somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নৈতিকমূল্যবোধে মা‘য়ের ভূমিকা I

২১ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মায়ের শিক্ষাই হলো শিশুর আগামীর আসল বুনিয়াদ। আমি আপনি সবাই আমরা সমাজের সচেতন মা বাবা। নৈতিকতার বীজ ঘর হতে বপন করতে হবে। তবে আজকাল কিছু কিছু মা ভারতীয় টিভি চ্যানেল এবং ন্যাট নিয়ে ব্যস্ত থাকে। বাচ্চা পরে থাকে প্রাইভেট টিচার কিংবা কোন কোচিং সেন্টারে । মা এতে স্বস্তিতে থাকে যে সন্তান পড়ছে। আসলে সে কি পড়ছে , পড়ার ধরনটা কি , কোন কিছুই তদারকি করে না । একজন আদর্শ মানবিক গুন সম্পূর্ণ মা‘য়ের কারণে একজন সন্তান ভালো জীবন গড়তে পারে। আপনার সন্তানকে সত্য ন্যায় ,মায়া মমতা , মননশীল সৃজনশীল ও মানবিক হওয়া মা হিসাবে আপনিই শিখাতে পারবেন। ঘুম হতে সকালে ভালোবাসা মিশ্রিত কন্ঠে ডেকে তুলে দিন। এবং পড়তে বসতে বলুন । কি পড়ছে আপনি পাশে বসে তদারকি করুণ। স্কুলে শ্রেণী শিক্ষকের পড়ায় মনোযোগ দিতে বলবেন। চলার পথে সালাম দিতে বলবেন। কেউ কিছু দিলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে বলবেন। সন্ধ্যার পর পাশে নিয়ে পড়াতে বসবেন। অনেক মা টিভি দেখে , না হয় ঘুম যায়, নিজেকে পাল্টান দয়া করে । তবে পড়া হতে হবে আনন্দময় । সন্তানের সবচেয়ে ভালো বন্ধুই হলো পরিবারের মানুষ। আর আমরা তাদের হাত পা বেঁধে মেরে মনে ভয় এবং ঘৃণা ঢুকিয়ে দিই । যা বর্তমানে খুব ভয়ংকর ফল বয়ে আনছে।

রাতেও তদারকি করতে ভুলবেন না পড়াশোনার। পড়ার ভিতর বিরতি দিবেন। মজার কোন গল্প করবেন। যা পারেন খেতে দিবেন । পড়া শেষে লিখতে বলবেন । একটা অংক চার/পাঁচ বার করতে বলবেন।স্কুলে কি পড়ালো , কিভাবে পড়ালো আপনিও দেখবেন। আজকের পড়া ২/৩ দিন পর আবার পুনরায় জিজ্ঞাসা করবেন। মনে রাখবেন আমরা গরীব । আর গরীবের জন্য শিক্ষাই হলো সম্পদ। এবং আপনার সন্তান আপনার সম্পত্তি । আমাদের জন্য মা বাবা কিছু না করতে পারলেও আমরা মেনে নিয়েছি। কিন্তু আমাদের সন্তানের জন্য হয় অগাধ টাকা পয়সা রেখে যেতে হবে না হয় তাদের শিক্ষিত করতে হবে । শিক্ষিত হলে খেয়ে পরে চলার রাস্তা খোজ করে নিবে তারা। কারণ যায় দিন ভালো আসে দিন খারাপ । খেলাধুলার সুযোগ দিবেন , রাজনীতি নামক ক্যান্সার হতে “দুরে ”রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। কলেজ ভার্সিটিতে গিয়ে রাজনীতি করুক। পড়ার ব্যাপারে স্কুলের রুটিন এর পাশাপাশি বাড়ির জন্য রুটিন ঠিক করে দিন। সন্তান কষৃক হবে না গবেষক হবে সময় বলে দিবে আপনি চাপিয়ে দিবেন না। পড়া রিড়িং পড়তে উৎসাহিত করবেন। শুধু চিলিবাস নিয়ে পড়ে থাকবেন না । বাহিরের জগত সম্পর্কে ধারণা দিবেন। সাধারণ জ্ঞান অর্জন করলে সৃজনী চোখ খুলে যাবে। চিন্তার পরিধি বাড়লে পরীক্ষায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে অবলিলায়।

