somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উপজাতিরা কোন মতেই আদিবাসী নয়। যদি তাদের আমরা আদিবাসী বলে স্বীকার করি চরম ভুল করবো।

১০ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আদিবাসী, উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জাতিকে আদিবাসী বললে সমস্যা আছে। কারা আদিবাসী সেই দিক বোঝার আগে জানা দরকার বাংলাদেশে যারা হঠাৎ করে নিজেদের আদিবাসী দাবি করছে এর পিছনে কারণ কি? সরকারের সাথে শান্তি চুক্তির সময়েও তারা নিজেদের আদিবাসী হিসাবে উল্লেখ করেনি। তাহলে এখন কেন করেছে।

মুল সমস্যা বাঁধিয়েছে জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণাপত্র। এই ঘোষণাপত্রে সর্বমোট ৪৬টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। এসব অনুচ্ছেদের বেশ কয়েকটি ধারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, অস্তিত্ব, কর্তৃত্ব, সংবিধান ও আত্মপরিচয়ের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক। একথা নিশ্চিত করে বলা যায়, যেসব ব্যক্তিবর্গ উপজাতিদের আদিবাসী বলতে আগ্রহী তাদের অনেকেই হয়তো এই ঘোষণাপত্রের মর্মার্থ বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন।

নিম্নে জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণাপত্রের কিছু অনুচ্ছেদ নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:

অনুচ্ছেদ-৩: আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার বলে তারা অবাধে তাদের রাজনৈতিক মর্যাদা নির্ধারণ করে এবং অবাধে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মপ্রয়াস অব্যাহত রাখে।

অনুচ্ছেদ-৪: আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার উপভোগের বেলায়, তাদের অভ্যন্তরীণ ও স্থানীয় বিষয়ে তথা স্বশাসিত কার্যাবলীর অর্থায়নের পন্থা ও উৎস নির্ধারণের ক্ষেত্রে তাদের স্বায়ত্তশাসন বা স্বশাসিত সরকারের অধিকার রয়েছে।

অনুচ্ছেদ-৫: আদিবাসী জনগণ যদি পছন্দ করে তাহলে রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের পূর্ণ অধিকার রেখে তাদের স্বতন্ত্র রাজনৈতিক, আইনগত, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অক্ষুন্ন রাখা ও শক্তিশালীকরণের অধিকার লাভ করবে।

অনুচ্ছেদ-৬: আদিবাসী ব্যক্তির জাতীয়তা লাভের অধিকার রয়েছে।

বাংলাদেশের উপজাতীয় জনগোষ্ঠী আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পেলে বাংলাদেশের ভেতর কমপক্ষে ৪৫টি স্বায়ত্তশাসিত বা স্বশাসিত অঞ্চল ও সরকার ব্যবস্থার সৃষ্টি করতে চাইবে। তারা নিজস্ব রাজনৈতিক কাঠামো, জাতীয়তা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, আইনপ্রণয়ন ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার পাবে।

এছাড়াও এই ঘোষণাপত্রে আদিবাসীদের ভূমির উপর যে অধিকারের কথা বলা হয়েছে তা আরো ভয়ানক। যেমন, অনুচ্ছেদ-২৬: ১. আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের ঐতিহ্যগতভাবে মালিকানাধীন, দখলীয় কিংবা অন্যথায় ব্যবহার্য কিংবা অধিগ্রহণকৃত জমি, ভূখণ্ড ও সম্পদের অধিকার রয়েছে।

২৬: ৩. রাষ্ট্র এসব জমি, ভূখণ্ড ও সম্পদের আইনগত স্বীকৃতি ও রক্ষার বিধান প্রদান করবে। সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথা, ঐতিহ্য এবং ভূমি মালিকানা ব্যবস্থাপনা মেনে সেই স্বীকৃতি প্রদান করবে।

অনুচ্ছেদ-২৮: ১. আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, ভূখন্ড ও সম্পদ যা তাদের ঐতিহ্যগতভাবে মালিকানাধীন কিংবা অন্যথায় দখলকৃত বা ব্যবহারকৃত এবং তাদের স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি ছাড়া বেদখল, ছিনতাই, দখল বা ক্ষতিসাধন করা হয়েছে এসব যাতে ফিরে পায় কিংবা তা সম্ভব না হলে, একটা ন্যায্য, যথাযথ ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পায় তার প্রতিকার পাওয়ার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার রয়েছে।

