নীল আকাশ যেখানে পানির সঙ্গে খেলা করে, সাদা মেঘ যেখানে পাহাড়ের কোলে ঘুমায়, গাছের সারি যেখানে প্রতিনিয়ত সবুজ পানিতে গোসল করে, আর পানির নিচে যেন রঙিন বনের বসতি। সূর্যমামা আগে এখানে ওঠে, তারপর হাসে; তাড়াহুড়ো করে চাঁদ এসে জলের আয়নায় তার রূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে থমকে দাঁড়ায়; ঢেউয়ের কোলে দুলতে দুলতে ঘুমিয়ে পড়ে তারার সারি। ভাবছেন কাল্পনিক কিছু বলছি? না, একদমই না - এই জায়গাটার নাম হল টাঙ্গুয়া হাওর�। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে ঘোষিত।
সুনামগঞ্জের সাহেববাজার ঘাট থেকে ইঞ্জিন নৌকা চারপাশের চৌহদ্দি ছাড়ানো সবুজ দেখে আপনি ভুল করে ভেবে বসতে পারেন যে নিউজিল্যান্ডের কোথাও আছেন। সুরমা নদীর ওপারেই মেঘালয়ের পাহাড় মেঘ কোলে নিয়ে অতিথির জন্য বসে আছে। চোখের সামনে ঠিক যেন নিউজিল্যান্ডের ডেইরি ফার্মের গরুগুলো ঘাস খাচ্ছে। তাদের পেছনে বাঁক খেয়ে উঠে গেছে পাহাড়ের দেয়াল। যত দূর চোখ যায়, সবুজের মখমল। নিচে নীলচে পানি, পানির নিচে শেওলার অস্তিত্ব পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। নলখাগড়ার ডগা ভেসে ভেসে ঢেউয়ের দোলায় নাচছে হাওরজুড়ে।
যাওয়ার পথে আনোয়ারপুর গ্রামে পড়ল পাথরের স্তূপ। এখানে পাথর ভাঙা হয়, হলদে বালির বিছানায় শুয়ে শুয়ে পাথরগুলো রোদ পোহাচ্ছে। যতই সময় যাচ্ছে, ধীরে ধীরে রং বদলাচ্ছে পানির। নীল থেকে কালো, কালো থেকে সবুজ, আবার গাঢ় নীল। এভাবে প্রায় ছয় ঘন্টা পর টাঙ্গুয়া হাওরে পৌঁছা যায়।
বর্ষা মৌসুমে গোটা টাঙ্গুয়াই পরিণত হয় ২০-২৫ ফুট জলের এক স্বচ্ছ অ্যাকুরিয়ামে। হঠাৎ করে কেউ দেখলে নির্দ্বিধায় বঙ্গোপসাগর ভেবে ভুল করবে। এই সেই টাঙ্গুয়া হাওর, যেখানে জল আকাশের রং চুরি করে নীলের ভুবন সাজিয়েছে। মেঘমালা অনেক নিচ দিয়ে উড়ে যায়, দূর থেকে দেখে মনে হবে পানিতে বুঝি তুলোর ভেলা ভাসছে। সীমাহীন এই হাওরে বর্ষাকালে চলে বিশাল ঢেউয়ের রাজত্ব। পানি এতই পরিষ্কার যে ২০ ফুট নিচের ঘাস, গাছ, লতাগুলো মনে হয় অ্যাকুরিয়ামে সাজানো। অচেনা এক পৃথিবী মনে হয় যখন দেখি কোনো রকম ভেলা বা জাহাজ ছাড়াই থইথই পানিতে পইপই ভাসছে ছোট ছোট গ্রাম।
পুরো হাওর গাছের সীমানা দিয়ে ঘেরা। সেই গাছও মাথাটুকু বাদে ডুবে আছে নীলের সমুদ্রে। এখানে বাতাস কখনো ক্লান্ত হয় না, এখানে আকাশের নিচে সাদা মেঘের বুক চিরে দাঁড়িয়ে আছে কচি পাহাড়, আর সেই পাহাড়ের কোলে নাচে উদ্দাম, উত্তাল, দুরন্ত সবুজ জ্যাকেট পরা নীল পানি, হাওরের পানি।
কীভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ - শ্যামলী পরিবহনে ৪০০ টাকা ভাড়া নেবে। শ্যামলী আর ইউনিক ছাড়া অন্য আরোও বাস যায়।তবে ভ্রমণ তেমন আরামদায়ক হবে না। সুনামগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে সাহেববাজার ঘাট পর্যন্ত রিকশায়। সেখান থেকে টাঙ্গুয়া হাওরের উদ্দেশ্যে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া করবেন, প্রতিদিনের জন্য ভাড়া নেবে তিন হাজার টাকা। হাওরে যেতে পাঁচ-ছয় ঘণ্টার মতো সময় লাগবে। দু-তিন দিনের জন্য নৌকা ভাড়া করলে প্রয়োজনীয় বাজারসদাই করে নেবেন। হাওর ঘুরে রাতটা তাহিরপুর থানার ডাকবাংলোতে থাকতে পারেন।
তাহিরপুরে রাতে থেকে পরদিন ট্যাকেরহাট, বারিক্কাটিলাসহ(বারেকের টিলা) জাদুকাটা নদী ঘুরে সুনামগঞ্জ চলে আসতে পারেন। সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে সকাল , দুপুর ও রাতে বাস ছাড়ে।
সঙ্গে তেমন কিছুই নিতে হবে না, তবে লাইফ জ্যাকেট থাকলে নিয়ে নিতে পারেন। এটা বর্ষাকালে যাওয়ার রাস্তা। শীতকালে নৌকা চলবে না, সে ক্ষেত্রে আপনাকে সুরমা নদী পার হয়ে মণিপুরিঘাট থেকে মোটরসাইকেলে শ্রীপুর বাজারে অথবা ডাম্পের বাজারে গিয়ে টাঙ্গুয়া হাওরে যেতে হবে।
আলোচিত ব্লগ
ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...
হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন
'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?
হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?
হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!
হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।