ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিচ্ছিন্নতা: শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ সবসময়ই ছিল। বিশেষ করে চারুকলার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরণের চিত্রাঙ্কণ করে শাহবাগের শ্রী বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছিল। গত বছরের জুন পর্যন্ত ছাত্র সংগঠনগুলো ও বোয়ানের সঙ্গে যখন সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে, তখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী আসতো। কিন্তু ১২ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে জনৈক কাওসার আহমেদের একটি ‘অবমাননাকর’ পোস্ট বোয়ানের ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করা হয়। এতে করে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। যে কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আর ওই পথ মাড়ান না।
সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও আর নেই: গণজাগরণ মঞ্চের শুরু থেকে অন্তত ২০৫ টি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এতে যোগ দেয়। একমাত্র উদীচী ছাড়া আর কোনো সংগঠন এখন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচিতে যোগ দেন না। এসব সংগঠনের মধ্যে প্রথম বিরোধ হয় ‘তীরন্দাজের’ সঙ্গে। ইমরান এইচ সরকারের সন্দেহপ্রবণতায় ‘তীরন্দাজকে’ দূরে ঠেলে দেওয়া হয়। একে একে দূরে সরে যায় মুভিয়ানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ফাঁসির মঞ্চ— এসব সংগঠন।
মঞ্চের সঙ্গে নেই আলোচিত রুমি স্কোয়াডও। যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের পাশাপাশি আলাদা কর্মসূচি পালন করতে থাকে রুমি স্কোয়াড। মঞ্চের কর্মীরা পৃথকভাবে গঠন করেন ‘গৌরব ’৭১’। ২ আগস্ট শাহবাগে এই সংগঠন ‘গণজাগরণ মঞ্চ’ নামে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। সেদিন প্রথম ইমরান এইচ সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ওরা গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে জড়িত নয়।
উদীচীর সঙ্গীতা ইমামের নেতৃত্ব মেনে নিতে না পেরে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ নেতারা চলে যান মঞ্চ ছেড়ে।
একচ্ছত্র ইমরান: ছাত্রলীগ একটি বড় রকমের ভূমিকা রাখতো সংগঠনগুলোর বৈঠকে। তারা চলে যাওয়ার পর একে তো নিয়মিত বৈঠক হয় নি, যেদিন হয়েছে সেখানে ইমরান এইচ সরকার সিদ্ধান্ত নিতেন। ইতোমধ্যে ছাত্রসংগঠনগুলো ছাড়াই নিজের একটি আলাদা বলয় গড়ে তোলেন ইমরান। তাদের শূন্যতার জায়গা পূরণ করতে এনজিও নেতৃবৃন্দকে তাঁর আশপাশে নেন তিনি। (খুশি কবির, নিজেরা করি, শিপ্রা বোস)। এতে করে যে বাম ছাত্রসংগঠনগুলো ইমরানের সঙ্গে ছিল তারাও বিরোধিতা করে।
গণজাগরণ মঞ্চের মূল সংগঠকদের মাহমুদুল হক মুন্সী, শামস রশীদ, নবেন্দু সাহা ছাড়া আর কেউ নেই।
গণজাগরণ মঞ্চের গ্রুপিং কেন? পর্ব-১
গণজাগরণ মঞ্চে গ্রুপিং কেন? পর্ব-২