ভূঞাপুরের জল্লাদ মওলানা আশরাফ একদিনে হত্যা করেন ৩৮ গ্রামবাসী
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
একাত্তরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানা আলবদর বাহিনীর প্রধান কুখ্যাত রাজাকার মওলানা আশরাফ আলী এখন জামাত নেতা। বহু মুক্তিযোদ্ধা হত্যা করেছেন, বহু নারীর সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছেন, অসহায় মা-বোনদের তুলে দিয়েছিলেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে। লুটপাট আর অগ্নিসংযোগ করেছেন বহু মুক্তিযোদ্ধা ও হিন্দু পরিবারের বাড়িঘরে। ভুঞাপুরের জল্লাদ নামে চিহ্নিত রাজাকার আশরাফের বাড়ি এলাকার নিকরাইল গ্রামে। নিকরাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন মওলানা হিসেবে চাকরি করেছেন। বর্তমানে অবসরে আছেন। একাত্তরের ১৭ নভেম্বর ভূঞাপুরের ছাব্বিশা গ্রামে মওলানা আশরাফের নেতৃত্বে ৩৮ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তার সহযোগী মওলানা শহীদুর রহমানও সেদিন ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। সেদিন ২০/২৫ নারীর সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার সৈন্য ও রাজাকার-আলবদররা। প্রায় সাড়ে ৩শত ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়ে সেদিন তারা ছাব্বিশা গ্রামকে পরিণত করেছিল বিরান ভূমিতে। সেদিনের কথা মনে হলে আজো আঁতকে ওঠেন বেল্লাল হোসেন। একাত্তরের এই দিনে শিশু বেল্লাল হোসেনের সামনে পাকিস্তান বাহিনী গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে তার বাবা-মা, দুইচাচা ও ১০ দিন বয়সের শিশু বোনকে। স্বজনদের লাশের আড়ালে লুকিয়ে থেকে শিশু বেল্লাল সেদিন নিজেকে রক্ষা করেছিল।
সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধা ভারই গ্রামের সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া জানান, মুক্তিযুদ্ধ শেষে মওলানা আশরাফ ও মওলানা শহীদকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন কোম্পানি কমান্ডার লুতফর রহমান। গুলি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তোফাজ্জল হোসেন নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে। মওলানা আশরাফকে বেঁধে রেখে মওলানা শহীদকে যমুনা নদীর তীরে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্ত মওলানা শহীদ তাদের গ্রামের হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল সেদিন তিনটি ফাঁকা গুলি করে তাদেরকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন। এভাবে প্রাণে রক্ষা পেয়ে তারা দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকেন। ৭৫-এর রক্তক্ষয়ী রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তারা আবার ভূঞাপুরে চলে আসেন এবং নতুন করে প্রকাশ্যে তাদের হারানো আদর্শের কথা প্রচার করতে থাকেন।
মওলানা আশরাফ আলী ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে গোপালপুর-ভূঞাপুর আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন। তার এক জামাতা রবিউল আলমও ভূঞাপুরে জামাত নেতা। নিকরাইল ইউনিয়ন নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে ৩৫ বছর ধরে কাজ করেন মওলানা আশরাফ। পরে তার অপর জামাতা আবদুস সালামকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়। স্বাধীনতার পর গত ৩৬ বছরেও রাজাকার আশরাফ আলীর নারকীয় কর্মকাণ্ডের কোনো বিচার হয়নি।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
লিখেছেন
নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬
হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ...
...বাকিটুকু পড়ুন
বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন...
...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র...
...বাকিটুকু পড়ুনলিখেছেন
শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮

হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো...
...বাকিটুকু পড়ুন
যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে...
...বাকিটুকু পড়ুন