somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুভ জন্মদিন প্রবাসী পাঠক, একটি বর্ষপূর্তি পোস্ট !:#P !:#P !:#P

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শুভ জন্মদিন প্রবাসী পাঠক।

অনেকেই হয়ত ভাবছেন ব্লগে জন্মদিনের কোন নোটিফিকেশন নেই কেন? না নোটিফিকেশন খুঁজে লাভ নেই! প্রবাসী পাঠক নিকের পেছনে যে মানুষটা আছে আজ তার জন্মদিন না। আজ ভার্চুয়াল ক্যারেক্টার প্রবাসী পাঠকের জন্মদিন। আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে সামহোয়্যার ইন ব্লগে জন্ম হয় ভার্চুয়াল ক্যারেক্টার প্রবাসী পাঠক এর। দীর্ঘ ছয় মাস সামু ব্লগ এর লেখাগুলো অতিথি হিসাবে পড়ার পর ২০১৩ সালের ১৬ ই সেপ্টেম্বর নিজের একটা নিক খুলে ফেলি। নিক তো খোলা হল কিন্তু কি লিখব আর কিভাবেই লিখব তা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তাই ভয়ে ভয়ে নিজের আগমন বার্তা জানিয়ে একটি শুভেচ্ছা পোস্ট দিয়ে দিলাম। তার পর শুধু অপেক্ষা আর অপেক্ষা। ব্লগে নিক খোলার আগ পর্যন্ত ব্লগে আসলে যে ধরনের অনুভুতি কাজ করত আর নিক খোলার পরের অনুভুতি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই ব্লগে নিক খোলার পর থেকেই নিজেকে কিছুটা স্বার্থপর মনে হচ্ছিল। প্রথম প্রথম ব্লগে আসতাম শুধুমাত্র পড়ার জন্য। কিন্তু নিক খোলার পর থেকে ব্লগে এসে প্রথমেই দেখতাম কেউ কি আমার ব্লগ পাতায় এসেছে কিনা? আর এসে কেউ কমেন্ট করেছে কি না? যেহেতু ব্লগে নিক খুললেই প্রথম পাতায় এক্সেস পাওয়া যায় না। তাই নির্দিষ্ট গণ্ডির ভিতর বন্দী হয়ে রইলাম। স্বাগত পোস্ট দেয়ার ঠিক তিন দিন পর এল সেই মহেন্দ্রক্ষন। ব্লগার আহমেদ আলিফ ভাই এর কাছ থেকে পেলাম আমার ব্লগিং জীবনের প্রথম কমেন্ট। সে এক অদ্ভুত অনুভুতি, যা ভাষায় প্রকাশ করা আমার পক্ষে অসম্ভব। প্রথম সব কিছুর গুরুত্ব এবং ভালো লাগা সত্যিই অন্যরকম। এই এক বছরের পথ চলায় অনেক কমেন্ট পেয়েছি, প্রতিটি কমেন্টই আমাকে উৎসাহ যোগায় এবং প্রতিটি কমেন্ট আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রথম কমেন্ট এর অনুভুতি আলাদা ভাবে হৃদয়ে গেঁথে আছে এবং থাকবে চিরদিন।



ব্লগে অয়াচে থাকা সময়টুকু সত্যিই অনেক বিরক্তিকর ছিল। নিক খোলার সময় কথা ছিল সাত দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। কিন্তু ব্লগের সাত দিন যে ঠিক কত দিনে হয় তার সম্পর্কে কোন ধারনাই ছিল না। প্রতিদিন ব্লগে লগ ইন করে দেখতাম নজরবন্দি উঠিয়ে নেয়া হয়েছে কিনা! কিন্তু না প্রতিদিনই আশাহত হয়ে ফিরতে হত। যাদের দীর্ঘ সময় ওয়াচে থাকার অভিজ্ঞতা আছে তারাই বুঝতে পারবে এটা কতটা যন্ত্রণার। ওয়াচে থাকাকালীন সময়ে একটা ছোট গল্প লেখার চেষ্টা করলাম। যেখানে ২০০৭ থেকে ২০১৩ এই সময়টায় বুদ্ধিবৃত্তিক কিছু লেখা বলতে শুধুমাত্র বাজারের লিস্ট লিখেছি। সেখানে হঠাৎ করে গল্প লেখার মত দুঃসাহস করাটা অনেক কঠিন ছিল। কিন্তু আত্মবিশ্বাস ছিল চেষ্টা করলে কিছু একটা লিখতে পারব। গল্প পোস্ট করলাম এবং আবারো প্রতীক্ষার প্রহর গুনা। কেউ এসে পড়বে, মন্তব্যে ভালো লাগা মন্দ লাগা জানিয়ে যাবে। যেহেতু প্রথম পাতায় এক্সেস নেই তাই পাঠক সংখ্যা অনেক সীমিত। তারপরও ব্লগার নুসরাতসুলতানা, ব্লগার খেয়াঘাট, ব্লগার অর্থনীতিবিদ, ব্লগার নাজিম-উদ-দৌলা, ব্লগার শান্তির দেবদূত এর গঠনমূলক মন্তব্যে উৎসাহিত হয়েছিলাম।



