somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটখাট জীবন

১৪ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভাল নাই।


২০০৮ সালের নভেম্বর মাসের কথা। ঢাবি পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আমরা স্টাডি ট্যুরে যাব। স্টাডি ট্যুরে গিয়া বিরাট লেখাপড়া করে ফাটাইয়া ফালাব এইরকম একটা অবস্থা। স্টাডি ট্যুরে যাওয়ার জন্য কিছু ফরমালিটি আছে। সেই যন্ত্রনার সাথে যারা থাকে তারা জানে যন্ত্রনা কী জিনিশ! সব থেকে বড় যন্ত্রনা হল ম্যাডামের সিগনেচার নেওয়া। প্রবল প্রতাপশালী প্রানপ্রিয় সুলতানা শফী ম্যাডাম চেয়ারম্যান তখন। তার সতীর্থ, জুনিয়র টিচারদের মাঝে তিনি আয়রন লেডি নামে পরিচিত। ম্যাডামের রুমে মাঝে মাঝেই যেতে হয়। ভীত সন্ত্রস্ত মন নিয়ে যাই। তবে ম্যাডাম কিন্তু বেশ অমায়িক, খালি মাঝে মাঝে একটু রেগে যান। সেই রেগে যাওয়াটাকে ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারন আছে। তার ভয়ে কর্মচারীরাও ভীত সন্ত্রস্ত। ম্যাডামের হ্যাসবেন্ডও আমাদের এই বিভাগেরই প্রাক্তন শিক্ষক। আজ থেকে বহু বছর আগে আহমেদ শফী নামের তুখোড় এক ছাত্র কি একটা পরীক্ষার রেজাল্ট নিতে যাওয়ার সময় জানলেন তিনি একা প্রথম হননি, তার সাথে পাল্লা দেওয়ার মত একজন আছেন, স্যার খোঁজ নিতে গেলেন কে সে? অবাক হলেন যে সে একজন মেয়ে!! হয়ত সহ্য হলনা। কিন্তু কি আর করার, তাকেই ঘরে নিয়ে এলেন। ইনারাই আমাদের আহমেদ শফী স্যার আর সুলতানা শফী ম্যাডাম। যাদের পরিবারের ৫ জনের ২ জন হাভার্ড পিএইচডি। সম্প্রতি শফী স্যার হুমায়ুন আহমেদের লেখা হিমু সিরিজের হাভার্ড পিএইচডি বল্টু ভাইও পড়ে নিজের মতামত দিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন।

যাই হোক কাহিনীতে ফিরে আসি। স্টাডি ট্যুর সংক্রান্ত ঝামেলা। ম্যাডামের কাছে সিগনেচার নিতে গেলেই আজব আজব সব জায়গায় ভুল বের হয়। এপ্লিকেশনগুলো যেহেতু আমি লিখি তাই কিছুটা দায় আমার উপর বর্তায়, তবে পুরাপুরি না। কারন অফিসের কর্মচারী টাইপ করেন এবং অদ্ভুত অদ্ভুত ভুল বের হয়। এরকম যখন অবস্থা তখন শেষ এপ্লিকেশনটাতে ম্যাডামের সাইন নিতে রুমে প্রবেশ করলাম। ম্যাডাম আমার উপর কিছুটা ক্ষুন্ন। কয়েকদিন আগে ইন্টার ডিপার্টমেন্ট ক্রিকেটে ফার্মেসির কাছে হারাটা ম্যাডামকেও কষ্ট দিয়েছে। ম্যাডাম ধমক দিলেন ২ হাজার টাকা দিয়ে ব্যাট কিনে দিলাম কত রান করছ? আমি বললাম ১৫। ম্যাডাম বুঝিয়ে দিলেন এত বড় শরীর নিয়ে মাত্র ১৫ রান করাটা কোনভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। ম্যাডামের কাছে এপ্লিকেশন দিলাম। ম্যাডাম সাইন দিলেন। যাক বাবা এবার আর কোন ভুল বের হয় নাই। নিশ্চিন্ত মনে বের হলাম। এবার তাইলে সবাইকে জানাতে হবে আর কোন বাধা বিপত্তি নাই। রওনা হবার জন্য প্রস্তুত হও। বিপদ বলে বিপদ! কি মনে করে জানি এপ্লিকেশনটার দিকে চোখ গেল। সর্বনাশ। যে এটা টাইপ করছে সে পুরাই মারছে। প্রফেসর সুলতানা শফী এর জায়গায় এপ্লিকেশনে চলে আসছে প্রসেসর সুলতানা শফী। এবার উপায়!! এক টানে এপ্লিকেশন ছিড়লাম। আবার দৌড়ায় গেলাম।


সরকারী ব্যাঙ্কে টিটি নামক একটা জিনিস আছে। বাংলাদেশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নানা ব্রাঞ্চে দুইজন নিদেনপক্ষে অফিসার লেভেলের কেউ ফোনের মাধ্যমে এটা করে থাকে। আমাকেও করতে হয়। নিজের নামটা নিয়ে বড় বিপদে আছি।
- স্যার আমি রাসয়াত রহমান নিউ সিনিয়র অফিসার।
১- কি বললেন রাশেদ?
২- কি নাম বললেন রাশেদুর?
৩- স্যার নামটা কি বললেন?
৪- স্যার আসাদ রহমান?
৫- রাশেদ রহমান?
৬- স্যার রাসেতুর রহমান?
৭- কি নাম বললেন স্যার? মোস্তফা কামাল? (রাসয়াত রহমানকে কেউ কিভাবে মোস্তফা কামাল শুনে কে জানে!!) বড় বিপদে আছি গো।

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১:০৯
২২টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×