somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্যাংক একাউউউউউউন্ট!!!

০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নাম গুলা ছদ্ম

ব্যাঙ্কে একাউন্ট দু’রকমের। চলতি আর সঞ্চয়ী। চলতি একাউন্টে যখন তখন লেনদেন করা যায়। সঞ্চয়ীতে সপ্তাহে দু’বার। একাউন্ট খুলাতে গিয়ে প্রথম যে বিপদে পড়েছিলাম তা হল একজনের নমিনী নিয়ে।

- নমিনী কাকে করতে চান?
- যুথীর মেয়ে।
- আলহামদুলিল্লাহ। যার নিজের নাম এত সুন্দর তার মেয়ের নাম কতনা সুন্দর হবে। যুথী ভাবীর মেয়ের নাম কি?
- যুথী আমার বইনের নাম।
- বেশ বেশ। যুথী আপার মেয়ের নাম কি?
- নাম তো রাখিনাই।

আমার মুখ কিছুটা হা।

যাই হোক যুথী আপার বোনের নাম সিথি আপা। তিনি একাউন্ট ওপেন করতে আসছেন আর নমিনী করতে চান তার বোনের মেয়েকে যার নামই রাখা হয়নায়। আমি কি করব ঠিক বুঝতে পারলাম না। যুথী’র মেয়ের বয়স হইল ১৩ দিন । তারে নমিনী করাটা এত গুরুত্বপূর্ন কেন জিজ্ঞেস করলাম।
- আমি আমার বোনকে কথা দিছি।
বুঝতে পারলাম আবেগী ব্যাপার। সমস্যা হইল নমিনীর একটা নাম ছাড়া করি কেমনে!! এমন না যে ব্যাঙ্কিং জিনিসটা আমি খুব বুঝি। একাউন্ট ওপেন এর নিয়ম কানুন কই আছে কে জানে!! কিন্তু তারপরেও, নাম ছাড়া ১৩ দিন বয়স্ক একজনকে নমিনী?? ব্যাপারটা ম্যানেজার স্যারের সাথে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত বাদ দিলাম। আপার বাচ্চা কয়টা?
- একটা ছেলে। শাহীন।
- বয়স কত?
-১৩।
নিজের ১৩ বছরের ছেলে রাইখা বোনের ১৩ দিনের মেয়েকে নমিনী করা যে ঠিক হবেনা এমন কিছু বলা প্রয়োজন মনে করলাম। মনে হল এই বয়সী মহিলাকে তাদের মত করেই কাবু বানাইতে হবে।
-আপা কি ‘কেয়া পাতার নৌকা’ দেখেন?
- দেখি।
এই তো গেলাম ফাইসা। আরে আমি নিজেই তো দেখিনা। এমন একটা সিরিয়ালের নাম দরকার যা আপায় দেখেনা।
- আপা ‘পদ্মা নদীর নৌকা’ দেখেন?
আপার চোখ বড় বড় হইয়া গেল।
-এটা কই হয়?
- আরে হয় হয়। বোনে বোনে ঝামেলা। মানে একসময় বোনে বোনে ঠিক ছিল পড়ে ঝামেলা হয়।
আপা কেমন জানি চুপ মাইরা গেল।
- নিজের ছেলেরে নমিনী বানান। দিনকাল কেমন বুঝেনই তো।




আরেকটা অবশ্য তেমন কোন সমস্যার ব্যাপার ছিলনা। সমস্যা হল যিনি একাউন্ট খুলতে আসবেন তিনি সিগ্নেচারটা একটু গুলিয়ে ফেলেন। তার নাম রাশেদা। তিনি প্রথম যে সিগ্নেচারটা করলেন সেটাতে লিখলেন রাশদে!! র,শ,দ এর সাথে আকার উকার এর যত রকম সমাবেশ বিন্যাস সম্ভব সবই তার সিগ্নেচারভেদে ক্রমানুসারে আসছে। আমিও ক্রমানুসারে একবার নিজ গালে হাত দেই তো একবার নিজ কপালে হাত দেই। সিগ্নেচার ভেরিফাই করার সিল দেওয়ার পর যে আমাকেই সাইন দিতে হবে। যাই হোক ঘটনা সংক্ষিপ্ত করে ফিনিশিং দিয়ে দেই। এনার একাউন্ট ওপেন করার পর ম্যানেজার স্যারের কাছে নিয়ে গেলাম। স্যার শুরুতে ধমক দিলেন, একটা একাউন্ট খুলতে এতক্ষন লাগে? তারপর পুরা ফর্মটা দেখে রাশেদাকে জিজ্ঞেস করলেন, জাহাঙ্গীর কে? রাশেদা বললেন, আমার আব্বা। এখন আমি পারলে অজ্ঞান হয়ে যাই। ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেইখা ফর্ম ফিল-আপ করছিলাম। তাইলে বড়ু মিয়া কেডা? রাশেদা আপায় জিহ্বায় কামড় দিল। জাহাঙ্গীর আমার স্বামীর নাম। পরিশেষে রাশেদা চলে যাওয়ার পর ম্যানেজার স্যার কে বললাম, স্যার যিনি স্বামীর নাম আর বাপের নাম গুলায় ফেলেন তার একাউন্ট ওপেন করতে তো সময় লাগবেই। তাতে ম্যানেজার স্যারের মন অবশ্য গলেনায়।

এইম ইন লাইফ রচনায় কি কেউ কখনো ব্যাঙ্কার প্রফেশনের কথা দিয়ে রচনা লিখেছে? লিখেনাই। সেটা সম্ভব না।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১২:৪৮
৫০টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×