এ লেখায় আমি আমার জীবনের ছোট ছোট তিনটি ঘটনা শেয়ার করবো।
ঘটনা ১।
২০১৮ 'র ডিসেম্বর। দীর্ঘ ২৫ বছর সরকারি কলোনি, আর ৩ বছর ঢাকা শহরে এদিক সেদিক ভাড়া থাকার পর, নিজেদের বাড়িতে এসে মাত্র উঠেছি তখন, ঢাকার প্রান্তে এক রেসিডেনশিয়াল এরিয়ায়। একমাসও পুরা হয় নি তখন বাড়িতে পদার্পণের। অল্প কিছুদিনের অভিজ্ঞতায় যেটা বুঝেছি, শুক্রবারদিন আমিন মোহাম্মদ হাউজিং এর মালিকানাধীন এই রেসিডেনশিয়াল এরিয়ায় প্রচুর ভিড় হয়। মানুষ ঘুরতে আসে। ছবি তোলে। হইহল্লা করে। অনেকটা ৩০০ ফিটের মতোই। খাবারের দোকান নেই তত যদিও।
তো ২০১৮র ডিসেম্বর মাসের এক শুক্রবার, সাতসকালে আমাদের পুরো পরিবারের সবার ঘুম ভাঙলো বাড়ির সামনে প্রবল হইচই, হাউকাউ, অট্টহাসির হুল্লোড়ে। ঘটনা কি, দেখতে আমি দ্রুত বারান্দায় গেলাম চোখ কচলাতে কচলাতে। নীচে তাকিয়ে দেখি, আমাদের গেটের সামনে, বাড়িকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে ১০ থেকে ১৫ জন টিনএজ ছেলেপেলের একটা দল ক্যামেরা আর ট্রাইপড দিয়ে ভিডিও শুট করছে। পেছনে একটা পোর্টেবল সাউন্ডবক্সে জোরে ডায়লগ - মিউজিক মিলে কিছু একটা বাজছে। তারা টিকটকারদের গ্রুপ ছিল সম্ভবত।
এরমধ্যেই খেয়াল করলাম, আমার বাবা নীচে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলা শুরু করেছেন। বাবা ক্ষুব্ধ। হইহল্লার কারণে তো বটেই, বাসার সামনে গত একমাস ধরে বাবা অতিযত্নে যে ফুলগাছের যে চারাগুলো লাগিয়েছেন, ছেলেগুলো দলবেঁধে তার মধ্যে ঢুকে পরে পাড়িয়ে মাড়িয়ে সব মাটির সঙ্গে শুইয়ে দিয়েছে।
বাবা প্রশ্ন করলেন - তোমরা কারা? কি করো?
অবশ্যই বাবার এই প্রশ্নের টোন ক্ষুব্ধ ছিল। দারোয়ান বাসায় তখনও রাখি নি আমরা। বাড়ি সংক্রান্ত দশদিকের ঝামেলা একা সামাল দেয়া লাগে, তারুপর ছুটির দিন সকাল সকাল এই উৎপাত।
ঐ গ্রুপের মধ্য হতে লম্বাচওড়া, এবং উচ্চকণ্ঠের একটা ছেলে এগিয়ে এসে বলল,
- 'আমরা কি করি দিয়া কি করবেন? বাড়িওয়ালা হইসেন দেইখা এতো দেমাগ দেখায়েন না!'
সঙ্গে সঙ্গে ওর দলের সবাই সম্মিলিত কণ্ঠে এই হাউকাউ শুরু করলো যে - বাড়িওয়ালা হইসে বলে আমার বাবার নাকি অহঙ্কার হইসে বেশী! মানুষরে মানুষই মনে করে না!
বাবা হতভম্ব। আমিও ততক্ষণে নীচে নেমে এসে বাবার পাশে দাঁড়িয়ে অবস্থা দেখে, আর্গুমেন্ট কোন লাইনে এগুচ্ছে দেখে একদম বাকরুদ্ধ!
