নারী,তোমরা আমাদের জীবনে আসো মায়ের রূপে,বোনের রূপে,মেয়ের রূপে, জীবনসাথী রূপে।
আমি আসলে মজার মজার লেখা লিখি। কিন্তু তোমার জন্য আজ আমার লিখতে ইচ্ছে করল। একটু আগে তোমার নাম আমি জেনেছি। কিন্তু সেই নাম সম্বোধন করে তো আর লেখা যাবেনা। সমাজ যে কখন কার সাথে কি আচরন করে ঠিক নেই।
কারো অবস্থা বোঝা আর অনুভুতি অনুভব করা এক জিনিশ নয়। যার বাবা নেই তার দুঃখ আমি বুঝতে পারি কিন্তু অনুভব করতে পারিনা। তোমার দুঃখও আমি বুঝতে পারছি কিন্তু অনুভব করতে পারছিনা। দেখোনা কি হয়ে গেল তোমার সাথে। তুমি তো আর জানতেনা যে মানুষ কখনও এত খারাপ হতে পারে। আমরা জানি মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। তোমার সাথে যদি কোন বখাটে এই কাজ করত তাহলে ব্যাপারটা একরকম হত। কিন্তু আমরা কি জানি? আমরা জানি বাবা মায়ের পরে শিক্ষকের স্থান। আমরা শুধু এটা জানিইনা আমরা এটা বিশ্বাস করতে পছন্দ করি। কিন্তু দেখ আমাদের সৎ বিশ্বাসের কত বড় মূল্য দিতে হল তোমাকে।
আমি তোমার সাথে অবিচার হওয়ার পর থেকে তোমার কথা চিন্তা করছি। তোমার মনের অবস্থা কি। ঐযে বললাম সেটা অনুভব করা সম্ভব না বড়জোর বোঝার চেষ্টা করতে পারি। পুরুষ বা ছেলে নামক শব্দটাই হয়ত তোমার কাছে এখন আতঙ্কের ব্যাপার। তোমার ভবিষ্যত তো আর তোমার একাকে ঘিরে না তোমার বাবা-মাকেও ঘিরে। তাই তো তারা এখন শয্যাশায়ী। আমি জানিনা তুমি আমার লেখা পড়বে কিনা। কিন্তু আমি চাই তুমি পড়। কারন আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই।
এরকম পরিস্থিতিতে একজন মেয়ে নিজেকে শেষ করে ফেলাকে বেছে নেয়। কত জায়গায় তো দেখলাম অবমাননা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। কিন্তু তুমি সেটা করনি। এর মানে হল একটি পরিপূর্ন স্বাভাবিক জীবন তোমার পরিপূর্ণ প্রাপ্য। তুমি যে কত অসাধারন একটা কাজ করেছ তুমি জাননা। অনেক মেয়ে আছে নিজেদের ভুলে সর্বনাশ ডেকে আনে। তোমার ব্যাপার তা না। তুমি নিজেকে বাঁচিয়েছ। আর তোমার কারনে এখন হাজার হাজার মেয়ে বেঁচে যাবে। তুমি যদি এখন শক্ত থাক। তুমি যদি ভেঙ্গে না পড়। তাহলে হাজার হাজার অসহায় মেয়ের প্রেরণা তুমি হতে পার।
ধর্ষন অনেক বড় একটা ব্যাপার। শুনেছি এরপরে কোন মেয়ের পক্ষেই আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা সম্ভব নয়। কিন্তু আমার মনে হয় ইচ্ছাশক্তি থাকলে তুমি এটা পারবে। জীবন হল একটা রাস্তার মত। জীবন যাপন করা মানে হল লম্বা একটা রাস্তায় হাটা। রাস্তায় হাটতে গেলে একটু আধটু কাঁদা লাগে। তোমার গায়ে কাঁদা লাগেনি, তোমাকে কুকুর কামড়িয়েছে। এখন সেই কুকুরটাকে আমরা উপযুক্ত শাস্তি দিব। সেই কুকুরকে কেউ কেউ বাঁচানোর চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু আমরা কোন অবস্থাতেই তা মানব না। কুকুরের জায়গা হবে আঁস্তাকুড়ে। কোন রাজপথে না।
আমি একটা ব্যাপার এখন থেকেই দেখতে পাচ্ছি। তুমি জীবনে খুব বড় কেউ একজন হবে। তোমার সাথে ঘটা এই বাজে ঘটনা পাশ কাটিয়ে দেশের লাখো নির্যাতিত মেয়ের অনুকরন তুমি হবা। তুমি কি এরকম চিন্তা করছ যে এখন তোমাকে কে বিয়ে করবে?? আরে বোন আমার ২০১১ সালে এসে কি এই চিন্তা করতে হয়!! তুমি কি পছন্দ কর? তুমি যদি গনিত পছন্দ কর তাহলে গনিতে ডুবে যাও। তুমি অঙ্কন পছন্দ কর অঙ্কনে ডুবে যাও। তোমাকে তো বলেছি তুমি কোন সাধারন মেয়ে নও। তুমি কি জান নারীদের নিয়ে আলাদা একটা বিষয় আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। যেখানে পড়ে তুমি হাজার হাজার মেয়ের দুঃখের পাশে নিজেকে পাবে। তোমার কি মনে হয়না এই সমাজকে বদলে ফেলার মত কিছু একটা তুমি করে ফেলতে পার? কোন ভাবেই ভাববানা তোমার সাথে ঘটা এই ঘটনা তোমার দুর্বলতা। মানুষ তখনই খারাপ হয় যখন সে একটা খারাপ কাজ করে। তুমি কোন খারাপ কাজ করনি। এমনকি তুমি কোন ভুলও করনি।
ঐ কুকুরটার জন্য আমরা পুরুষ জাতি তোমার কাছে লজ্জিত। আমরা তোমাদের বাবা হতে চাই, তোমাদের ভাই হতে চাই, তোমাদের বিশ্বাসযোগ্য ভালবাসার মানুষ হতে চাই, কিন্তু আমরা চাইনা কারো অসহায়ত্বের সুযোগ নিতে। তুমি মন খারাপ কোরোনা। তোমার জীবন অনেক সুন্দর হয়ে উঠবে। হৃদয়বান, বুদ্ধিমান কোন ছেলে একদিন তোমার জীবনে আসবে। আর আসবেও বীরের বেশে, সব কুকুরদের বধ করে, তোমার সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে।
ভাল থেকো।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১১ রাত ১:১৯