নারীদের পোষাক ধর্ষণের জন্য মূলত দায়ি, এই দাবিটি কতখানি গ্রহন যোগ্য, তবে নারীর পোষাক ধর্ষণের অনেক গুলো কারনের একটা কারন তাতে কোন সন্দেহ নেই।
নারীর পোষাক মূলত দায়ি এই দাবির পক্ষে যারা আছেন, তাদের একমাত্র অবলম্বন কিছু পশ্চিমা দেশের ধর্ষণের পরিসংখ্যান। তাদের এই রেফারেন্স মোটেও ধোপে টিকে না এবংং সম্পূর্ন অবাস্তব তুলনা।
অনেক পশ্চিমা দেশে ধর্ষণের মাত্রা যে খুব কম সেটা তাদের চোখে আসেনা বা ইচ্ছা করে আড়াল করে। পশ্চিমা দেশ গুলোতে স্বামী কর্ত্বক স্ত্রীকে বলপূর্বক যৌন সম্পর্ক করাকে ধর্ষণ হিসাবে গৌণ্য করা হয়, সেটা কখনো বিবেচনা করা হয় না এবং ওই সব দেশে বেশির ভাগ নারী যৌন নির্যাতনের সন্মুখিন হলে, সেটা রিপোর্ট করে।
এবার দেখা যাক বাংলাদেশ, পাকিস্তান সহ মধ্য প্রাচ্যের দেশ গুলোতে যৌন নির্যাতিতা নারীরা কোন রিপোর্ট করে কিনা।
প্রথমে বাংলাদেশ থেকে শুরু করি, জাহাংগির নগর বিশববিদ্যালের ছাত্রলীগের নেতা মানিক ১০০ ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছিল, ওই ১০০ জন শিক্ষিত নারী কি কোন রিপোর্ট করেছিল? না তারা রিপোর্ট করেনি। তাহোল এ অপকর্ম কি ভাবে ফাস হোল? মানিকের ১০০তম ধর্ষণ উৎসব করার সময় ঘটনাটা ফাস হয়ে যায়, তানা হোল ১০০ মেয়ে ধর্ষনের ঘটনা কোন দিন জানা যেত না এবং ওই নির্যাতিতা ছাত্রীরা নালিশ করে নি।
এবার আসি ২০০৯/১০ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় তখন শিবির ক্যাডার পান্না মাস্টারের ১৫০ ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পায় অন্যভাবে, তার বিরুদ্ধে ১৫০ ছাত্রীর কেহই নালিশ দাখিল করে নি।
এখন দেখতে পাচ্ছেন শিক্ষিত মেয়েরাই রিপোর্ট করছে না, তাহোলে অশিক্ষিত মেয়েদের কি অবস্থা। এই ভাবে গ্রামে গজ্ঞের হাজার হাজার ধর্ষণের ঘটনা রিপোর্টেড হয় না।
পশ্চিমা দেশে ওই সব কয়টা কেস ই রিপোর্টেড হোত।
এবার দেখুন নোয়াখালীর সেই ঘটনা যেখানে একদল বখাটে একজন মহিলাকে নগ্ন করে শালিনতা হানি করে, ওই মহিলা ও কোন রিপোর্ট করেনি, পরে বখাটের দল ভিডিও ছড়িয়ে দিলে তারা গ্রেফতার হয়,
এবার দেখা যাক সিলেটে ঘটে যাওয়া স্বামীকে বেধে রেখে ৭ জন ছাত্রলীগ ক্যাডারের ধর্ষণের ঘটনা, এই ঘটনা ধামা চাপা পরে যেত যদি না ছাত্র লীগের আরেক জন নেতা কড়া পদক্ষেপ না নিত।
তাহোলে বোঝা যাচ্ছে যে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সৌদি আরব সহ মধ্য প্রাচ্চের দেশগুলোতে ধর্ষণের কোন রিপোর্ট হয় না এবং চার জন মুসলমান পুরুষের চক্ষুস সাক্ষী আবশ্যকীয় হওয়া কারনে, আরো রিপোর্ট হয় না এবং চার সাক্ষী আনতে না পাড়লে নির্যাতিতা নারীকে শাস্তি পেতে হয়।
এবার আমরা দেখি চার জন সাক্ষীর আবশ্যকতা দিয়ে যদি বিচার করা হয়, তাহোলে সিলেটের ঘটনাটার ৭ ধর্ষকের সাজা হয় কিনা?
এই ক্ষেত্রে ওই ধর্ষণের সাক্ষী মাত্র একজন, ওই মহিলার স্বামী বাকি সাত জন ধর্ষক নিজেদের নির্দোষ দাবি করবে আদালত, তাহোলে চার সাক্ষীর অভাবে সাত জন ধর্ষক রক্ষা পাবে এবং ওই নির্যাতিতা মহিলা শাস্তি পাবে যদি বিচারটা পাকিস্তান বা সৌদি আরবের মত দেশ গুলোতে হয়। উল্লেখ্য ডিএনএ টেস্ট, ভিডিও কোন কাজে আসবে না ঐ আদালত। একমাত্র গ্রহন যোগ্য আলামত চার জন মুসলমান ন্যায় পরায়ন পুরুষের চক্ষুস সাক্ষ্য।
তাহোলে বাংলাদেশের ঘটনা থেকেই বুঝতে পারছেন পাকিস্থান সহ মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোতে ধর্ষণের কোন রিপোর্ট হয় না। তাই পশ্চিমা দেশ গুলোর রিপোর্টেড পরিসংখ্যানকে ভিত্তি করে নারীর পোষাক ধর্ষণের মূল কারন দাবি করা অবাস্তবিক দাবি।
তাহোলে দেখা যাচ্ছে, নারীর পোষাকের কারনে ধর্ষন হয় এবং এর পক্ষে যারা ধর্ষনের পরিসংখ্যানটা রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করেন, তাদের এই দাবি মোটেও ধোপে টিকে না। তাদের উচিৎ আরো তত্ত্য সম্পন্ন প্রমাণ পেশ করার।
পরিশেষে একটা কথা বোলতে যে সমস্ত পশ্চিমা দেশে বহু সংখক ইমিগ্রান্ট বাস করে ওই সমস্ত দেশের ধর্ষণের হার বেশি, তারা যদি ওই সমস্ত মাইগ্রেন্ডদের বের করে দেয়, তখন দেখা যাবে ধর্ষণের মাত্রা অনেক কমে গেছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৮:৩৬