একই সঙ্গে বাবার অতিশখের ছোট চারাগাছগুলো মাটির সঙ্গে মেশানো একদম।
ঝগড়া উপভোগ করায় বাঙ্গালীর উৎসাহ অপরিসীম। এরমধ্যে সেই সাতসকালে দেখা গেলো উৎসাহী বেশ কয়েকজন পথচারী দাঁড়িয়ে গেছে আমাদের ঘিরে। তাদের একজনকেও চিনি না। বেশভুষায় তাদের কারো ব্যাকগ্রাউন্ড বোঝা যাচ্ছে না। তারাও আমাদের উপদেশ দিতে থাকলেন - মানুষের বিনয়ী হওয়া উচিৎ। বাড়িওয়ালা হইসি বলে দেমাগ দেখানো ঠিক না আমাদের। তাও এই বাচ্চাকাচ্চাদের।
একটা সাইকোলোজিক্যাল ফ্যাক্ট খেয়াল করে দেখেন। একটা বড় কেওয়াজে যখন আপনি একা কথা বলছেন, আর অপরপক্ষ আপনাকে এমন একটা ব্লেইমে ফেলে দিয়েছে, যার সঙ্গে আপনার আদৌ কোন সংশ্রব নেই, তখন আপনার প্রথম দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায় আপনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা অভিযোগ খণ্ডন। কিন্তু, বিচার করবে কে?
রায় কে দেবে যে আপনি আদৌ বাড়িওয়ালার অহংকার দেখাচ্ছেন, নাকি একটা অশালীন - অভব্য কাজের প্রতিবাদ সাধারণ মানুষ হিসেবে করছেন?
যদি রায় দেয়ার কেউ না থাকে, বা দেখা গেলো আপনার বিরুদ্ধে যারা মিথ্যে অভিযোগ দায় করছে, তাদেরকেই আপনার উপর রুজু করা ঘৃণ্য মিথ্যা অভিযোগ খণ্ডন করে বোঝাতে লাগে, একজন আত্মমর্যাদাবান ব্যক্তি হিসেবে আপনার আর ইচ্ছে থাকবে এমন অবস্থায় কোন কথা বলার?
আমি কাউকে কিছু বলতে না দিয়ে আমার ক্ষুব্ধ বাবাকে ধরে উপরে নিয়ে গেলাম। উপরে উঠে এরিয়ার আনসার কমান্ডারকে ফোন করে এই গ্যাংটাকে বাসার সামনে থেকে সরাতে সরাতে সময় লাগলো প্রায় আরও আধাঘণ্টা।
এই ঘটনায় আরও কিছু বিবেচ্য বিষয় আছে।
বাংলাদেশের মতো একটা দেশে মানুষ বাড়ি - গাড়ি নানাভাবে, নানা উপায়ে করতে পারে। কিন্তু একজন মানুষ যিনি আজীবন একটা চাকরী সৎভাবে করে গিয়ে, তার পেনশনের টাকা দিয়ে একটা বাড়ি তুলেছেন, তার আত্মমর্যাদাবোধ, আর যে বা যারা অসৎপথে, মানুষের গলায় পাড়া দিয়ে, অন্যের হোক নষ্ট করে টাকা উপার্জন করে - তার আত্মমর্যাদাবোধ কি এক হওয়ার কথা?
আমার বাবা - মা , বা মূলত মা, যিনি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সারাজীবন কাজ করে সঞ্চয়ের টাকা থেকে যে বাড়িটি তৈরি করেছেন, তার পেছনে তার একটা অহং কাজ করা কি অস্বাভাবিক? যে অহং বা আত্মমর্যাদাবোধ সৎ উপার্জনের সূত্রে তৈরি?
আমাদের একই এলাকায় এমন কিছু বাড়ির মালিক রয়েছেন, যারা সরকারি পেশাজীবী, এবং এমন পোস্টে কাজ করেছেন, যার বেতনে সংসার চালাতে হিমসিম খেয়ে ওঠার কথা। অথচ, উপরি পাওনার জোরে তাদের ঢাকা ও ঢাকার বাইরে একাধিক বাড়ি আছে। এমন খবর তো পেপারে টেলিভিশনেও আসে মাঝেমাঝেই। দুদক যাদের জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনে।
আমার মা - বাবা তো তা করেন নি। দুর্নীতি করেন নি। ঘুষ খান নি।
এখন, সারাজীবন সততা নিংড়ে অর্থ উপার্জন জমিয়ে বাড়ি তৈরি করা একটি মানুষকে যদি রাস্তার কিছু ছেলেপেলে বোঝাতে আসে, বাড়িওয়ালার আচরণ কেমন হওয়া উচিৎ - তাতে তার ক্ষুব্ধ , ক্রুদ্ধ হওয়া অযৌক্তিক?
