গতকাল সোমবার গভীর রাতে অভিযানের পর আজ মঙ্গলবার দুপুরে পৃথক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুজনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া এ ঘটনায় আরও তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন সাঘাটা ইউনিয়নের গোবিন্দী গ্রামের সোহরাব হোসেন ওরফে আপেল (৩৫) ও শফিকুল ইসলাম (৪৫)। সোহরাব আজ দুপুরে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে এবং শফিকুল ইসলাম বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকালে মারা যান।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোহাম্মদ আসিফ ও বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আহত তিনজনের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাহারায় গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাঘাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ওরফে সুইট (৫৫) ও একই ইউনিয়নের বাঁশহাটা গ্রামের শাহাদত হোসেন (২৮) এবং উত্তর সাতালিয়া গ্রামের রিয়াজুল ইসলাম বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রিয়াজুল আওয়ামী লীগ নেতা মোশাররফ হোসেনের গাড়িচালক।
জানতে চাইলে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আরএমও মোহাম্মদ আসিফ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকালে পুলিশ তিনজনকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। দুপুরে সোহরাব হোসেন নামের একজন মারা যান। বাকি দুজন চিকিৎসাধীন। তাঁরা শঙ্কামুক্ত।
মৃত সোহরাবের চাচা মো. সুজাউদৌলা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দিবাগত রাত ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির দোতলা থেকে দেখেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৮ থেকে ১০টি গাড়ি বাড়ির চারদিক ঘিরে ফেলেছে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হঠাৎ চেয়ারম্যানের বাড়ির গেটে এসে ডাকতে থাকেন। দরজা খুলে দেওয়ার পর চেয়ারম্যানের ঘরে ঢোকেন। এ সময় তাঁরা চেয়ারম্যানের গাড়িচালক রিয়াজুল ইসলাম ও কাজের লোক শফিকুলকে মারধর করেন। পরে চেয়ারম্যানকে নিচ থেকে দোতলায় নিয়ে তাঁকেও মারধর করেন। তারপর পুলিশ ও তাঁদের লোকজন রিয়াজুল ও শফিকুলকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। বাকি তিনজন মোশারফ হোসেন, সোহরাব হোসেন ও শাহাদত হোসেনকে পুলিশের সদস্যরা গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
আজ গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা মোশারফ হোসেন ও শাহাদত হোসেনকে চিকিৎসাধীন দেখা যায়। তাঁদের সঙ্গে স্বজনদের কেউ কেউ ছিলেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পাহারায় ছিলেন। স্বজনদের সঙ্গে এ ব্যাপারে সেখানে কথা সম্ভব হয়নি। সেখানে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ইবনে মিজান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় অসুস্থার কারণে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। অভিযানে কতজনকে আটক করা হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।
সূত্র ঃ প্রথম আলো
গাইবান্ধায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নির্যাতনে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৪