গত কদিন টিভির দিকে মুখ করে ছিলাম আমরা। কখন কি জানা যাবে তার জন্যে অস্থির ছিলাম সবাই। আমেরিকায় প্রবাসী বলে হয়ত উৎকন্ঠা ছিল বেশি। সময় যত যাচ্ছিল তত খবর আসছিল নতুন করে খুজেঁ পাওয়া লাশের। খবর আসছিল স্বজন হারাদের আহাজারির।প্রধান মন্ত্রী আর দায়িত্বশীল রাজনীতিবিদেরা , সামরিক বাহিনী আর বেসামরিক কর্তা ব্যাক্তিরা পরিস্স্থিতি সামাল দিয়েছেন যোগ্যতার সাথে-বীরচিত ভাবে।
ভেবেছিলাম হয়ত এই ঘটনার মধ্যদিয়ে আমরা আবার একত্রিত হতে পারব। বুঝতে পারব এখন সময় শোক কে শক্তিতে পরিণত করার। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে তত যেন বিভক্ত হচ্ছি আমরা। এত জন বাঙলী ভাইয়ের মৃত্যু যেন আমাদের শেখাতে ব্যার্থ হল - আমরা এ বিপদে সবাই আছি। এ শুধু সামরিক বাহিনীর কিছু ক্ষতিমাত্র নয়। আমরা আজ সবাই হারিয়েছি।
আজ এ বিপদে সামরিক বাহিনীর প্রতি আমরা যে ঢালাও স্মেষা ছুঁড়ছি তা কি সময়োচিত হচ্ছে ? যাঁরা প্রাণ হারালেন তাঁদের সবাই কি দূর্নীতিবাজ ? তাঁরা কি আমাদের দূরের কেউ ? অস্ত্রহীন ওই মানুষেরা মৃত্যুরপূর্বে কি আমাদের চাইতে বেশি নিরাপদ ছিলেন কিছুমাত্র ?
সমালোচনা করা খুব সহজ। কিন্তু এই সমালোচনায় লাভ কি আছে ? নিরস্ত্র ব্যাক্তিকে হত্যা করা কি দাবি আদায়ের কোন মাধ্যম ? আমরা কি বুঝতে পারছিনা দাবি আদায় এই হত্যাযজ্ঞ ঘটার কারণ নয় মোটেই। বাংলাদেশ রাইফেলস এর দায়িত্ত্বশীল সৈনিকেরা এ ঘটনা ঘটাবেন - তাও বা আমরা ভাবছি কেন ? সঠিক বিচার করতে না পারলে কিছু একটা বলা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়। আর এ সময়ে আমরা একে অপরকে দোষ দিচ্ছি - হচ্ছি আরও বিভক্ত।
সামরিক বাহিনীর অনেক অতীত কর্মে আমাদের সাধারণ জনতা অনেক সময়েই নিগৃহিত হয়েছেন - তা সত্য বটে। কিন্তু সে সব কর্ম ছাপিয়ে এই সেনা সদস্যরাই আমাদের অনেক বিপদে হয়েছেন সঙ্গী। একথাও ভুলে গেলে চলবে না। সবার আগে ভাবতে হবে আমরা সবাই এই বিপদে আছি- দেশে কিম্বা প্রবাসে; সামরিক বাহিনীতে কিম্বা বেসামরিক কর্মে। আর এই বিপদ থেকে উত্তরণেও আমাদের সবাই কে এক সাথেই থাকতে হবে। বাংলাদেশ না থাকলে আমরা কেউই থাকব না। আশ করি গুজবে কান দিয়ে বা গুজব ছড়িয়ে সস্তা বাহাবা পাবার চষ্টা করা থেকে আমরা সবাই বিরত থাকব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা আমাদের বিভক্ত করারই প্রয়াস চালিয়েছিল। আশা করি আমরা তাদের সফল হতে দেব না।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০০৯ সকাল ৮:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