যারা আজীবন করাপশনের সঙ্গে জড়িত ছিল - আছে, তাদের পক্ষে আমি সততার অহং, বা সততার সূত্রে অর্জিত / তৈরি আত্মমর্যাদাবোধ বলতে যা বোঝাচ্ছি, তা হয়তো বোঝা সম্ভব না।
সেটা উহ্য থাকুক।
কিন্তু খেয়াল করে দেখুন, আমার বাবা কি বলেছিলেন, আর ঐ টিকটকারদের গ্রুপ সে আলোচনা কোন খাতে গড়িয়ে দিয়েছিল।
আমার বাবা স্রেফ জিজ্ঞেস করেছিল তোমরা কে, কি করো।
সাতসকালে দলবেঁধে যে আমার বাড়ির সামনে হল্লা করছে, তাকে এতটুকু প্রশ্ন করার রাইট নেই আমার - আমাদের?
এই আলোচনাটাকে তাদের একজন প্রথমে প্রবাহিত করলো এই খাতে যে, আমার বাবা নাকি বাড়িওয়ালাসুলভ গরম দেখাচ্ছেন।
তারপর তারা দলবদ্ধভাবে চিৎকার করে এই মিথ্যেটা প্রতিষ্ঠা করলো।
তারপর, ঐ গ্রুপটাকে বোঝানোর বদলে রাস্তার লোকজন উল্টো আমার বাবাকে বোঝানো শুরু করলো, বাড়িওয়ালার আচরণ কেমন হতে হবে।
এদিকে -
প্রথমত, কোন ভদ্রঘরের সন্তানের পক্ষে এটা সম্ভবই না, সাতসকালে, বিনা অনুমতিতে আর একজন মানুষের বাড়ির সামনে গিয়ে চিৎকার চ্যাঁচামেচি করা, ভিডিও করা।
দ্বিতীয়ত, যদি তাদের কিছু ভিডিও করা দরকার পড়েও, তারা অনুমতি চেয়ে নিয়ে ভদ্রভাবে তা করতে পারতো।
তৃতীয়ত, যদি তারা এটা চিন্তা করতো যে অনুমতি চাওয়ায় আলাদা হ্যাপা, এবং ভিডিওটা বানানো তাদের গুরুত্বপূর্ণ, সেক্ষেত্রে হইহল্লা না করেই, আমাদের আবাসস্থল, আমাদের ঘুম, আমার বাবার শখের বাগানের ক্ষয়ক্ষতি না করে চুপচাপ ভিডিও করে চলে যেতে পারতো।
এই যে প্র্যাকটিস, যার ভুক্তভুগি হয়েছিলাম আমরা সেদিন, একে বলে ভিক্টিম কার্ড প্লে করা।
আপনি প্রথমে কাউকে খুঁচিয়ে উত্যক্ত করে, বিরক্ত করে তার মুখ থেকে ক্ষুব্ধ প্রত্যুত্তর বের করে আনবেন। তারপর, আপনি দল জুটিয়ে চিৎকার করে উক্ত ব্যক্তির ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াকেই চারপাশে বড় করে উপস্থাপন করবেন। এদিকে আগে যে চিপা মাইরগুলি আপনি দিয়েছেন, সে সম্পর্কেতো জনতা ওয়াকেফহাল নয়, ফলে আপনার দোষ থাকবেই না। আর জনতা বলতে যদি শুধু আপনার পক্ষের লোকজনই থাকে, তাহলে আপনার দোষ কোন দোষই না। সব দোষ সেই লোকটার, যে আপনার চিপা মাইর খেয়ে খেয়ে তিতিবিরক্ত হয়ে মুখ খুললেন অবশেষে।
ঘটনা ২।
এই ঘটনা গতবছরের অগাস্ট মাসের।
করোনা লকডাউন শেষে আমাদের এলাকায় আবার দালানকোঠার কন্সট্র্যাকশনের কাজ শুরু হয়েছে।
একদিন বেলা বারোটা বাজে, আমি অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছি আমার রুমে, আমার স্ত্রী ক্যাজুয়ালি খাটে আধশোয়া, এমন সময় অত্যন্ত অবাক হয়ে খেয়াল করলাম, আমাদের বাউন্ডারির ফলস ছাদে ২ - ৩ টা ছেলে হাঁটাহাঁটি করছে।
আপনারা ঘটনাটি কল্পনা করতে পারছেন?
