somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৌদি আরবের মিথ্যাচারঃ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



………জাজাফী
একটা ছোট্ট বাচ্চাও এখন আর সুশীল সমাজের একজন হতে চায়না! অথচ সুশীল সমাজকেই বলা হয় রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি।তারা বুদ্ধি দেয় তারা মানুষকে বেচে থাকার অনুপ্রেরণা দেয়।তাহলে কেন একটা বাচ্চাও সুশীল সমাজের একজন হতে চায়না? কারণ একই সাথে তারা যানে জগতের সব থেকে বড় ধরনের জালিয়াতি ও খারাপি ঘটে সুশীল সমাজের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কোন না কোন কালপ্রিটের হাত ধরে।যেহেতু সুশীল সমাজের ঘেরা চাদরের তলে থাকে তাই আমরা তাদের সহজে ধরতে পারিনা।বাবার পকেট থেকে টাকা চুরি করে ছেলে কিন্তু বাবা কখনোই ছেলেকে সন্দেহ করেনা বরং সন্দেহ করে কাজের ছেলেটাকে। অথচ কাজের ছেলেটা একশোভাগ সত্যবাদি এবং সৎ। ঠিক এই ধারায় সুশীল সমাজের আড়ালে থাকা কালপ্রিটগুলোকেও তাই সহজে চেনা যায়না। চেনা যাওয়াতো দূরের কথা কেউ ভুলেও নাম নেবেনা যে এরকম কেউ ওখানে আছেন এবং তাদের দারা এরকম কোন অপকর্ম ঘটতে পারে।

এসবের অবতারণার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো কদিন আগে পবিত্র হজ্জ্ব পালন কালে পদদলিত হয়ে মারা যাওয়া হাজীসাহেবানদের বিষয়ে কিছু কথা বলা। হয়তো শুরুর কথা গুলো অনেকের কাছেই অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে এবং শিরোনামের সাথে হয়তো কোন মিল নাও থাকতে পারে কিন্তু কথার পিঠে কথা চলে আসে বলেই ওগুলোর অবতারণা। হয়তো বিজ্ঞাপাঠক সেটা প্রকারান্তেই অনুধাবন করতে পারবেন বলে আশা করছি।

একটু ফ্ল্যাশ ব্যাকে যাই। পবিত্র হজ্জ্ব পালনের সময় পদপিষ্ঠ হয়ে অনেক হাজি মৃত্যু বরণ করেছেন যাদের মধ্যে বাংলাদেশের ৪০ এর অধিক হাজির নাম পাওয়া গেছে। সারা বিশ্বের সংবাদ মাধ্যমেই বিষয়টাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখানো হয়েছে। সত্যিই এটা ছিল একটা নজির বিহীন দুর্ঘটনা। তবে অনেক কিছুই আড়ালে থেকে যায়।আমাদেরকে সংবাদ মাধ্যমগুলো যা দেখায় যা শোনায় যা পড়তে দেয় আমরা তাই শুনি তাই দেখি এবং তাই পড়ি। কিন্তু আমরা কি সবাই জানি যে এই দেখা এই শোনা এবং এই পড়ার বাইরেও অনেক কিছু আছে? এখানে ভণিতা করার কোন কারণ নেই। কথা স্পষ্ট যে ওগুলোই একমাত্র সত্য নয়। এর বাইরেও অনেক সত্য রয়েছে যা জোর করে চেপে রাখা হয়।

সত্যিইকি পদদলিত হয়ে এতো এতো হাজিসাহেবান মৃত্যুবরণ করেছেন? সেটাকি নিছকই কোন দুর্ঘটনা ছিল নাকি হত্যা কান্ড? জানি হয়তো সারা বিশ্বের কোথাও কেউ আজ পযর্ন্ত এটাকে হত্যাকান্ড বলে ঘুনাক্ষরেও প্রশ্নবোধক চিহ্নে আবধ্য করেনি। আমি করছি এবং তার পিছনে কিছু কারণ এবং যুক্তিও আছে।প্রথম কথা হচ্ছে সৌদি আরবে গণমাধ্যমের কোন স্বাধীনতা নেই। তারা রাজা বাদশাদের শেখানো কথাই সারা বিশ্বে প্রকাশ করে। বাংলাদেশের মত গণতন্ত্র এবং সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা যদি সেখানে থাকতো তাহলে কষ্ট করে আমার মত ঠুটোফাটা মানুষকে এটা নিয়ে লিখতে হতোনা।

বর পক্ষ মেয়ে দেখতে এসেছে আর মেয়ের পরিবার মেয়েকে কালো চশমা পরিয়ে তাদের সামনে হাজির করেছে। কনের চোখের চশমা না সরানো পযর্ন্ত বর পক্ষ কিভাবে নিশ্চিত হবে যে কনে চোখে দেখে কি দেখেনা? আন্দাজে বললে দুই দিকের পাল্লাই সমান হয়। বিশ্ব মিডিয়াকে সৌদি সরকার ও গণমাধ্যম যেটা দেখিয়েছে সেটাই তারা দেখেছে শুনেছে এবং প্রকাশ করেছে। কিন্তু নাহ এর বাইরেও অনেক কিছু ছিল। না বলা না দেখা না অনুধাবণ করা অনেক সত্য সৌদি সরকার গোপন করেছে এবং বিশ্ব মিডিয়াও বঞ্চিত হয়েসে সত্যিটা থেকে।

