ট্যাং বিশ্ববিখ্যাত আমেরিকান পাউডার ড্রিংকস ব্রান্ড।বাংলাদেশে এটা শীতকালে গরম পানি দিয়ে এবং গরমকালে ঠান্ডা পানি দিয়ে খেতে হয়।এক সাবানে কাপড় কাচা, এক সাবানে গোসলের মত।ট্যাং দিয়ে কিভাবে ঠান্ডা বা গরম পানীয় বানাবেন তার কিন্তু নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই ।বছর বছর "ট্যাং বাংলার" রেসিপি চেঞ্জ হয় এবং এক বছরের রেসিপি আরেক বছর ব্যবহার করা যায় না ।সম্ভবত তারা পরিবর্তনের বাতাসে বিশ্বাসী। ব্রান্ডের পন্যের দাম বা মান কিন্তু বছর বছর পরিবর্তন হয় না।এজন্যই সেটা ব্রান্ড।গত বছর ট্যাং দিয়ে এক গ্লাস পানীয় বানাতে ৩,৪ চামচ ট্যাং এর পাউডার প্রয়োজন হতো।এ বছর এক গ্লাস পানীয় বানাতে ২ চামচ ট্যাং গুড়া লাগে।
পেট্রোলিয়াম জেলি এবং এসির বাতাসে ভিটামিন সি পাওয়া যায় শুনে আমি অবশ্য ট্যাং খাওয়া বাদ দিয়ে দিয়েছি।
নেসক্যাফে কফি এক কাপ বানাতে ১/৪ চা চামচ কফি গুড়া লাগতো।এর বেশি কফি মিশালে তিতা হয়ে যেত।এখন প্রায় এক চা চামচ লাগে।ভবিষ্যতে হয়তো ৩,৪ চামচ লাগবে।ক্রেতারা টাকা দিয়ে বয়েম ভর্তি কফি কিনে নিয়ে যাবে,বানাতে পারবে ৫,১০ কাপ। ইন্ডিয়ান নেসক্যাফে কফি খেয়ে দেখেছি।স্বাদ,গন্ধ দুটোই অনেক ভাল।সে কথা আর নাই বলি।
পাকিস্তানি সেজান জুস ১৯৯৮/১৯৯৭ সালে ২৫ টাকা দাম ছিল।স্বাদ ছিল চমৎকার।এখন সেজান জুস দেশে তৈরি হচ্ছে,দামে সস্তা হয়েছে। কিন্তু মুখে দেওয়া যায় না।কটু একটা কেমিক্যাল গন্ধ তাতে।জুসের নামে কি খাচ্ছি?
স্কোয়াশের মতো বিভিন্ন ফলের ফ্লেভার দেওয়া এক রকম তরল পদার্থ মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশ থেকে এদেশে আসে।এক গ্লাস পানির সাথে দু চামচ মিশিয়ে শরবত বানিয়ে খেতে হয়।এটি ঠান্ডা পানির সাথে মিশালে পানির তাপমাত্রা ২°/৩° বেড়ে যায়।স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানির সাথে মিশালে সেই পানি গরম হয়ে ওঠে।সম্পূর্ন কেমিক্যাল আর্টিফিসিয়াল প্রোডাক্ট।বিদেশি পন্য মনে করে কিনেছেন তো ধরা খেয়েছেন।
যেকোন ফুড ব্রান্ড বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসার পর সেটা টঙ্গি ব্রান্ডে পরিণত হয়।সেখানে এটা বস্তা থেকে বের হয়ে খড় বিচালি মিশিয়ে প্যাকেট জাত হতে পারে আবার দেশিয় পদ্ধতীতে পুনরুৎপাদিত হতে পারে।
ফলাফল ভয়াবহ।কোনটা পাচ্ছে কেমিকেলের প্রকট গন্ধ,কোনটাতে আবার যোগ হচ্ছে কেমিকেলের সাথে চিনির/স্যাকারিনের গুড়া, ক্ষতিকর প্রিজারভেটিভ,এ্যাডিটিভ,রঙ,কোনটা পুরোপুরি আর্টিফিসিয়াল কেমিক্যাল প্রোডাক্ট।মনে প্রশ্ন জাগে--কি খাচ্ছি?কেন খাচ্ছি?
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:১৪