কিছু দিন আগে উপরের হাদিসটি একজনে পোস্টে মন্তব্য হিসাবে পোস্ট করেন একজন ব্লগার , দাবি করেন ইসলামের আগের যুগে পৈত্রিক সম্পত্তি হতে পু্ত্র এবং কণ্যা সমান সম্পত্তি পেত কিন্তু ইসলাম এসে পু্ত্রকে কণ্যার দ্বিগুণ দেওয়ার বিধান করা হয় । এই হাদিসটার ভিত্তিতে ঐ দাবিটার সঠিক জবাব দিতে না পেরে -- দেওবন্দি অনুসারি ঐ ব্লগ লেখক অকথ্য ভাষায় ঐ ব্লগারকে গালাগালি করে এবং বিনা কারনে আমাকে গালাগালি করা হয় যদি ও আমি কোন মন্তব্য করিনি । পরে ঐ পোস্ট দাতা ঐ মন্তব্যটি ডিলিট করে দেয় ।
আমি এই হাদিসটির পরিপ্রেক্ষিতে উঠে আসা দাবির কোরান ভিত্তিক জবাব দিতে চাই। যদি ধরে নি ইসলাম পূর্ব সময়ে পুত্র কণ্যা সমান পৈত্রিক সম্পত্তি পেত --- তাহোলে কোরান কিন্তু একটি যুক্তি সংগত পরিস্থিতি ছাড়া পু্ত্র কণ্যাকে সমান সম্পত্তি দেয় । এই বিষয়ে আমি শরিয়া আইণ গবেষক জনাব হাসান মাহমুদের লিখা থেকে উল্লেখ করছি ।
ইসলামে নারী-অধিকার ও “সুস্পষ্ট নির্দেশ”
লিংকে দেওয়া হোল -- ঐ লিংকে গিয়ে -- এই চ্যাপ্টারটা খুলতে হবে --- ইসলামে নারী-অধিকার ও “সুস্পষ্ট নির্দেশ”
Click here
শারিয়াপন্থীরা সর্বদাই বলেন আয়াতের পটভূমি থেকে নির্দেশ নিতে। কথাটা ঠিক, কারণ কোরাণের কি কি নির্দেশ তখনকার জন্য আর কি কি নির্দেশ শাশ্বত তা পটভূমি থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু তাঁরা নারীর ওপরে অত্যাচার করার জন্য ঐ পটভূমিই লঙ্ঘন করেন। উত্তরাধিকারের বেলায়ও কথাটা সত্যি। সুরা নিসা আয়াত ১১ ও ১৭৬-তে নারীর অর্ধেক উত্তরাধিকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশ আছে। আয়াত ১৭৬- এর পটভূমি পাওয়া যায়নি, কেউ জানালে বাধিত হব। আয়াত ১১ নাজিল হয়েছিল এক বিশেষ পটভূমিতে। আউস বিন্ সাবেত নামে এক ধনী আনসারের মৃত্যু হলে তখনকার আর্থ-সামাজিক ঐতিহ্য অনুযায়ী আউসের চাচাতো ভাই এসে তার স্ত্রী, দুই বালেগ মেয়ে ও এক নাবালেগ ছেলেকে বঞ্চিত ক’রে সব সম্পত্তি গ্রাস ক’রে ফেলে (কোরাণের বাংলা অনুবাদ − মুহিউদ্দিন খান, পৃষ্ঠা ২৩৪, এবং ডঃ মুহাম্মদ হামিদুলাহ, − দ্য মুসলিম উইমেন)। কোরাণ সেই নাবালেগ পুত্রের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য বালেগ বোনের দ্বিগুণ সম্পত্তি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। অর্থাৎ এই আয়াত শাশ্বত নয় বরং তাৎক্ষণিক বিশেষ পরিস্থিতির সমাধান। আজ যদি কোরাণ মেনে ঐ আয়াত প্রয়োগ করতে হয় তবে শুধুমাত্র নাবালেগ পুত্র এবং বালেগ বোনদের ক্ষেত্রেই সেটা প্রয়োগ করা যেতে পারে। সেই বিশেষ পরিস্থিতি না হলে ঐ সুরা নিসা আয়াত ১২ মোতাবেকই নর-নারীর সমান উত্তরাধিকার হতেই হবে। সেখানে মৃতের ভাই-বোনের সমান উত্তরাধিকারের যে নির্দেশ দেয়া আছে সেটা কোথায় গেল ? মৃতের ভাই-বোন সমান পেলে তার ছেলেমেয়েরা অবশ্যই সমান পাবে।
---------
কেবল মাত্র নাবালক সন্তান সাবালক সন্তানের দ্বিগুণ সম্পত্তি পাবে যদি পটভূমি সহ সুরা নিসার আয়াত ১১ এবং ১২ কে বিশ্লেষন করা হয় ।
তাই ইসলামের পূর্বে যদি পু্ত্র কণ্যাকে সম্পত্তির সমান অংশ দেওয়া হয়ে ও থাকে তাহোলে ইসলাম ও বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া পু্ত্র কণ্যাকে সমান অংশই প্রদান করে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:০৫