আমি অত্যন্ত বিস্ময়াভিভূত, বিরক্ত, ও ক্ষুব্ধ হয়ে ক্লাস থেকে বিরতি নিয়ে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে দেখলাম, তারা আমাদের বাউন্ডারির দেয়ালে কখন যেনো কিছু গজাল পুঁতে তাতে কিছু বৈদ্যুতিক তার হয় জড়াচ্ছে, বা খুলছে। আমি তাদের তখুনি থামতে বলে দৌড়ে নীচে নামি।
নেমে গিয়ে দেখি, আমাদের এক প্লট গ্যাপে আরেকটা দালান উঠছে। সে দালানের কন্ট্রাক্টর, আর তার দুই তিন কর্মচারী পাশে দাঁড়ানো।
আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম তারা কি করছেন আমার বাড়ির সামনে। দেয়ালের উপর ঐ ছেলেগুলোই বা কে।
উত্তরে কন্ট্রাক্টর আমাকে বলল - তারা বিদ্যুতের তার তাদের সুবিধামতো টানার জন্যে আমাদের দেয়ালের উপরে গজাল পুঁতে তাতে তার জড়িয়েছে, কারো সঙ্গে কথা না বলেই। কিছুক্ষণ পর আমার বাবার সঙ্গে তাদের ফোনে কথা হলে, বাবা আমাদের দালানের স্থাপত্যে কিছু না গেঁড়ে বা পুঁতে তাদের অনুরোধ করেন মাটিতে বাঁশ বা অন্যকিছুর অবলম্বন করে তার পাস করিয়ে নেয়ার। ফলশ্রুতিতে তার টিমের দুটো ছেলে এখন আমাদের বাউন্ডারির ফলস ছাদে।
আমি তাকে প্রশ্ন করলাম, এই যে ছেলেগুলো আমাদের ফলস ছাদে উঠে গেছে, তারা কার পারমিশন নিয়ে উঠেছে আমাদের দালানে?
এটা তো প্রাইভেসি কন্সারন। মানুষের প্রাইভেসি নষ্ট করা। আমাদের ফলস ছাদে দাঁড়ানো যে কেউ উঁকি দিলেই আমার রুমের ভেতর সব স্পষ্ট দেখা যায়। এভাবে কোনো চোর ডাকাত উঠে গিয়ে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি খুব সহজে করতে পারে।
উক্ত কন্ট্রাক্টর আমাকে উত্তর দিলো - 'হ, অখন আপনাদের ভালো চাইয়া দেয়ালে তার খুইলা আনতাছি, এইটা আমার অপরাধ হইচে!'
ওর সাঙ্গপাঙ্গরাও জোর গলায় দাবী করতে লাগলো, তারা তো আমাদের উপকারই করছে, আমাদের দালানকে ব্যবহার করছে না। এতে আমার আপত্তির কি আছে? আমি কেন কথা বাড়াচ্ছি?
খেয়াল করে দেখুন -
প্রথমত, অনুমতি ছাড়া কারো স্থাপনায় গজাল ঠুকে অপরাধটা তারাই করলো।
দ্বিতীয়ত, যখন পুনরায় অনুমতি ছাড়া আমাদের বাড়ির ফলসছাদে, আমার রুমের জানালার পাশে, যে রুমে আমি আর আমার স্ত্রী অবস্থান করছি, তাতে ঘুরঘুর করতে করতে গজাল - তার সরাচ্ছে, তখন আমি তাদের গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, এই দ্বিতীয়বারই বা তারা কার অনুমতি নিয়ে ফলস ছাদে উঠে গেল, তখন তারা আমার কাঁধেই পুরো দোষ চাপিয়ে দিলো যে তারা গজাল আর তার খুলে নিয়ে আমাদের উপকারই করছে। আমি তাতে আপত্তি জানাচ্ছি কেন?
আমি পুরা বেকুব!
