সেলিম সাহেব বড্ড সৌখিন মানুষ।ভূমি অফিসে চাকুরি করেন।বেতন কম পেলেও খরচ করতেননা কম। এক মাত্র ছেলে তার রনি।তার জন্যে আকাশের চাঁদ ব্যাতিত সব আনতেন। আর সপ্তাহে অন্তত ইলিশ একবার না হলে বুঝি তার ভোজ অসম্পূর্ণই থেকে যাই।।
ছেলে এক নামি সরকারি স্কুলে পড়ে সামনের বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এস.এস.সি দিবে।আর এ নিয়ে বাসায় কতো আয়োজন।বড্ড চিন্তিত সব্বাই।ছেলে খেলা পাগল।আর খেলা পাগল ছেলের পড়াই মন যে বসেনা।
এ নিয়ে সারাদিন রনির কান ঝালাফালা করা হয় এই বলে যে, “বাপ তুই পড়!! পড়!! পড়!!”
সারাদিন বকা ঝকার পরও রনির কানে কথা ঢোকেনা।কয়েকবার পিঠে মারও পড়েছিলো।
কিন্তু কে শোনে কার কথা।খেলা পাগল রনি খেলেই যাই।খেলতেই থাকে সে।খেলার মাঝে গা ভাসিয়ে দেই।
তবে সারাবছর খেলে সে না হতে পারলো ক্রিকেটার না পারলো ফুটবলার।তাও সে খেলো।এভাবে খেলতে খেলতে একদিন সে সকালে পত্রিকার পড়ালেখা পেইজ খোলে আর দেখে রুটিন। আর এর মানে তার হাতে সময় যে আর নেই।কেনো না সে খেলার মাঝে গা ভাসালো।শুনলোনা মা বাবার আকাশ ভাঙ্গা আর্তনাদ।
কিন্তু সে শেষ সময়ে এসে উপলব্ধি করলো তার হইতো আর সময় নেই। আর পারবেনা সে।
হতাশাই রনি ছেড়ে দেই খেলা ধুলা।ছেড়ে দেই হাঁসি ঠাট্টা।হতাশাই জর্জরিত রনি আরো হতাশ থাকে প্রতিটি সূর্যাস্তের সাথে সাথে।আঁধারের পথ ধরে সে নেশাই মগ্ন হয়। নেশার আঁধার তার জীবন থেকে আরো কিছু সময় কেড়ে নেই। দিনের শেষে রনির হাস্যজ্জল চেহারা যেনো অমাবস্যার কালিমাই ছেয়ে গেছে।পরীক্ষার আরো দু মাস বাকি ছিলো। কিন্তু হতাশা,নেশা,পরিবারের সাপোর্টের অভাব তার হাত থেকে দেড় মাস কেড়ে নেই।
... আর এর পর হইতো রনি হারিয়ে যাই কালের অন্তরালে। কিংবা নাম লিখাই ট্র্যাজেডির ইতিহাসে। কিংবা দূরে কোথাও যেখানে যাওয়া দুর্লভ!!অবহেলা সময় নষ্ট আর গোঁয়ারতমির অন্ধকার ছেয়ে যাই সেলিম সাহেবের পরিবারে।
সেলিম সাহেব হইতো বেঁচে ছিলেন।তার স্ত্রীও হইতো ।।কিন্তু সৌখিনতা হারিয়ে গিয়েছিলো...