অনুচ্ছেদ-৩০: ১. আদিবাসী জনগোষ্ঠীর স্বেচ্ছায় সম্মতি জ্ঞাপন বা অনুরোধ ছাড়া ভূমি কিংবা ভূখন্ডে সামরিক কার্যক্রম হাতে নেয়া যাবে না।

অনুচ্ছেদ-৩২: ২. রাষ্ট্র আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, ভূখন্ড ও সম্পদের উপর প্রভাব বিস্তার করে এমন কোনো প্রকল্প অনুমোদনের পূর্বে, বিশেষ করে তাদের খনিজ, পানি কিংবা অন্য কোনো সম্পদের উন্নয়ন, ব্যবহার বা আহরণের পূর্বে স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি গ্রহণের জন্য তাদের নিজস্ব প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে আলোচনা ও সহযোগিতা করবে।

এই অনুচ্ছেদগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, বাংলাদেশের উপজাতীয় জনগোষ্ঠী আদিবাসী স্বীকৃতি পেলে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে নিজস্ব আইনে নিজস্ব ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের মুষ্টিমেয় চিহ্নিত উপজাতিরা দাবি করছে ঐতিহ্য ও প্রথাগত অধিকার বলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল ভূমির মালিক তারা। একই অধিকার বলে সমতলের উপজাতীয় অধ্যুষিত এলাকার সকল ভূমির মালিকানা সেখানকার উপজাতীয়রা দাবি করবে। সেখানে যেসব ভূমি সরকারি ও ব্যক্তিগত মালিকানায় বাঙালীরা রয়েছে তা ফেরত দিতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে যেহেতু ঐ গোষ্ঠী সকল সামরিক স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার দাবি জানাচ্ছে, সে কারণে সেখান থেকে সকল সামরিক স্থাপনা সরিয়ে নিতে হবে। ইউএনডিপিসহ কিছু বৈদেশিক সংস্থা ইতোমেধ্যে প্রকাশ্যে এ দাবি তুলেছে।

যখন দেখি দেশের কিছু মানুষ (বিশেষ করে বাম রাজনীতিধারা) উপজাতি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী আর আদিবাসীর ভিতর পার্থক্য বুঝতে চায় না তখন নিজেকে খুব অসহায় লাগে! রাজনীতি তো দেশকে নিয়ে, আমার কাজ যদি দেশ বিরোধী হয়ে যায় তাহলে কিসের রাজনীতি করা?

মেজর জিয়া ভূমিহীন বাঙ্গালিদের তিন পার্বত্য জেলায় বসতি স্থাপন করেন। সেখানে এখন বাঙালী আর উপজাতি সম পরিমান আছে। না হয় এতদিনে পার্বত্য অঞ্চল বাংলাদেশ থেকে ছুটে যেত।মেজর জিয়ার পরিকল্পনার কাছে উপজাতিরা ব্যর্থ হলে তখন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয় তারা। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হলো আদিবাসী থিউরি।

ভুখন্ডের মূল অধিবাসী যারা ভূমিপুত্র তারাই আদিবাসী। এই কন্সেপ্ট অষ্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড এবং আমেরিকার জন্য প্রযোজ্য যেখানে দখলদার অভিবাসীগণ মেইনস্ট্রিম পিপল। সেখানে ভূমির মূল অধিবাসীরা হলো আদিবাসী। বাংলাদেশে আমরাই আদিবাসী এবং অন্যরা উপজাতি কিংবা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। আজ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ বছর আগে চাকমারা বার্মা থেকে ধাওয়া খেয়ে এদেশের পার্বত্য চট্রগ্রামে আশ্রয় নেয়। অথচ এ ভুখণ্ডে হাজার বছরের ইতিহাস রয়েছে বাঙালীদের। আর এখন উপজাতিরা হইলো আদিবাসী! আদিবাসী হইলে পূর্ব তীমুরের মত তাদের স্বাধীন দেশ দিয়ে দিতে হবে।

২০০৫ সালে বিএনপি সরকার প্রথম জাতিসংঘে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই। রাষ্ট্রীয়ভাবে সেই ধারাবাহিকতা আওয়ামি লীগ ধরে রেখেছে।

সূত্রঃ ক . মা। ও ফেসবুক।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৩৬
২৭টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×