গরীবের ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট থাকে না।ফেসবুক দিয়ে বুকস্টাগ্রামের কাজ চালানো হয়।বুকস্টাগ্রাম প্রতিযোগীতা যতো না বই এর সাথে যুক্ত,তার চেয়ে বেশি যুক্ত ফটোগ্রাফির সাথে।
বুকস্টাগ্রামে বইয়ের সাথে সাধারনত থাকে ময়ুরের পালক,প্রজ্জ্বলিত মোমবাতি,চায়ের কাপ,চশমা, রঙিন কাপড়ের বা সবুজ ঘাস-বৃক্ষের পটভূমি,ফুল-লতা-পাতা, সৌখিন জিনিসপত্র,মুক্তার মালাসহ অর্নামেন্টস।এলোচুলের শাড়ি পরা সুসজ্জিত ম্যালুক থাকতে পারে।এক্ষেত্র লাইক বেশি পাওয়া যায়।অবশ্য বইয়ের থিমের সাথে মিল রেখে ক্রিকেট বল থেকে শুরু করে আর্জেস গ্রেনেডও রাখা যায় বইয়ের পাশে।মানে ছোটখাট একটা প্যাকেজ নাটকের শুটিং বলা যায় বুকস্টাগ্রামের ছবিগুলোকে।এখানকার কুশিলব বেশির ভাগ জড় পদার্থ এবং ডিরেক্টরও জড়বুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে থাকে।
বই নিয়ে রঙঢঙ করলেই কি বইয়ের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাবে?না মানুষ বই কিনে দোকান উজাড় করে দিবে?বইয়ের প্রধান বিষয় বইয়ের কন্টেন্ট, লেখক,লেখার ধরন,বিষয় বস্তু।বুক রিভিউগুলোতে স্পয়লারের ভয় থাকলেও কাজে দিতে পারে।ক্লাসিক বা অনুদিত বই হলে গুডরিডস রেটিং ও রিভিউ ফলো করা যেতে পারে।কিন্তু বই নিয়ে রং ঢং,নাটুকেপনা করার কোন মানে নেই।
অনেকে বলবেন বিদেশে এটা খুব জনপ্রিয়,ওখানে এটা হয় সেটা হয় ইত্যাদী।হ্যা হয়,আপনার ইচ্ছে করলে আপনি করেন ওইসব গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসান। অন্যের বাদর নাচ দেখে,বাদর নাচ নাচতে চাইলে কেউ বাধা দিচ্ছে না।
বই পড়ে রিভিউ লেখা কঠিন কাজ।একটা গোটা বই পড়া সময় সাপেক্ষ ব্যপার।শুধু পড়লেই হবে না,পড়তে হবে মনোযোগ দিয়ে এবং বই বইটি থাকতে হবে হাতের কাছে।যাতে বইটির বিষয়বস্তুর একটি ধারনা অন্যের কাছে উপস্থাপন করা যায়।বইটির বিভিন্ন দিক নিয়ে ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করা যায়।এত কষ্ট করে রিভিউ লেখা এবং রিভিউ প্রতিযোগীতার বিচারকদের জন্য রিভিউ পড়াও এক প্রকার ঝামেলার কাজ।এজন্য বুকস্টাগ্রাম প্রতিযোগীতা এখন খুব জনপ্রিয়।গ্রুপে গ্রুপে এর আয়োজন।
সামুর পক্ষ থেকে কি বুক রিভিউ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যায় না?অতীতে সামু একবার চেস টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিল।এই বিলুপ্তপ্রায় জ্ঞান চর্চার সহায়ক বিষয়গুলো বাচিয়ে রাখতে সামু চাইলে পদক্ষেপ নিতে পারে।
(বুকস্টাগ্রামকে বলা যেতে পারে একটা ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট যেটা শৈল্পিক ভাবে তোলা বইয়ের ছবি দিয়ে সাজানো। ফটো ক্রেডিট: মারিয়া নিহা)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০১