২০০২ সালের ৮ জুন ছাত্রদলের দুগ্রুপের গোলাগূলিতে নিহত হন সাবিকুন্নাহার সনি। সেই হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি মোকাম্মেল হায়াত খান মুকি আজ অনেকদিন হয় কানাডা পালিয়ে গিয়েছেন।
কার ব্যাকাপে জানেন? সাকা চৌধুরীর, কারণ মুকির বাবা ছিল রাউজানের ইউপি চেয়ারম্যান আর মুকি ছিল সাকার লালিত সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসীদের একজন।
শুধু মুকি নয়, ফজল হক, কানা খুইশ্যা, বিধান বড়ুয়া সহ অসংখ্য সন্ত্রাসীদের নিয়ে রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ায় সাকা ৩৫ বছর ধরে গড়ে তুলেছিলেন সন্ত্রাসের রাজত্ব। ক্ষমতা বলয়ের কাছাকাছি থাকতে স্বচ্ছন্দ এই লোক কখনো এরশাদ কখনো খালেদা জিয়ার আস্থাভাজন হয়ে চালিয়ে গিয়েছেন নোংরা রাজনীতি। আপাদমস্তক সাম্প্রদায়িক, নোংরা বাগ্মিতায় পটু এই লোকের আইএসআই কানেকশনের কথাও রাজনৈতিক মহলে সুবিদিত।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই ঘৃণ্য রাজাকার তার পিতার কুখ্যাত রাজাকার ফক্কা চৌধুরীর সাহচর্যে গহিরা শ্রী কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নূতন চন্দ্র সিংহ হত্যা, সুলতানপুরে শ্রী নেপাল চন্দ্র ও তিনজনকে হত্যা,ঊনসত্তরপাড়ায় ৬৯-৭০ জনকে গণহত্যা এবং চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মোজাফফর আহমদ ও তাঁর ছেলে আলমগীরকে হত্যাসহ লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও দেশান্তরে বাধ্য করার মতো অপরাধে জড়িত ছিল।
যেসব রাজাকার স্বাধীন বাংলায় রাজনীতির প্রতাপ দেখিয়েছে তাদের বেশিরভাগই ছিল জামায়াতের ব্যানারে। মেইনস্ট্রিম রাজনীতিতে সাকার মত প্রভাবশালী আর কোন রাজাকারের পরিচয় মেলে না। বিভিন্ন অশালীন মন্তব্যের মাধ্যমে সাকা প্রায়ই খবরের শিরোনাম হত।
কিছুদিন আগে কাশিমপুর কারাগারে অন্তরীণ থাকাকালীন সাকার বিরুদ্ধে সমকামিতার অভিযোগ উঠে। ভাবতে অবাক লাগে এমন বিকৃত মন-মানসিকতার একজন লোককে বিএনপি আমলে মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন ওআইসির মহাপরিচালক পদের জন্য মনোনয়ন দেয়া হয়।
মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এই দাম্ভিক সাকা সব অপরাধ স্বীকার করে নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যিনি কিনা মহান মুক্তিযুদ্ধের এক সাব-সেক্টর কমান্ডার। একজন মুক্তিযোদ্ধার কাছে স্বাধীনতাবিরোধী এক দানবের ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ এক মহান আদর্শিক বিজয় লাভ করেছে।
মুক্তিযুদ্ধ দৃশ্যত নয়মাসে থেমে গিয়েছিলো কিন্তু কায়েমী স্বার্থের বিরুদ্ধে গণমানুষের সংগ্রাম চলবে আজীবন।
©ধূমায়িত দিপ্ত