বায়তুল মাল আর চাঁদা – দুটো শব্দই অর্থ সংগ্রহের সাথে সম্পর্কিত হলেও, উদ্দেশ্য, বৈধতা এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে বড় পার্থক্য আছে। নিচে সহজভাবে পার্থক্য তুলে ধরা হলোঃ
১. সংজ্ঞা
বায়তুল মালঃ
ইসলামিক রাষ্ট্রে বা মুসলিম সমাজে জনস্বার্থে (গরিব-মিসকিন, এতিম, শিক্ষা, রাস্তাঘাট, মসজিদ ইত্যাদি) বৈধভাবে সংগৃহীত সরকারি কোষাগারকে বায়তুল মাল বলে।
এটি শরীয়াহ দ্বারা অনুমোদিত এবং রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।
চাঁদা:
সাধারণ অর্থে কারো কাছ থেকে অর্থ তোলা, যা স্বেচ্ছায় হতে পারে বা জোরপূর্বকও হতে পারে।
এটি ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা কখনো অবৈধ উদ্দেশ্যেও তোলা হয়।
২. উৎস
বায়তুল মাল:
জাকাত, খুমস, ফিতরা, বৈধ কর, যুদ্ধলব্ধ সম্পদ, ওয়াকফ সম্পদ ইত্যাদি শরীয়াহ-স্বীকৃত উৎস থেকে সংগৃহীত হয়।
চাঁদা:
যেকোনো ব্যক্তি, দল বা সংগঠন যে-কোনো উৎস থেকে তুলতে পারে—বৈধ কিংবা অবৈধ উপায়ে।
৩. বৈধতা ও শরীয়াহ অনুযায়ী অবস্থান
বায়তুল মাল:
সম্পূর্ণ বৈধ এবং ইসলামে এর সুস্পষ্ট অনুমোদন রয়েছে।
চাঁদা:
যদি বৈধ কাজের জন্য স্বেচ্ছায় কেউ চাঁদা দেয়, তাহলে তা জায়েজ। কিন্তু জোরপূর্বক, অন্যায় বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য চাঁদা নেওয়া হারাম এবং গোনাহ।
৪. ব্যবহার
বায়তুল মাল:
জনকল্যাণমূলক কাজে এবং দরিদ্র-অসহায়দের জন্য ব্যয় হয়।
ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করা শরীয়াহ মতে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
চাঁদা:
বৈধ কাজেও ব্যবহার হতে পারে (যেমন স্কুল মেরামত, মসজিদ নির্মাণ)।
আবার রাজনৈতিক স্বার্থ, চাঁদাবাজি, ব্যক্তিগত বিলাসিতা ইত্যাদিতেও ব্যবহৃত হয়।
৫. নিয়ন্ত্রণ
বায়তুল মাল:
সাধারণত রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে বা ইসলামী সমাজের দায়িত্বশীল আমানতদারদের তত্ত্বাবধানে থাকে।
চাঁদা:
যে কেউ তুলতে পারে, সাধারণত এর উপর কোনো রাষ্ট্রীয় বা ধর্মীয় নিয়ন্ত্রণ থাকে না।

সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