ভিক্টিম কার্ড প্লে করার দ্বিতীয় উদাহরণ।
উদাহরণ আরও আছে, দিতে চাচ্ছি না এ মুহূর্তে।
ঘটনা ৩।
বাংলায় প্রবাদটি 'দশচক্রে ভগবান ভূত'। আমার এ ঘটনায় 'দশচক্রে ভূত ভগবান' ।
ঢাবির ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র থাকা অবস্থায় পুরো ডিপার্টমেন্ট জুড়ে একটা ড্রামা কম্পিটিশন হয়। আমি তাতে নিজে একটি নাটক লিখি, ডিরেকশন দিই, এবং তৃতীয় বর্ষ - চতুর্থ বর্ষ - মাস্টার্সের ব্যাচকে পরাজিত করে নিজের ব্যাচকে চ্যাম্পিয়ন করি।
আমার ড্রামার নাম ছিল সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে। ডঃ হুমায়ূন আজাদ সাহেবের কবিতার দ্যোতনা ধারণকৃত নাটকে আমি বিখ্যাত এলিজাবেথান ড্রামাটিস্ট ক্রিস্টোফার মারলো'র অমর চরিত্র ডঃ ফাউস্টাস (সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের উচ্চারণ অনুযায়ী), এবং আরেক এলিজাবেথান ড্রামাটিস্ট বেন জনসনের অমর সৃষ্টি ভলপোনেকে বাংলাদেশের কনট্যাক্সটে এনে ছেড়ে দিই, এবং একের পর এক ঘটনার ঘনঘটায় তৎকালীন বাংলাদেশের সামাজিক - রাজনৈতিক অসঙ্গতিগুলো তুলে আনি। প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন বিখ্যাত কবি, এবং ইংরেজি বিভাগে আমার অকালপ্রয়াত শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ডঃ খোন্দকার আশরাফ হোসেন।
এই প্রতিযোগিতার মাস চারেক পর, আমরা যখন তৃতীয় বর্ষে উঠি, আমাদের ব্যাচের বর্ষপূর্তি উৎযাপন অনুষ্ঠানে আমি পুনরায় একটি নাটক লিখে তাতে ডিরেকশন দিতে চাই। কমিটির মিটিং এ প্রাথমিকভাবে এ প্রস্তাব পাশ হয়। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে পিসিতে বসেই দেখি, আমাদের ব্যাচের ফেসবুক গ্রুপে নতুন পোস্ট - অনুষ্ঠান উৎযাপন কমিটি থেকে আমার নাটকটি মঞ্চস্থ হবে না, এমন নতুন সিদ্ধান্ত এসেছে। মাত্র চার ঘণ্টার ব্যবধানে এই ঘটনার ঘূর্ণিপাকে আমি পুরো অবাক! কমিটিতে থাকা আমার ঘনিষ্ঠ দু' একজনকে ফোন দিয়ে জানা গেলো, আমার ব্যাচের হলে থাকা স্টুডেন্টদের একটা বড় দল আমার নাটক মঞ্চস্থ করার ব্যাপারে ভেটো দিয়েছে। বলেছে, এই নাটক মঞ্চস্থ হলে ওরা প্রোগ্রাম বয়কট করবে।
আমি নিজে বাসা থেকে গিয়ে ক্লাস করায়, হলনিবাসী ক্লাসমেটদের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক কখনোই ছিল না। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ বছরের হল জীবনে হলনিবাসী ছাত্ররা একে অপরের প্রায় পারিবারিক সদস্য হয়ে যাওয়ার কারণে ডিপার্টমেন্টাল পলিটিক্সে তারা একাট্টা হয়ে দাঁড়ালো।
যারা আমার নাটক মঞ্চস্থ করার বিরুদ্ধে দাঁড়ালো, এই গ্রুপটাই সিন্ডিকেট পাকিয়ে চারমাস আগে ড্রামা কম্পিটিশনের মাঝপথে সরে গিয়েছিল। কারণ, তারা চাচ্ছিল নিজেরাই একটা নাটক বানিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে, কিন্তু সময় স্বল্পতার মধ্যে তারা স্ক্রিপ্ট জমা দিতে পারে নি বলে আল্টিমেটলি আমার স্ক্রিপ্টই নির্বাচিত হয়। হিংসা থেকেই মূলত, একে একে ওরা আমার রিহার্সালের মাঝপথ থেকে সরে গিয়ে আমার নাটকের তেরোটা বাজানোর চেষ্টা করে। ব্যাচের মধ্যে ছড়ানো শুরু করে, আমি ব্যাচের মানসম্মান ডুবাবো আমার নাটক দিয়ে। ফলশ্রুতিতে আমি আর নতুন অভিনেতা খুঁজে পাই না। আমার নিজের একার তিনটি ভিন্ন রোলে অভিনয় করা লাগে।
এই অভিযোগটাই ওরা পরে দাঁড় করায়, আমি নাকি বাকিদের কাজ করার সুযোগ দিই না। গত নাটকেও নিজে তিনটা রোল একা করেছি।
অথচ সত্যি কথা হচ্ছে, আমার ডিরেকশন দেয়া ছাড়া একটা রোলেও অভিনয় করার কথা ছিল না।
ওরা একজন একজন করে সরে যায়, ফলশ্রুতিতে লোকের অভাবে আমার নিজেরই রোলগুলো করা লাগে। বাকি অভিনেতা - অভিনেত্রী যারা ছিল, তারা নিজেরাই একাধিক রোল মুখস্ত করার দায়িত্ব নিতে চায় নি।
এটাকে প্রচার করা হল আমার ফুটেজ খাওয়ার ইনটেনশন হিসেবে।
আমি আগের এক পোস্টে লিখেছিলাম, কেন আমি ব্যাখ্যা দিতে চাই না। এমন মিথ্যে কথা ছড়ায় যারা আমার নামে, আমি তাদের সামনে নিজেকে ব্যাখ্যা দিয়ে ছোট করবো? ওদেরকে দেবো আমার বিচার করবার ভার?
