বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট থেকে গতকাল রায় দিয়েছে যে নারীরা কাজী বা নিকাহ রেজিস্টারার এর কাজ করতে পারবেনা।
এর পিছনে কারন দেখিয়েছেন যে নারীরা মাসের নিদৃষ্ট একটা সময় মাসিকের কারনে অপবিত্র থাকে। আর যেহেতু বিবাহ একটি ধর্মীয় পবিত্র কাজ সেহেতু এই অপবিত্র অবস্থায় সেই পবিত্র কাজ করতে পারবেনা।
তাহলে প্রশ্ন হলো যে, ফ্রান্সের দুইটি মসজিদে নারী ইমামে নামাজ পড়ায়।
ডেনমার্কের মত যায়গায়ও নারী ইমামকে নামাজের নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় তাহলে তারা কিভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে?
নিকাহ রেজিষ্ট্রি করাটা কি নামাজের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
তারা সেই অবস্থাতেও মসজিদে নামাজের নেতৃত্ব দিতে পারলে আমাদের দেশে নিকাহ রেজিস্টার হতে পারবেনা কেন?
মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র গ্রন্থ হচ্ছে কুরান।
মহিলা মাদ্রাসায় পড়ুয়া মেয়েদের যখন মাসিক শুরু হয় তখন নিশ্চয়ই তাদেরকে কুরান পড়া হাদীস বা আরবী পড়া বন্ধ রাখেনা, চলমান থাকে। কিংবা তাদেরকে প্রতিমাসের নিদৃষ্ট সেই সময়ে মাদ্রাসা থেকে ছুটিও দেওয়া হয়না সেসব গ্রন্থ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকার জন্য।
তাহলে তখন কি সেসব গ্রন্থ অপবিত্র হয়ে যায়না?
আপনার মা বোন কন্যা স্ত্রীদের মাসিকের সময়ে কি তাদেরকে পরিবার, সংসারের যাবতীয় কাজকর্ম থেকে দূরে রাখেন?
-নিশ্চয়ই নয়।
তারা সেই অবস্থাতাতেই রান্নাবান্না করে এবং আপনাদের মত লোকেরা সেই খাবার খেয়েই বড় হয়।
তাহলে তাদের সেই অপবিত্রবস্থায় রান্নাবান্না করার কারনে নিশ্চয়ই সেই খাবারও অপবিত্র হয়ে যাওয়ার কথা।
তাহলে সেই অপবিত্র খাবার কিভাবে খান??
পরিশেষে বলতে চাই যে , মায়েদের যেই মাসিকের কারনেই এই জীবসত্বা টিকে আছে, যেই মাসিকের কারনেই আমরা পৃথিবীর মুখ দেখার সুযোগ পেয়েছি সেই মায়েদের মাসিক কিভাবে অপবিত্র হতে পারে?
সেই মাসিক ই যদি অপবিত্র হয়ে থাকে তাহলে যেই অপবিত্র বস্তু হতে আপনার জন্ম হয়েছে /সৃষ্টি হয়েছে সেই আপনি এখন নিজেকে কিভাবে পবিত্র দাবী করছেন?
এটাই হচ্ছে আমাদের দেশের এবং পশ্চিমা দেশগুলোর মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য।
এটাই হচ্ছে আমাদের এবং তাদের চিন্তাধারার পার্থক্য।
আর এই পার্থক্যের কারনেই তারা মহাকাশে দাপিয়ে বেড়ায়, আর আমরা চাদের মধ্যে সাইদীকে পাঠাই।
এই দৃষ্টিভঙির কারনেই আজ তারা বিশ্বের ধনী এবং সভ্য দেশের তালিকায় থাকে, আর আমরা অশান্তি আর দুর্নীতির শীর্ষে অবস্থান করি।
- সংগ্রহকৃত
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ ভোর ৫:৩৮