বাবাকে খোলা চিঠি
সময় কি অবিরাম গতিতে ছুটে চলেছে তা আগে কখনো ভাবিনি। হঠাৎ সেদিন ক্যালকুলেটরে নিজের জন্মতারিখটা বসাতে গিয়ে চকে উঠলাম। চোখের সামনে দিয়ে পেরিয়ে গেছে পচিশটি বছর। বয়সের এই ছুটে চলার মাঝে প্রাপ্তিও কম নয়। এই ক্ষুদ্র জীবনে যখন যা চেয়েছি প্রায় সবটাই পূরণ হয়েছে। অসাধারণ কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে। সেই সব মানুষ আমাকে দিয়েছে অফুরান স্নেহ এবং ভালবাসা। আমার ছোট্ট জীবনে পেয়েছি ফাহিমের মত ছোট ছোট বন্ধু সম ছোট ভাই,পেয়েছি মিফরার মত আদরের বোন। বিনিময়ে দিয়েছি সামান্য। সেই সাথে পেয়েছি অকৃত্রিম বন্ধু ভাবাপন্ন কিছু পরিবার। যেখানে মমতাময়ী মা আছেন আর আছেন আপনার মত অসাধারন বাবা। এই চিঠি লেখার উদ্দেশ্য বাবা দিবসকে সামনে রেখে। কোন দিবসই আমি বিশেষায়িত করিনা। আমার কাছে আমার প্রডতিটি দিবস আমার বাবার জন্য আমার মায়ের জন্য ভাইবোন এবং বন্ধুদের জন্য। তারপরও এই চিঠি লিখছি একটি দায়মুক্তির জন্য। সন্তান হিসেবে আমি হয়তো আদর্শবান নই। ভাই হিসেবে বোনের কাছে আমি হয়তো অতুলনীয় নই।কিন্ত কৃতজ্ঞতা প্রকাশে এবং ক্ষমা প্রাথর্নায় আমি অকুন্ঠ।পৃথিবীতে কত সন্তান আছে বাবা মাকে মাথায় তুলে রাখে দিনরাত বাবা মাকে সম্মান করে। আবার কত সন্তান আছে বাবা মাকে সম্মান করেনা অপমান করে দূর দূর করে দূরে রাখে। সব কিছু সহ্য করে বাবা মা তার সন্তানকে ক্ষমা করে দেয়। সমাজের মানুষ সেই সব সন্তানকে ঘৃণা করে,কুলাঙ্গার বলে। আমি সেই সব সন্তানের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাই। পৃথিবীর সব বাবার কাছে আমি হয়তো ক্ষমা চাইতে পারবোনা তাই যাকে সবচেয়ে কাছের মনে হয়েছে তার কাছেই ক্ষমা চাইছি। বাবা দিবসকে সামনে রেখে সকল বাবার জন্য ভালবাসা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমরা যারা নষ্ট হয়ে গেছি বাবা তোমরা আমাদের ক্ষমা করো। পৃথিবীর সব সন্তানদের পক্ষ থেকে সব বাবার জন্য ভালবাসা ও শুভকামনা। হয়তো বাবার হাতে সুখের চাবি ধরিয়ে দিতে পারিনি। হয়তো মূখ ফুটে বলতে পারিনি বাবা আমি তোমাকে খুব ভালবাসি। বাবা মা আমাদের জন্য যা করেছে এবং করছে তার প্রতিদান দেয়া সম্ভব নয়। যদি কোনদিন সম্ভব হয় তবে তোমার সন্তানেরা তোমার জন্য সম্মান বয়ে আনতে চেষ্টা করবে। পৃথিবীর সব বাবাকে বলছি,সব বাবাকে লিখছি,ব্যক্তি জীবনে সন্তানের জন্য তোমরা যত ত্যাগ স্বীকার করেছ তার কোন তুলনা নেই তার কোন প্রতিদান হয়না। পৃথিবীর সব বাবা মা তার সন্তানদের সাথে সুখে থাক। পৃথিবীর ইতিহাস থেকে মুছে যাক বৃদ্ধাশ্রম নামের কষ্টের কারাগার। আর যেন কোথাও কোনদিন বৃদ্ধাশ্রম গড়ে না ওঠে।