- - আগের কম্পিটিশনে আমার ডিরেকশনে যে আমার ব্যাচ চ্যাম্পিয়ন হল, সেটা আমার একার নয়, পুরো ব্যাচের বিজয় ছিল। গ্রুপ ওয়াইজ একটা ধন্যবাদ অন্তত আমার প্রাপ্ত ছিল। সেবার কেউ সেই কৃতজ্ঞতাটুকু আমাকে জানায় নি।
- - কৃতজ্ঞতাবোধ না থাকলেও, গত পারফর্মেন্সের যোগ্যতার বিবেচনাতেই আমাকে আরেকটা নাটক পরিচালনা করার সুযোগ তাদের দেয়া উচিৎ ছিল এ প্রোগ্রামে। তারা তাও আমাকে দেয় নি। গ্রুপ মিটিং এ আবারো ভোটাভুটির আয়োজন করে, যাতে বাদ পড়তে পড়তে কোনমতে বেঁচে গিয়ে আমার নাটক সিলেক্ট হয়।
- তারপর, সেদিন সন্ধ্যায়ই, আমার সঙ্গে কোন আলোচনা না করে, আমাকে কিছুই না জানিয়ে, ফোনে জানানোর ভদ্রতাটুকু না দেখিয়ে ১৬০ জনের ফেসবুক গ্রুপে সরাসরি অপমানজনকভাবে পোস্ট দিয়ে জানানো হয়, আমি চলে যাওয়ার পর ইন্টারনাল আরেকটি মিটিং এ আমার নাটক পরিচালনার সিদ্ধান্ত বাতিল হয়েছে।
আমি পোস্টের নীচে ছোট করে কমেন্ট লিখলাম -
"আই অ্যাম নট ওয়ার্কিং এনিমোর, উইথ আ বাঞ্চ অফ ফিলথি ইন্টেলেকচুয়ালস"।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলাম, উক্ত পোস্টের কমেন্ট বক্সে এই নিয়ে তুলকালাম চলছে।
ক্লাসে গিয়ে আমি জানতে পারি, আমি নাকি আমার ক্লাসমেটদের গণহারে বাস্টার্ডস বলে গালি দিয়েছি।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, কই দেখলে?
কয়েকজন বলল - অমুক অমুক বলেছে।
এই অমুক অমুক হচ্ছে আমার সেই ক্লাসমেটরা, যারা প্রতিযোগিতার সময় আমার নাটকের রিহার্সাল থেকে পলটি দিয়েছিল।
আমি বললাম - আমি তো ঐ কমিটির কয়েকজনকে উল্লেখ করে বলেছি ফিলথি ইন্টেলেকচুয়ালস, যার মানে নোংরা মস্তিষ্কের বুদ্ধিজীবী
(আমি ব্লগে যাই বলি, তাই দেখি বিখ্যাত হয়ে যায়। 'ওরে বাটপার' - এর পর, এই 'ফিলথি ইনটেলেকচুয়াল' ফ্রেইজটাও বিখ্যাত হবে আশা রাখি।)।
ওরা ঐ কমিটির একটি নির্দিষ্ট ছেলের নাম মেনশন করে বলে - অমুক বলেছে এইটা মানে বাস্টার্ডস।
ব্লগে কেউ কেউ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমদানি করেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র হিসেবে আমার নাকি অহংকার মাটিতে পা পড়ে না। অথচ খেয়াল করে দেখুন এরাও ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র, আমার ক্লাসমেট, যারা তৃতীয় বর্ষে উঠে যাওয়ার পরেও একটা ফ্রেইজের মানে গুগোল বা ডিকশনারীতে না দেখে, লোকমুখে শোনা, প্রচারিত হওয়া মিথ্যাকে সত্য বলে ধরে নেয়। ভূতকে ক্রমশ ভগবানে রুপান্তরিত করে তোলে।
কীভাবে আমি অহংকার করতে পারি, এমন ক্লাসমেট থাকা সত্যেও, ঢাবির ছাত্র হিসেবে?
কিছুক্ষণ পর আমার তৎকালীন প্রেমিকা এসে আমারে জানায়, আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার বদলে সে তার হলের ছাদ থেকে নীচে লাফ দিবে।
আমি তারে বলি যে অবশ্যই ছাদ থেকে ঝাঁপ দেয়ার বদলে আমার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখা ভালো। কিন্তু আমার অপরাধটা আমারে জানায়ে সব শেষ করলে ভালো হয়।
সে আমারে অত্যন্ত ক্ষুব্ধভাষায় জিজ্ঞেস করে, আমি কীভাবে পুরা ক্লাসরে বাস্টার্ডস বলে অভিহিত করার মত একটা গর্হিত কাজ করতে পারি!