দীর্ঘ দুই মাস নয় দিন পর ওয়াচের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি মিলল। প্রথম পাতায় এক্সেস এবং অন্য ব্লগারদের পোস্টে মন্তব্য করার অনুমতি পেলাম। প্রথম পাতায় এক্সেস পাবার উত্তেজনায় আর একটি স্বাগত পোস্ট দিয়ে দিলাম। অনেকেই স্বাগত জানিয়ে মন্তব্য করলেন। যাদের মধ্যে - আহমেদ আলিফ ভাই , মামুন রশিদ ভাই, ইমরাজ কবির মুন ভাই , তামিম ইবনে আমান ভাই, মাহমুদ ভাই, ভোরের সূর্য ভাই অন্যতম। সেই থেকে সামুর সাথে পথচলা। অবসর সময়ের বেশির ভাগ সময়ই সামুতে দেয়া শুরু করলাম। ধীরে ধীরে যেন সামুর প্রতি আসক্তি বেড়েই চলল। আসক্তি বাড়াটাই স্বাভাবিক কারণ বাংলা ভাষায় এত বিষয়ের উপর এমন মানসম্পন্ন লেখা আর কোথাও পাওয়া যাবে না। তাই মুক্তা আহরণের জন্য নেমে পড়লাম সামুর বিশাল সমুদ্রে। এইভাবে চলতে চলতে কখন যে এক বছর শেষ হয়ে গেল তা বুঝতেই পারলাম না। ব্লগার হিসাবে এক বছর পূর্ণ করলাম। কিন্তু সত্যিকার অর্থে কি ব্লগার হতে পেরেছি? ব্লগে লিখলেই যদি ব্লগার হওয়া যায় সে অর্থে হয়ত ব্লগার হয়েছি। কিন্তু সত্যিকারের ব্লগারের দায়িত্ব আমি পালন করেছি কিনা এ নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।



এই এক বছরের পথচলায় ব্লগ এবং সহব্লগারদের কাছ থেকে অনেক কিছু পেয়েছি। এই ব্লগ এবং সহব্লগারদের কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকব কারণ আপনাদের ভালোবাসা এবং উৎসাহের জন্যই নিজের ভেতর লুকিয়ে থাকা লেখক সত্ত্বাকে খুঁজে পেয়েছি। আজকে আমি যতটুকুই লিখতে পারছি তার মূল কৃতিত্ব আপনাদের ভালোবাসা এবং প্রেরণা। নিজের লেখক সত্ত্বাকে ছাপিয়ে ব্লগ থেকে সবচেয়ে বড় পাওনা হল আনন্দময় কিছু সময়। যা প্রবাস জীবনের একাকীত্বকে ভুলিয়ে দিতে সাহায্য করেছে। যখনই ব্লগে এসেছি ভুলে যেতে পেরেছি নিজের একাকীত্ব। ব্লগের সহব্লগারদের কাছে সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ হয়ে থাকব তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহারের জন্য। যারা আপন করে টেনে নিয়েছিলেন আমাকে।