এখন মোদ্দাকথায় আসা যাক। হাজি সাহেবানদের মৃত্যু নিছক কোন দুর্ঘটনা ছিলনা বরং এর জন্য দায়ি সৌদি সরকার।এটা প্রমাণের জন্য আমি প্রথমত সংবাদ মাধ্যমের দৃষ্টি আকর্শন করে জানতে চাই ওইদিন সৌদি যুবরাজের কর্মসূচী কি ছিল? তিনি কি সারাদিন প্রাসাদেই ছিলেন নাকি বের হয়েছিলেন? এর উত্তর কষ্ট করে খুজে নিতে পারেন অথবা আমিই দিয়ে দিচ্ছি। সেদিন সৌদি যুবরাজ বের হয়েছিলেন এবং স্বভাবতই যে রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটেছে সে রাস্তাদিয়েই তিনি যাত্রা করেছেন। এর ফলে ওই রাস্তা কয়েক ঘন্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। অনেকটা বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোথাও গেলে যেমন সাময়িকভাবে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয় ঠিক সেরকম। ফলে হাজার হাজার হাজি ওই রাস্তায় আটকা পড়েছিল।

এখন আমি আবহাওয়াবিদদের দৃষ্টি আর্কশন করবো। ফিরে চলুন ওইদিন ওই তারিখে সৌদি আরবে। দেখুন সেদিন ওখানকার তাপমাত্রা কত ছিল? হ্যা নিশ্চই জানেন ওইদিন ওখানকার তাপমাত্রা ছিল ৪৮ ডিগ্রি। এর পর আসবো পরিসংখ্যনবিদদের কাছে। একটু হিসাব করে দেখুন যে সব হাজিসাহেবানরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের গড় বয়স কত ছিল? হ্যা তাদের গড় বয়স ৪৫ বছর বা তার কিছু বেশি ছিল। এবং সবর্শেষ প্রশ্ন হলো মৃত হাজিদের কোন ছবি প্রথম বেশ কয়েকদিনেও সৌদি সরকার গণমাধ্যমে প্রকাশ করেনি কেন? প্রচার করা হয়েছে পদদলিত হয়ে মারা গেছেন হাজিসাহেবানরা। কিন্তু তথ্যটা ছিল পুরোপুরি বানোয়াটি এবং ভুল।

মৃত কারো শরীরে পদদলিত হয়ে মারা যাওয়ার কোন ধরনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। আসুন পরবর্তী বিষয়গুলো নিয়ে আলোকপাত করি। তিন চার ঘন্টা ধরে ৪৮ ডিগ্রি তাপমাত্রায় মাথা মুন্ডিত চুল বিহীন ৪৫ বছরের অধিক বয়সী একজন মানুষ কতক্ষণ দাড়িয়ে থাকতে পারবে?চিকিৎসকরা একটু ভেবে দেখুন ওই পরিস্থিতিতে কি হিটস্ট্রোক করাটাই স্বাভাবিক নয়? হ্যা সত্যিকার অর্থে ঘটেছিলও তাই। সেদিন যে সব হাজি মারা গিয়েছিলেন তারা সবাই হিটস্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং তাদের সিংহভাগ বয়স্ক। আর এই মৃত্যুর দায়ভার নিশ্চিত ভাবেই সৌদি ওই যুবরাজের ঘাড়েই বর্তায়।আর এ জন্যই গণমাধ্যমে মৃতদের ছবি প্রকাশ করা হয়নি এবং যেন প্রমানিত না হয় তাই মৃত হাজিদের গণকবর দেওয়া হয়েছে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার কারণে গোটা বিশ্ব এই সত্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এই সব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত হতে যে কেউ পরিচিত দুই চারজন হাজিদের সাথে কথা বলুন এবং দেখুন তারা কি বলে।বিমান বন্দরে বেশ কয়েকজন শিক্ষিত হাজীদের সাথে কথা বলে এ তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে বলেই আমার এই ক্ষুদ্র লেখা। এখন মুসলিম বিশ্বের এবং মানবাধিকার সংগঠন গুলোর দায়িত্ব বাকিটা উদঘাটন করা।ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা সৌদি রাজ পরিবার ইসলাম তথা শান্তির ধর্মের ছায়া তলে থেকে এরকম অন্যায় করে যাবে তা নিশ্চই বিশ্ব মুসলিম সহ্য করবেনা।গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করে তারা বিশ্বকে অন্ধকারে রেখেছে এবং সৌদি গণমাধ্যম বাধ্য হয়ে সৌদি সরকারের কথা মতই বিশ্ব মিডিয়াকে তথ্য দিয়েছে যে পদদলিত হয়ে হাজিদের মৃত্যু হয়েছে।

এখন বিশ্ব ব্যাপী এ নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত এবং সব কিছু খতিয়ে দেখা উচিত। কোটি কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ডায়নোসরকে যদি আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে প্রমাণ করতে পারি তবে বিলাসী রাজ পরিবারের খামখেয়ালিতে আটকে পড়ে উত্তাপে হিটস্ট্রোকে মারা যাওয়া হাজিদের মৃত্যুর কারণ কেন বের করা যাবেনা সেটাই প্রশ্ন। আশা করি এ নিয়ে চিন্তাশীলরা চিন্তা করবেন।এক নগন্য মানুষ হয়ে আমি আর এর থেকে বেশি কি বলতে পারি।

…………………………
০৩ অক্টোবর ২০১৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:৩০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নেতানিয়াহুও গনহত্যার দায়ে ঘৃণিত নায়ক হিসাবেই ইতিহাসে স্থান করে নিবে

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩৮

গত উইকেন্ডে খোদ ইজরাইলে হাজার হাজার ইজরাইলি জনতা নেতানিয়াহুর সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
দেখুন, https://www.youtube.com/shorts/HlFc6IxFeRA
ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে নেতানিয়াহুর এই হত্যাযজ্ঞ ইজরায়েলকে কতটা নিরাপদ করবে জনসাধারণ আজ সন্দিহান। বরং এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×