আনন্দ বেদনার সংমিশ্রনের একটি দিন ছিলো ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরের দিনটি।আমার কল্পনার দৃষ্টিতে অভুতপুর্ব পাওয়া ও হারানোর দিনটি হচ্ছে বিজয়ের এই দিনটি।প্রতিটি মুক্তিকামি জনতার রক্তের শিহরণ টের পাই আমি আমার শিরায় ,উপশিরায়।একদিকে অনেক কিছু হারিয়ে ফেলার বেদনা অন্য দিকে মহার্ঘ্য স্বাধীনতার স্বাধ।হায় স্বাধীনতা ,হায় বিজয় !আচ্ছা ৪৮ বছর পর আপনারা কেউ কি বলতে পারবেন কেমন ছিলো সেই দিনটি।একটু ভাবুন'তো কোন মা তার বুকের ধনকে হারিয়ে নিঃশ্ব।আর কোন মা তার বিজয়ী ছেলের ফিরে আসার আনন্দে দিশেহারা ।তাদের অনুভুতিগুলো কি বুঝতে পারি আজকের আমরা।হায় আমার স্বাধীনতা ।আমরা কি বুঝতে পারি পিতা ও ভাই হারানোর কি তিব্র যন্ত্রণা।কিংবা কোন বধূর তার প্রিয় স্বামিকে হারানোর বেদনা কি কোন কিছু দিয়ে পুরণ করতে পারবো আমরা।যে শিশু দেখলো উষার দিগন্তে সূর্যের উকি কিন্তু তার হাতটা ধরার মত কেউ নেই।তার কাছে কেমন ছিলো সেদিনের সেই বিজয়।
যে জায়া ,জননী,কণ্যা তার অমুল্য সম্পদ বিষর্জন দিয়ে সর্বশক্তিতে যুদ্ধ করেছিলো বিজয়ের জন্য ।তার অনুভুতি কেমন ছিলো কেউ কি আমাকে বলে বুঝাতে পারবেন ? জানি পারবেননা ,কেউ পারেনা।কিছু কিছু মুহুর্ত,দিন,সময় শুধু উপলব্দী করা যায় ।ধরা যায়না ,ছোয়া যায়না।ব্যাখ্যা করাও দুঃসাধ্য।সেরকমই একটি দিন ছিলো ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দিনটি।একেকটি মানুষ ছিলো একেকটি বাংলাদেশ ।একেকজনের অনুভবও ছিলো একেক রকম।আমি আজকের বাংলাদেশে দাড়িয়ে তাদের অনুভুতিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে স্পর্শ করতে চাই সেই অনেক সাধনার বিজয়'কে।
আজকের বিজয়ের নিশান যে উড়ছে তার পেছনে লুকিয়ে আছে লক্ষকোটি স্বরণার্থীর অমানবিক জিবনের ইতিহাস।আমার আপনার একান্ত আপন জনদের ত্যাগ ও তিতিক্ষার বোবা কান্না।বনে,বাদারে ,পাহাড়ে ,সমতলে ত ছুটে তাদের প্রাণপন যুদ্ধ।প্রানের ভয়ে ছুটতে থাকা মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়েছে আমার ,আপনার সন্তান সমতুল্য যে শিশু তার আত্মদানও জড়িয়ে আছে আমাদের বিজয়ে।তাহোলে সেই বিজয় কি কখনও ব্যার্থ হতে পারে ! আমি আপনি থাকবোনা হয়তো এই পৃথিবিতে কিন্তু আমাদের পুর্বশুরীদের ত্যাগের বিনিময়ে যে দেশ সেই দেশের প্রতি কি আমাদের কোন দায় নেই ? একটু ভাবুন'তো কি করেছেন এই দেশটার জন্য ।সব সময় শুধু চেয়েছি আর চেয়েছি।কতটুকু দিতে পেরেছি তার হিসেব মেলানোর পালা শুরু করুন এবার।দেখবেন দেশটা আর পিছিয়ে নেই।বাঙালীর মত দুর্দমনীয় আকাংখা পৃথিবিতে আর কোন জাতির নেই ।আমরা ইচ্ছে করলে পারিনা এমন কোন কিছুই নেই।
সবশেষে ১৬ই ডিসেম্বরের শহিদ আমার নাজু মামার আত্মার প্রতি উৎস্বর্গ করছি আমার ক্ষুদ্র এই লেখাটুকু।যিনি ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পলায়নপর পাক হানাদারদের বুলেট বুকে নিয়ে শহিদ হয়েছেন।জানিনা সেই মূহুর্তে তার মুখে হাসি আর চোখে অশ্রু চিক চিক করছিলো কিনা।তবে শুনেছি মুখে ছিলো" জয় বাংলা" শ্লোগান।হায়রে বিজয় -পেয়ে হারানো বিজয়।অন্তিম মুহুর্তে দেখে গিয়েছিলেন বাংলার বিজয়।এই সান্তনা নিয়ে আবারো পথ চলবো আমরা । আমাদের ব্যার্থ হওয়ার কোন সুযোগ নেই।তাদের আত্মার শান্তির জন্যই হাল ধরতে হবে শক্ত হাতে। সফল আমরা হবই ইনশা-আল্লাহ।
জয় বাংলা,
জয় বঙ্গবন্ধু।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:২১