আমাদের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল সরকারে থাকলে হরতাল অবৈধ ও অসাংবিধানিক মনে করে আর বিরোধী দলে থাকলে হরতালকে গণতন্ত্র চর্চার একমাত্র হাতিয়ার মনে করে এবং জনস্বার্থে তারা হরতাল করে বলে দাবী করে যাতে সাধারণ জনগণের কোন সমর্থনই থাকে না । বিরোধীদল বলে হরতাল সফল হয়েছে সরকার বলে বিফল হয়েছে। সরকার বলে জনজীবন স্বাভাবিক ছিল ,অফিস আদালত কলকারখানা স্বভাবিক নিয়মে চলেছে, আবার এও বলে যে হরতালে শত শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়, অর্থণীতিকে ধ্বংস করে । বেচারা জনগণ ! তাদের কথা কউ শোনে না, তারা কী চায় তা কেউ জানতে চায় না অথচ তাদের জন্যই সবাই নাকি রাজণীতি করে । রাজণীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নাই , নকি কথার শেষ নাই । তত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আওয়ামীলীগ ৯৬ দিন হরতাল করেছিল, বিএনপি বলেছিল অসাংবিধানিক, সংসদে আসুন রাজপথ ছেড়ে,যেমনটা বলছে বর্তমান সরকার কিন্তু সেদিন আওয়ামীলীগ সংসদে ফিরে যায় নাই।
তারপর আন্তর্জাতিক মোড়লদের কত দেন দরবার। কোন লাভ হয় নাই, সবশেষে ১৫ ফেব্রুয়ারীর একতরফা নির্বচন মধ্যরাতে তত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ.....ইত্যাদি ইত্যাদি। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে হরতাল না করার ঘোষণা দিয়েও তা রক্ষা করেনি। নিয়তির কী নির্মম পরিহাস ,যে তত্বাবধায়কের জন্য আওয়ামীলীগ কত হরতাল সংগ্রাম করেছে, কত রক্ত পাত হয়েছে সেই আওয়ামীলীগ এখন তত্বাবধায়ক চায় না. আর যে বিএনপি তত্বাবধায়ক বোঝে না অসাংবিধানিক মনে করতো তারাই আজ হরতাল করছে তত্বাবধায়ক সরকার বহাল রাখার জন্য। নিরপেক্ষ বা জালিয়াতি যেমন ভোটই হোকনা কেন এই দুই দলই ক্ষমতায় আসবে যারা কেউই জনগণের বন্ধু নয়। অসহায় জনগণের শেষ আশ্রয় স্থল তাই আদালত। যদিও আমাদের আদালত সম্পুর্ণ স্বাধীন নয় তারপরও তাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে সাহস দেখিয়ে ,কারণ সাধারণ জনগণের তারা ছাড়া কেউ নাই । ইদানিং হাইকোর্ট স্ব-প্রণোদিত হয়েও বেশ কিছু জাতীয় ও ব্যক্তিগত বিষয়ে রুলিং দিয়েছে যাতে জাতীয় স্বার্থ ও মানবাধিকার রক্ষিত হয়েছে। সুতরাং হরতালের মত ক্ষতিকর ধ্বংসাত্বক,জাতীয় স্বার্থবিরোধী, অর্থণীতিধ্বংসকারী বিষয়ে রুলিং দিয়ে হাইকোর্ট যুগান্তকারী সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে দেশবাসীকে রক্ষা করবে এ আমার দৃঢ় প্রত্যশা। এতে রাজণীতিজীবীরা আপনাদের পাশে থাকবে না ঠিকই কিন্তু দেশের কোটিকোটি জনগণ আপনাদের পাশে থাকবে একথা হলফ করে বলতে পারি। জাতীয় প্রয়োজনে কোন নিয়ম পদ্ধতির পয়োজন হতে পারে ,আবার তার প্রয়োজন ফুরিয়েও যেতে পারে। কিন্তু এ ব্যাপারে আমাদের সরকার আর বিরোধী দলের মধ্যে যে কোন আলোচনা বা সমঝোতা হবে না তা জোড় দিয়েই বলা যায়। সুতরাং এখনই হরতালবিরোধী রুলিং দেওয়ার উপযুক্ত সময়,কারণ বর্তমান সরকারের বাকী সময়ে-৪৮ঘন্টা,৭২ঘন্টা,লাগাতার,অবস্থান ধর্মঘট, জ্বালাও,পোড়াও ভাঙচুর,রক্তপাত কত কী যে দুঃসময অপেক্ষা করছে তা সহজেই অনুমেয়। তাই হাকোর্টের কাছে আকুল আবেদন আপনারা হরতালের মত ক্ষতিকর রাজণৈতিক কর্মসুচি নিষিদ্ধ করে রুলিং দিয়ে জনস্বার্থ রক্ষা করে,জনগণের শেষ ভরসার যায়গা বলে নিজেজদের প্রমান করুণ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





