(১)
বঙ্কিম চন্দ্র ছিলেন প্রথম বাঙালি গ্রাজুয়েট।গ্রাজুয়েট হলেও তিনি আসলে বি.এ পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন।তাকে গ্রেস দিয়ে পাস করানো হয়েছিল।তিনি ফেল করেছিলেন বাংলায়।যে বঙ্কিম চন্দ্রের লেখা পড়তে গিয়ে সবাই উঠতে বসতে ফেল করে, তিনিই বাংলায় ফেল!তার সাথে আরো দুজন পরীক্ষা দিয়েছিলেন।সবাই ফেল করেছিলেন।বঙ্কিম চন্দ্র ছিলেন ফেলের মধ্যে ফার্স্ট।পরীক্ষক ছিলেন স্বয়ং ইশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর।তখনকার দিনে বাংলার সিলেবাস ছিল সংস্কৃত ঘেষা।সংস্কৃত ব্যাকরণের অনেক কঠিন বিষয় ছিল বাংলার অর্ন্তগত।সেগুলো চোখ বন্ধ করে মুখস্থ না করে উপায় ছিল না।বঙ্কিম চন্দ্র ও তার সহপাঠীরা সেগুলো হয়তো ঠিকমত মুখস্ত করে উঠতে পারেননি।আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ সেই প্রশ্নপত্রের উত্তর খোজার চেষ্টা করেছিলেন।ষোল’র বেশি তুলতে পারেননি।
(২)
নির্মলেন্দু গুণ একবার রাত একটা দেড়টার দিকে শাহবাগের সামনে দিয়ে হেটে হেটে বাসায় ফিরছিলেন।গুণের চুল-দাড়ি সাদা এবং তিনি দীর্ঘদেহী।পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে থামিয়ে পরিচয় জিজ্ঞেস করলো।তিনি বললেন, –তিনি কবি।পুলিশের হাবিলদারও ছিল রসিক।তিনি বললেন,তাইলে একটা কবিতা শোনান দেখি?
গুণ সঙ্গে সঙ্গে বানিয়ে বললেন,
মাছের রাজা ইলিশ,
মানুষের রাজা পুলিশ।
হাবিলদার হেসে বললেন,‘সত্যিই দেখি কবি।আচ্ছা যান তাইলে।’
(৩)
ত্রিশ-চল্লিশ বছর আগে আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ একবার এক সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবীকে বলেছিলেন:আপনারা তো কম্যুনিস্ট,কেউ চীন পন্থী,কেউ রাশিয়া পন্থী,কেউ ভারত পন্থী।কিন্তু আপনাদের মধ্যে কেউ বাংলাদেশপন্থী কম্যুনিস্ট নেই কেন?উনি বলেছিলেন,‘ওটা কখনো হবে না।’ কেন জিজ্ঞেস করাতে উনি জবাব দিয়েছিলেন,‘গোলমালটার মূলে রয়েছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা।আমরা সবকিছু শিখি মুখস্তের মাধ্যমে।আমি মুখস্থ করে ফেলেছি চাইনিজ পদ্ধতি,ব্যাস আমি চাইনিজ কম্যুনিস্ট।মুখস্থ করেছি রুশ পদ্ধতি,আমি রুশপন্থি কম্যুনিস্ট।আমি মুখস্থ করেছি ইন্ডিয়ান পদ্ধতি,আমি ইন্ডিয়ান কম্যুনিস্ট।কিন্তু বাংলাদেশ পদ্ধতির উপর তো কোন বই নেই,আমি মুখস্থ করব কীভাবে?তাই দেশে বাংলাদেশপন্থী কম্যুনিস্ট নেই।’
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১০