আমি এর আর কোন জবাব না দিয়ে কলাভবন ত্যাগ করে টিএসসির স্বপনমামার দোকানে গিয়ে একটা বিড়ি ধরায়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকি।
যে ছেলেটা সেদিন ছড়িয়েছিল যে - 'ফিলথি ইন্টেলেকচুয়ালস' মানে 'বাস্টার্ড', সে, আর আমার তৎকালীন প্রেমিকা - দুইজনেই এখন বাংলাদেশের দুই প্রথিতযশা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টারি করে।
আমাকে অনেকে অভিযুক্ত করে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টারি করি বলেও নাকি আমার অনেক দেমাক! হালাল পয়সা উপার্জন করি - এ নিয়ে মনঃতুষ্টি আছে, অহংকার নাই। আর যুক্তিগ্রাহ্য উপায়ে যদি চিন্তা করি, আমার উপরের দুই ক্লাসমেট, উক্ত ছেলে, এবং আমার প্রাক্তন, এরাও যদি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মাস্টারি পেশায় থাকে, আমারে আপনারা বলেন, আমি শিক্ষক হিসেবেই বা কীভাবে অহংকার করতে পারি?
গল্পের ভেতর ছোট আরও দুটা গল্প বলি। ঐ ছেলেটা, যে ছড়ালো ফিলথি ইন্টেলেকচুয়াল মানে বাস্টার্ড, সে শুরু থেকেই আমারে আর্চ এনিমি মনে করে। প্রথম বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের রেজাল্টের আগে একদিন ভার্সিটির বাসে বসে দেখি, আমি আমার ব্যাচের ফেসবুক পেইজে পোস্ট দিসি - "আমি এই সেমিস্টারে ফার্স্ট হইসি! অন্য সবার রেজাল্টো জানি! তোমরা কে কে তোমাদের রেজাল্ট জানতে চাও, আমারে নক দাও!" মাস্টার্সে যখন পড়ি, ওর ঘনিষ্ঠ কিছু বন্ধুরা আমার সঙ্গে ততদিনে কিছুটা ক্যাজুয়াল হলে পরে জানায়, আমারে সাইজ করার জন্যে ফেইক আইডি থেকে এই পোস্ট ওর করা ছিল।
২০১৬ সালে ঐ ছেলেটা ঢাকার এক প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষক হিসেবে প্রবেশ করার পর ডালে লতায় পাতায় কীভাবে যেন একটা গল্প ফাঁদে ফেসবুকে - গায়ক তাহসানের নাকি তাদের ইউনিভার্সিটিতে একটা প্রোগ্রামে আসার কথা ছিল। কিন্তু টাকায় বনিবনা হয় নাই বলে তাহসান আসতে রাজি হয় নাই। কি খারাপ তাহসান! - এই মর্মের একটা স্ট্যাটাস লিখে, ঐ ক্লাসমেট আমার, যখন সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সে অবস্থায় পাবলিক করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়।
তাহসানের হেটারও তো কম না।
দাবানলের মধ্যে তাহসানের বদনাম সম্বলিত নানা কুৎসিত গালি ক্যাপশন সহকারে সেই স্ট্যাটাস বাংলাদেশের ফেসবুক অঙ্গন দখল করে।
তাহসান নিজে তার ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেইজ থেকে পরে একটা পোস্ট দিয়ে জানান - অভিযোগ মিথ্যা। উক্ত ইউনিভার্সিটি থেকে কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগই করে নি। এখনি সত্যাসত্য স্বীকার করে পোস্ট না দিলে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হবেন।
আমার গুণী ক্লাসমেট পরে দশগুণ ব্যাকল্যাশের শিকার হয়ে স্ট্যাটাস দিতে বাধ্য হয় - তার ছড়ানো তথ্য ভুল ছিল।
তাহসান নিজে আবার সেই পোস্ট নিজের অ্যাকাউন্টে শেয়ার করে।
যাই হোক, সেইদিনের ঘটনায় ফিরে আসি, যেদিন আমারে নিয়ে প্রচার হয়ে গেসিল, আমি নাকি আমার ব্যাচের ১৬০ জন ক্লাসমেটরে 'বাস্টার্ডস' বলসিলাম।
আমি মাথায় হাত দিয়ে টিএসসিতে বসে থাকা অবস্থায় আমারে ফোন করে ডিপার্টমেন্টে ডেকে আনে আমার পরিচিত কিছু ফ্রেন্ডস।
দেখলাম অবস্থা খারাপ, অনেক ছেলে পেলে, সবাই ক্ষুব্ধ। সবাই আমার বিচার চায়। আমি তাদের সবাইরে বাস্টার্ডস বলসি। হাউ ডেয়ার আই!