প্রথম বর্ষপূর্তিতে কিছু ব্লগারদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা না জানালে অন্যায় হবে। কারণ তাদের ভালোবাসা, উৎসাহ এবং পরামর্শ না পেলে প্রবাসী পাঠকের পথ চলা হয়ত থেমে যেত অনেক আগেই। খেয়াঘাট, মামুন রশিদ, নাজিম-উদ-দৌলা, শান্তির দেবদূত, কাল্পনিক_ভালোবাসা, কান্ডারি অথর্ব, মাঈনউদ্দিন মইনুল, অন্যমনস্ক শরৎ, স্বপ্নবাজ অভি, সুমন কর, স্নিগ্ধ শোভন, হাসান মাহবুব, এহসান সাবির, *কুনোব্যাঙ*, খাটাস, সেলিম আনোয়ার, আমি তুমি আমরা, জুলিয়ান সিদ্দিকী, লিরিকস, আহমেদ আলিফ, ইমরাজ কবির মুন, আমিনুর রহমান , প্রোফেসর শঙ্কু, না পারভীন, ডি মুন এবং মাহমুদ০০৭আপনাদের কাছে বিশেষ ভাবে কৃতজ্ঞ থাকব চিরজীবন।



এবার একটু পরিসংখ্যানের হিসাবে দেখা যাক কেমন কেটেছে প্রবাসী পাঠকের এক বছর।

* পোস্ট করেছেন: ১৫টি
* মন্তব্য করেছেন: ১৩২১টি
* মন্তব্য পেয়েছেন: ৭৫১টি
* ব্লগ লিখেছেন: ১১ মাস ৪ সপ্তাহ
* ব্লগটি মোট ৬৭৩১ বার দেখা হয়েছে


সামুর সাথে যুক্ত হবার পর থেকে গত এক বছরে মোট ১৫ টি ম্যাচ ( ব্লগ পোস্ট ) খেলায় অংশ নিয়েছি। যার মধ্যে সামুর সহযোগী খেলোয়াড় ( ওয়াচে থাকা অবস্থায় ) হিসাবে ২ টি ম্যাচ ( ব্লগ পোস্ট ) এবং ওয়ান ডে ম্যাচ ( জেনারেল ব্লগার হিসাবে ) ১৩ টি ম্যাচ ( পোস্ট )। এখনো পর্যন্ত টেস্ট ম্যাচ এ ( সেফ ব্লগার ) অংশ নেয়ার সৌভাগ্য হয় নি। গত এক বছরে ১৫ ম্যাচে দুইটি শতক, ছয়টি অর্ধ শতক সহ সর্বমোট ৭৫১ রান ( প্রাপ্ত কমেন্ট ) তুলতে সক্ষম হয়েছি এবং ১৩২১ টি উইকেট ( প্রদত্ত কমেন্ট ) নামের পাশে জমা হয়েছে। প্রতি ম্যাচে গড় রান ( কমেন্ট ) ৫০। টেস্ট প্লেয়িং ( সেফ ব্লগার ) খেলোয়াড় না হয়েও রানের গড় খুব একটা খারাপ না। এই ১৫ ম্যাচে ৮১ টি চার ( লাইক ) এবং ১৫৭ টি ছয় ( পোস্ট প্রিয়তে ) মারতে পেরেছি। আশা রাখি এই এক বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে সামনের সময়গুলোতে আরও ভালো ব্যাটিং এবং বোলিং ( ব্লগিং ) করতে পারব।


বর্ষপূর্তি পোস্ট দেয়ার কোন পরিকল্পনা ছিল না। হঠাৎ করেই এই পোস্ট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। মাহমুদ ভাই এবং ডি মুন ভাইয়ের উৎসাহে তাড়াহুড়ো করে লিখে ফেললাম। অনেক কিছুই হয়ত বাদ রয়ে গেল। একটু সময় নিয়ে লিখলে হয়ত আরো ভালোভাবে লেখা যেত ( হ মিয়া ভাব লইয়ো না, এক বছর সময় নিয়ে লিখলেও এইটুকুই লিখতে পারতা)। এই এক বছরের পথ চলায় আপানাদের কাছ থেকে অনেক কিছু পেয়েছি। প্রত্যাশা করি ভবিষ্যতেও একই ভাবে পাশে পাব আপনাদের।

হ্যাপি ব্লগিং।

উৎসর্গঃ এই পোস্টটি সামহোয়্যার ইন ব্লগের সকল ব্লগারদেরকে উৎসর্গ করা হল।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:৪৩
৪৫টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×