অবশেষে আমার বন্ধু একটি বই লিখে ফেললো।শুধু লিখে ফেললো বললে ভুল হবে,বই ছাপাবার জন্য একজন প্রকাশকও পেয়ে গেল।গোটা আস্টেক গল্প নিয়ে গল্প গ্রন্থ।নতুন একটি প্রকাশনি তার পান্ডুলিপি পছন্দ করেছে।তারা বই ছাপবে,শর্তহীন।
বই ছাপা হয়ে গেল।বন্ধু মহা খুশি।প্রথমবারের মতো বই লেখার চেষ্টা,আর সেটাই প্রকাশিত হয়ে গেল।কিন্তু তখন করোনা কাল।বই বিক্রি আশানুরুপ হয়নি। বইমেলা শেষে প্রকাশকের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি পরামর্শ দিলেন মোটিভেশনাল বই লিখতে।
কিছুদিন আগে লেখক বন্ধুর সাথে কথা হল।জিজ্ঞেস করলাম,এ বছর তার বই বের হবে কিনা।
বললো,না বই বের হবে না।বই কেউ পড়েনা,কেনেও না।
--একেবারেই কেউ পড়ে না?চেনা জানা লোকেরা?
---আত্মীয় স্বজন কিছু পড়েছে।
---বন্ধু বান্ধবরা?
---শিল্প-সাহিত্যের অনুরাগী দুচারজন পড়েছে।ইউনিভার্সিটির বন্ধুরা বই বের হওয়ার সময় অভিনন্দন জানালেও ওই পর্যন্তই। এ অবস্থায় কি আর লিখবো, কার জন্য লিখবো।নিজের জন্য লিখবো এতো বড় লেখক তো আমি নই।
আমি বললাম,বিষয়টা বুঝতে পেরেছি। তুমি তো পড়েছো ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটিতে।তোমার বন্ধুরাও সেখানে পড়ালেখা করেছে।আর ইঞ্জিনিয়ার মাত্রই চৌথা পড়ে,বই পড়ে না।শুধু তোমার বই কেন,ওরা কারো বই-ই পড়ে না।তুমি খোজ নিয়ে দেখ।তুমি তোমার বইটা ফটোকপি করে চৌথা ফরম্যাটে রুপান্তর করো।তারপর অনলাইনে সেই চৌথা বিক্রি করো।সবার জন্য বই,বন্ধুদের জন্য চৌথা।দেখবা তুমি থুক্কু তোমার চৌথা হিট।
ভেবেছিলাম আমার চৌথা তত্ত্বে সে রেগে যাবে।কিন্তু সেরকম কিছুই ঘটলো না।
বন্ধুটি একগাল হেসে বললো,তোমার কথায় সত্যতা আছে।ইউনিভার্সিটিতে মপাসার নেকলেস পাঠ্য ছিল।মুল গল্প আমরা কেউই পড়িনি।কয় পাতার গল্প আমরা কেউ জানি না।চৌথা দেখে শুধু প্রশ্নোত্তর পড়েছি--ডায়মন্ড নেকলেস, ম্যাথিল্ডের জীবনে কি দুর্ভোগ নিয়ে এসেছিল।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০২২ রাত ৯:৪১