somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৫ জানুয়ারির নির্বাচন, ব্যর্থ ব্লগারের বিরতি গ্রহণ এবং যৎকিঞ্চিৎ আত্মোপলব্ধি

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সংলাপ হওয়ার কিংবা নির্বাচন পেছানোর আর কোনো সম্ভাবনা আপাতত দেখছি না। অনেক চেষ্টা করেছি, অনেক লিখেছি এ দুটো বিষয় নিয়ে। কিন্তু কারও অনুভূতিতে বিন্দুমাত্র সাড়া জাগাতে বা দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হইনি। একজন ক্ষুদে ব্লগার হিসেবে আমি পুরোপুরি ব্যর্থ। আগামী ৫ জানুয়ারী থেকে বাংলাদেশ দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের অথবা একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্রের নতুন যুগে প্রবেশ করছে। রিহার্সেল শুরু হয়েছে অনেক আগেই। আমাদের মতো সোজা-সাপ্টা বক্তব্য দানকারী ও অপেক্ষাকৃত নিরপেক্ষদের বিশেষ এক সমস্যা হল, তারা সবার দ্বারাই আক্রান্ত। দলাদলিতে অভ্যস্ত ও অন্ধ দলগুলো তথা কর্মী-সমর্থকদের সমর্থন হারান, কারও কারও টার্গেটেও পরিণত হন। চারদিকে সবাই ছিঃ ছিঃ করে। সন্দেহ করে যে, সে তলে তলে অমুক বা তমুক দলের হয়ে কাজ করছে। এ শ্রেণিটার সন্দেহবাতিক রোগ বড় ভয়ঙ্কর, যা একসময় নিজের মধেও সংক্রমণ করে।

লেখক হতে গিয়ে ব্লগার হলাম। কারণ জনতার কাতার থেকেই জীবনটা শুরু করতে চাই, একদম নিচ থেকে কিছু বলতে চাই। উপরে উঠে বললে তো সবাই শুনবেই, সেই শুনায় যারা শুনেন তাদের কৃতিত্ব বলে কিছু থাকে না। উপর তলার যারা 'জনগণ' 'জনগণ' করে গলা ফাঁটান, আসলে তারা জনগণকে কতটুকু দেখেন ও শুনেন সেটা দেখতে চেয়েছিলাম, দেখা হল। এখন কিছুটা বিরতি নেয়া যায়। দুই নেত্রীকে উদ্দেশ্য করে কিছু কথা একাধিকবার বলেছি, কারও কাছেই পৌঁছেনি। সর্বশেষ খালেদা জিয়াকে একটি খোলাচিঠি লিখেছি ব্লগে, তাও পৌঁছেনি। তাই নির্বাচনের আগে চেনা-লেদা বা ‘গোলাপী’ বেগম ও ‘গোপালী’ বেগমকে উদ্দেশ্য করে “রাজনীতির জন্য জীবন, না জীবনের জন্য রাজনীতি! শিরোনামের লেখাটি আর লিখছি না। আমি মনে করি রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের প্রকাশিত অপ্রকাশিত কথা, চিন্তা ও ভাবনাগুলো সংগ্রহ করা জনসেবকদের দায়িত্ব। আল্লাহর রহমতে আমি তো লিখতে পারি, তা ব্লগে হোক আর যেখানেই হোক, এগুলোতে নজর রাখা তেমন কঠিন কিছু নয়। কিন্তু আমার চেয়ে অনেক অনেক বেশি জ্ঞানী, গুণী ও চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন যারা দু’কলম লিখেন না বা লিখতে পারেন না। আমাদের মতো ব্লগারদের মতামতগুলো যদি তাদের নিকট না পৌঁছায় ও গুরুত্ব না পায়, অন্য কোটি কোটি লেখাপড়া না জানা জনতার মনের কথা কতটুকু পৌঁছবে ও গুরুত্ব পাবে?

“জনগণই ক্ষমতার উৎস”, তাই জনগণের বুকে পাড়া দিয়েই ক্ষমতার সিঁড়িতে আরোহণ করতে হবে। ভিক্ষা চাই না মা তোর কুত্তা সামলা অবস্থা। আজ লাখ লাখ জীবন আপনাদের রাজনীতির বলি। এই সংঘাতমুখর পরিস্থিতির যে সহজ এবং একেবারেই সহজ সমাধান আছে তা যেন কেউ বিশ্বাসই করতে চায় না, এমনকি কল্পনাও করে না। অথচ মাথাটা সামান্য নিচু করলেই, যশ-খ্যাতি ও জেদ সামান্য পরিহার করলেই লাখ লাখ জীবন বেঁচে যায়। স্বাধীনতার এই বিয়াল্লিশ বছরেও বাংলার কত জনপদ বিচ্ছিন্ন, কত রাস্তাঘাট ভাঙ্গা, ব্রিজ-কালভার্ট নেই। অথচ প্রতিটি মানুষকে আল্লাহ দু’টো হাত দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। মাত্র সেই দু’টো হাতকে সরকার কাজে লাগালে ১০ বছরে বাংলাদেশ আমেরিকা হবে। চোখের সামনে দেখি লাখ লাখ বেকার কর্ম জোগাতে ২০ হাজার/৫০ হাজার টাকার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে, পায় না, ওদিকে ব্যাংকে কোটি কেটি ডলার অলস পড়ে থাকে। এগুলো একেবারে সমাজের ভেতর থেকে দেখা।

বিরতি নেয়া এজন্যও প্রয়োজন যে, চারদিকে ঝগড়া-ঝাটি দেখতে দেখতে আমি নিজেও ঝগড়াটে হয়ে যাচ্ছি। এখনকার লেখার চেয়ে আগের লেখা অনেক ভালো। কারণ আগের লেখায় পক্ষপাতিত্ব ও আক্রমণাত্মক মাল-মশলা কম। তবে এও ঠিক, ঢুকলে সহজে বেরুনো যায় না, আর বেরুলে আবার ঢুকতে ইচ্ছে করে না।

আমি একজন ব্যর্থ ব্লগার, এতদিন লিখে উন্নয়নের সংজ্ঞাটাও কাউকে শেখাতে পারিনি। বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যয় বেড়েছে, সুদঘোষ বেড়েছে, বেকার বেড়েছে, ঝুঁকি বেড়েছে, হা-ভাতের সংখ্যা বেড়েছে, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ব্যয় বেড়েছে, শত্রুতা বেড়েছে, কৃষিজমি কমেছে, শান্তি-নিরাপত্তা কমেছে, আস্থা কমেছে, সহযোগিতা-সহমর্মিতা-মানবতা কমেছে, ধর্ম ও রাজনীতি পুরোপুরি পেশা হয়ে গেছে- এটাই যদি উন্নয়ন হয়, আমার কিছু বলার নেই।

না, নির্বাচন হচ্ছে বলে আমি হতাশা প্রকাশ করছি না। আমি হতাশ সুন্দর-সুষ্ঠু একটি ভবিষ্যৎ দেখছি না বলে। জেদ, অনমনীয়তা, ক্ষমতার মোহে অন্ধ, প্রতিহিংসার আগুনে দগ্ধ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের আচরণ কোনো ভালো বার্তা দিচ্ছে না। তাই সমাজ পরিবর্তনের কাজটা আরো কঠিন, দীর্ঘমেয়াদি এবং পরিশ্রমসাধ্য।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×