এমন সময় আমাদের তৎকালীন চেয়ারম্যান বের হয়ে আসেন তার রুম থেকে। আমাদের তার রুমে ডেকে নেন। দুইপক্ষের কথা শুনে যারা আমারে বঞ্চিত করা কয়েকজনরে 'ফিলথি ইন্টেলেকচুয়ালস' বলাকে পুরা ব্যাচরে বাস্টার্ডস বলছি বলে প্রচার করসে তাদের ঝাড়ি দিতে দিতে নাক চোখের পানি বের করে ফেলে।
এই যে ঘটনা শেয়ার করলাম, এটা হচ্ছে দশ চক্রে ভূত ভগবান হবার একটা উদাহরণ।
আমি একটা কথা বললাম একটা নির্দিষ্ট দলের কয়েকজনরে।
তাও আমার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হবার কষ্টে।
তারা প্রচার ঘটনা পুরা বিকৃত করে প্রচার করলো ভিন্নভাবে।
মধ্যখান থেকে ভিলেন হয়ে গেলাম আমি।
ছাত্রাবস্থায় আমার শিক্ষকরা আমাকে বুঝতেন, কেউ কেউ।
মাস্টারিতে এসে, যখন সবাই সবার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, কলিগরা, তখন আমার দশা খানিকটা বেহালই।
পাবলিক সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলোতেও তাই।
শেষকথাঃ
বিচারহীনতার সংস্কৃতি নিয়ে বাংলাদেশে বহু কথা হয়। আফসোস হয়। কপাল চাপড়াচাপড়ি হয়। আমরা যারা এই ধুয়া তুলি, এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি নেই বলে আছাড়পিছাড় খাই, আমরা নিজেরাই কি বুঝি, নিজের অজান্তে আমরা নিজেরা কীভাবে বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে প্রশ্রয় দিই? বাড়িয়ে তুলি?
একজন বিবেচনাবোধ সম্পন্ন মানুষের দায়িত্ব আগে নিজেকে প্রশ্ন করা। যাচাই বাছাই করে দেখা, আমি যা করেছি, আমি যা বলেছি - তাতে আমার কোন ভুল থাকতে পারে কি না। কারো নামে ব্যক্তিগত পরিসরে অভিযোগ আনার ক্ষেত্রে, বিশেষত, বিষয়টি যদি তার লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে হয় - তবে শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে দলবদ্ধভাবে তাকে ছাইয়া বলা, তাকে লিঞ্চ করা, হ্যারাস করা - অনেকটা জনসমক্ষে একজন নারীর পোশাক টেনে খুলে তার নারীত্ব পরীক্ষা করার মতোই। একইভাবে কোনদিন, কোনদিন কারুর জ্ঞানের লেভেল খুঁচিয়ে বাজিয়ে পরীক্ষা করতে দেখার চেষ্টা করা একজন স্বাভাবিক সৌজন্য ও মানবিকবোধ সম্পন্ন মানুষের পক্ষে সম্ভব না। আমাদের তা অনুধাবন করতে হবে।
একই সঙ্গে যদি আমি নিজেকে কারুর বন্ধু দাবী করি, আমাদের বন্ধু বা স্বজনের দ্বারা যদি কোন ভুল পদক্ষেপ নেয়া হয়ে থাকে, এবং আমরা যদি প্রকৃতপক্ষে তার স্বজন হয়ে থাকি এবং তার ভালো চাই - তার প্রমাণ হবে, পাবলিক স্ফেয়ারে না হলেও, অন্তত গোপনে তাকে বুঝিয়ে থামানো, সৎ পরামর্শ দেয়া। বন্ধুর অপরাধকে ডিফেন্ড করা না। যার প্রতি অপরাধ করা হয়েছে, বন্ধু বা স্বজনের সঙ্গে মিলিত হয়ে তাকে নিয়েই আরও অধিক পরিমাণে হাসিঠাট্টা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা না।
মানুষ নষ্ট হয় তাকে বিপদ থেকে, বিপথ থেকে টেনে না ফিরিয়ে ঠেলে সামনে এগিয়ে দেয়া "বন্ধু"দের দাঁড়াই।
আমাদের অনুধাবনে তা অনুরণিত হোক।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:২১