকাশিত। লেখকের ইচ্ছায় নাম প্রকাশ করা হলো না।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০০৮ দুপুর ১:২২
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×