(একটি আন্তর্জাতিক দৌড় প্রতিযোগিতায় কেনিয়ান দৌড়বিদ আবেল মুতাই ফিনিশ লাইন শেষ করার ঠিক কয়েক ফুট আগেই দৌড় বন্ধ করে দিল। তার ধারনা ছিল যে, সে ফিনিশ লাইন শেষ করে ফেলেছে এবং সে জিতে গেছে। আবেলের ঠিক পিছনেই ছিল স্প্যানিশ দৌড়বিদ ইভান ফারনান্দেজ। সে চিৎকার করে আবেল কে বলতে লাগল, "হ্যালো, তুমি ফিনিশ লাইন শেষ করো নাই। তুমি দৌড় চালিয়ে যাও।" আবেল কেনিয়ান হওয়ায় ইভানের ভাষা "স্প্যানিশ" বুঝতে পারছিল না। সে দাড়িয়েই রইলো। ইভান এটা বুঝতে পেরে আবেলকে ধাক্কা দিয়ে ফিনিশ লাইন পার করে দিলো। তারপর কেনিয়ান দৌড়বিদ আবেল জিতলো এবং প্রথম হল। প্রতিযোগিতার শেষে এক সাংবাদিক ইভানকে জিজ্ঞাসা করল: তুমি এমনটা করলে কেন? ইভান বলল "আমার স্বপ্ন হল একদিন আমাদের একটি কমিনিটি লাইফ থাকবে।" সাংবাদিকঃ তাতো বুঝলাম, কিন্তু ঐ কেনিয়ান আবেলকে কেন জিতিয়ে দিলে? ইভান আবারো বলল, আমি তো তাকে জিতিয়ে দেইনি। সেতো জিতেই যাচ্ছিল। সাংবাদিকঃ তুমি নিজেই তো জিততে পারতে, কারণ তুমি তো ঠিক তার পরেই ছিলে? ইভানঃ সাংবাদিকের দিকে তাকিয়ে উত্তর দিল। দেখ, সত্যিই আমি জিততে পারতাম। কিন্তুু জেতার মুল্য কি হতে পারত? কি সম্মান আমি পেতাম। হয়ত একটি মেডেল পেতাম। তা দিয়ে আমি কি করতাম? আর এ রকম জেতায় আমার মা'ই বা আমাকে কি ভাবত!)

মানুষের মূলাবোধ বংশানুক্রমিক স্থানান্তর হয়। ইভান তার মায়ের কাছ যে মূল্যবোধ শিখে ছিলো তা হলো আরেকজনকে ঠকিয় জিতে না আসে। আর আমরা আমাদের বাচ্চাদের শিক্ষা দিচ্ছি যে কোন মূল্যে জিতে আসো। মনে রাখবেন ভালো কাজ করলে যেমন মানুষ বলে এইটা অমুকের সন্তান এবং খারাপ কাজ করলে মানুষ বলে এইটা অমুকের সন্তান।

( আবেল ও ইভানের গল্প সংগ্রহ করা)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:০৪
২৮টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমিও যাবো একটু দূরে !!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২২

আমিও যাবো একটু দূরে
যদিও নই ভবঘুরে
তবুও যাবো
একটু খানি অবসরে।
ব্যস্ততা মোর থাকবে ঠিকই
বদলাবে শুধু কর্ম প্রকৃতি
প্রয়োজনে করতে হয়
স্রষ্টা প্রেমে মগ্ন থেকে
তবেই যদি মুক্তি মেলে
সফলতা তো সবাই চায়
সফল হবার একই উপায়।
রসুলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×