মরুভূমির ধুলিগর্ভে হারিয়ে যাওয়া এক অভূতপূর্ব নগরী ইরাম, যাকে ডাকা হয় মরুর আটলান্টিস। কথিত আছে, শাদ্দাদ বিন আদ নামের এক ব্যক্তি ছিল এ শহরের রাজা, তার নির্দেশেই নির্মিত হয় 'ভূস্বর্গ'। চলুন জেনেনি আজ ইরাম নগরীর যত গল্প।
অবাক করা ব্যাপার, কেবল উপকথার পাতাতেই নয়, ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কুরআনেও উল্লেখ আছে এ নগরীর, "তুমি কি ভেবে দেখনি তোমার প্রতিপালক আ'দ জাতির ইরামে কী করেছিলেন? তাদের ছিল সুউচ্চ সব স্তম্ভ, যেমনটি পৃথিবী কোনোদিন দেখেনি আগে।" (কুরআন, সুরা ফাজর, ৮৯:৬-৮)
কুরআনের 'ভেবে দেখনি' কথা থেকে ধরে নেয়াই যায় যে, আরবরা ভালো করেই জানত ইরাম (إِرَم ) নগরীর কথা, সেটা উপকথাতেই হোক, আর ধ্বংসস্তূপ দেখেই হোক। আমরা খুঁজে বের করতে চেষ্টা করব, এ নগরী নিয়ে উপকথার ফাঁকে ফাঁকে হোক আর অন্যত্রই হোক- কী কী বলা রয়েছে। আর কী কাহিনীই বা জড়িত আছে এর সাথে
কথিত আছে, হযরত নুহ (আঃ) এর পুত্র শামের (سام) ছেলেই আ'দ (عاد)। তার পুত্র শাদ্দাদ আ'দ জাতির প্রতাপশালী রাজা ছিল, যার স্বপ্ন ছিল দুনিয়াতে স্বর্গ নির্মাণ করা। ইসলামি বর্ণনা অনুযায়ী, এ জাতির প্রতি পাঠানো হয় আরবীয় নবী হুদ (আ)-কে (هود)। কুরআনে তার নামে আলাদা সুরাই রয়েছে। বাইবেল বিশারদগণ আবার তাকে বাইবেলের ইবার (עֵבֶר) বা আবির বলে মনে করেন, যিনি কিনা ইসমাইল (আঃ) ও ইসহাক (আঃ) এর পূর্বপুরুষ ছিলেন। মজার ব্যাপার, এই ইবারের সাথে মিল পাওয়া যায় ইরামের অপর নামের, যেটি হল 'উবার' (Ubar)।
কুরআন বলছে, আ'দ জাতির ইরাম নগরীর অবস্থান ছিল 'আল-আহকাফ' (الأَحـقَـاف)-এ। যার মানে দাঁড়ায় 'ধুলিময় সমভূমি' কিংবা 'প্রচুর বাতাস বয়ে যাওয়া পাহাড়ের কোলের মরুঅঞ্চল'। বিশেষজ্ঞদের মতে, জায়াগাটি আরব উপদ্বীপের দক্ষিণে, ইয়েমেনের পূর্বাঞ্চল বা ওমানের পশ্চিমাঞ্চলে। আরবিতে এ শহরকে ডাকা হয় 'ইরাম যাত আল ইমাদ' (إِرَم ذَات الـعِـمَـاد) নামে, অর্থ 'স্তম্ভের নগরী ইরাম' (Iram of the Pillars)। আসলেই আশির দশকে সেই অঞ্চলে একটি ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়, যাকে উবার নগরীই 'মনে করা হয়'
source
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:০৮