somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুগে-যুগে ইহুদি ষড়যন্ত্র, আইসিস WW-III এর পদধ্বনি (!!!) -৩, (শেষ পর্ব )

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মৃত্যুর তাণ্ডবলীলা শেষ করে মৃত্যু পথযাত্রী পেট্রোডলার এখন প্রস্তুতি নিচ্ছে মরন কামড় দিতে। বর্তমান বিশ্ব কি পারবে সহ্য করতে?



৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ) শিশু হত্যা করে যদি একটি রাষ্ট্রের হাত থেকে ডলার এর মান বাঁচাতে হয় তাহলে ফেডারেল রিজার্ভের পতন ঠেকাতে কত যুদ্ধ, কত হত্যা করা যেতে পারে ???



গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাস দমন, ইসলামী জঙ্গি, তালেবান, আইসিস ইত্যাদি আবরনের পেছনে যে সত্যটা লুকিয়ে আছে তা হলো “পেট্রোডলার”। এই সত্যকে আমরা জানতে না চাইলে আমাদের সিদ্ধান্ত আমাদের চিন্তা ভুল পথে পরিচালিত হবে। মধ্যপ্রাচ ঘিরে পৃথিবী জুড়ে যে অস্থিরতা তার প্রকৃত কারন এই “পেট্রোডলার”। সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ অস্থিরতার কারন জানতে আগে জানতে হবে পেট্রোডলার আসলে কি?
১৯৪৪ এর জুলাই, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখনও চলছে। এরই মাঝে মিত্র ৪৪টি দেশের ৭৩০ জন প্রতিনিধি মিলিত হয় ব্রেটন উড সম্মেলনে এবং তারা মিত্র বাহিনির নেতা আমেরিকান ডলারকে অন্তর্জাতিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনার একক হিসাবে স্বীকৃতি দেয়।



১৯৭৩ এ আরব-ইস্রাইল যুদ্ধচলাকালে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইস্রায়িলের পক্ষ নেয়। প্রতিরোধ হিসাবে আরব দেশগুল পশিচম বিশ্বে তেল রপ্তানী বন্ধ করে দেয়। এমতাবস্থায় আরব-আমেরিকা দরকষাকষি শুর হয় এবং সৌদি আরব এবং তার সমস্ত তেল ক্ষেত্র গুলোর নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয় আমেরিকা। বিনিময়ে সৌদি আরব ডলারে তেল বিক্রয়ের সিধান্ত নেয়।



এখানে আরও শর্ত ছিল যে সৌদি আরব তেল বিক্রয়ের ফলে যে মুনাফা করবে তা আমেরিকার ট্রেজারি বিল-এ বিনিয়োগ করবে। ১৯৭৫ সালের মধ্যে অবশিষ্ট ওপেকও পেট্রোডলার সিস্টেমের শরীক হয়। যতদিন বিশ্বে তেলের চাহিদা থাকবে এবং তেলের ক্রয়-বিক্রয় একমাত্র ডলারেই হবে—ডলারের বিশ্বায়িত চাহিদাও থাকবে ততদিন। এভাবেই শুরু হয় পেট্রোডলারের জয়জয়কার। ডলার এক অনন্য মুদ্রায় পরিনত হয় আর সেই সাথে আমেরিকা হয়ে উঠে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি।

৯/১১ এর কিছু আগে থেকেই ইরাক আক্রমনের পরিকল্পনা করে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্ব জনমত পক্ষে নিতে নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার মাধ্যমে নানা ধরনের প্রচারণা চালাতে থাকে। সিআইএ এর মাধ্যমে ৯/১১ হামলায় ইরাকের জড়িত থাকার প্রমান হাজির করার চেষ্টা করতে থাকে। বিশ্ব শান্তির জন্য ইরাক হুমকি কারন তার কাছে জিবানু আস্ত্র, পারমানবিক আস্ত্র ইতাদি আছে। ইরাকে গণতন্ত্র নাই ইরাকের মানুষকে সাদ্দামের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। এভাবে জনমত গড়ে তুলতে চেষ্টা করে।



প্রকৃতপক্ষে পেট্রডলার বাঁচানোর যুদ্ধ শুরু হয় ইরাক আক্রমনের মধ্য দিয়েই। সাদ্দাম’ই প্রথম পেট্রোডলার সিস্টেম থেকে বের হয়ে ইউরো’র মাধ্যমে তেল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০০ সালে সাদ্দাম যখন ফ্রান্স ও ব্রিটেনের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এরকম সিদ্ধান্ত নেয় তখন থেকেই শুরু হয় ইরাক দখলের পরিকল্পনা। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইরাক দখল করে, লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করে বেঁচে থাকে পেট্রোডলার। এরপর আরব বসন্তের নামে মিশরের তেল সম্পদ দখলে নেই যুক্তরাষ্ট্র। তার কিছুদিন পরেই আক্রান্ত হয় লিবিয়া। গাদ্দাফিকে একজন নারী অভিলাষী অত্যাচারী রাজা হিসাবে চিহ্নিত করতে থাকে মিডিয়া। গাদ্দাফির ছেলেরা দুর্নীতি পরায়ন হিসাবে চিহ্নিত হয়। হতভাগ্য জনতা মিডিয়ার এইসব প্রচার সমর্থন করে আর ন্যাটো লিবিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী গুলোর সাথে যুক্ত হয়ে ঝাপিয়ে পড়ে গাদ্দাফিকে হত্যা করতে।



ফেব্রুয়ারী ২০০৯ –এ গাদ্দাফী আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হওয়ার পরপরই আফ্রিকান ইউনিয়নের জন্য একক মুদ্রা প্রবর্তনের প্রস্তাব করে। একমাস পরেই আফ্রিকান ইউনিয়ন “Towards a Single African Currency” নামে যে ডকুমেন্ট তৈরী করে তার ১০৬ ও ১০৭ পৃষ্ঠায় আফ্রিকান সেন্ট্রাল ব্যাংকের অধিনে গোল্ড ষ্ট্যাণ্ডার্ডে একক মুদ্রা প্রবর্তনের সুবিধা এবং কৌশলগত বিষয়ে আলোচনা আছে। ২০১১ সালে সিআইএ লিবিয়ায় বিদ্রোহী গ্রুপ গুলকে মদদ দিতে তৎপর হয়ে উঠে। ইউ এন নো ফ্লাই জোন ঘোষণা করে ন্যাটোকে সাময়ীক বিরতি দিয়ে আল-কায়দা জঙ্গিদের লিবিয়ায় বিদ্রোহী গ্রুপ গুলতে রিক্রুট করে। এভাবেই অস্তমিত হয় লিবিয়ার স্বাধীনতা সূর্য, বহাল তবিয়তে বিরাজ করে পেট্রডলার।

রাশিয়া পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানীকারক দেশ এবং তেল রপ্তানীর ক্ষেত্রে তারাও পেট্রো ডলার সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০০৬ সাল থেকে রাশিয়া পেট্রো ডলার সিস্টেম থেকে বের হওয়ার প্রকল্প শুরু করে এবং ২০০৮ সালে ফ্রান্সের শেয়ার বাজারে তার জ্বালানী কম্পানীর লেনদেন রুবোল এবং গোল্ড ষ্ট্যাণ্ডার্ডে নির্ধারণ করা শুরু করে। বর্তমানে তারা চীনের সমস্ত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও অন্যান্য অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ডলার থেকে সরে এসেছে।

আমেরিকান পুঁজিবাদ এবং চীন-রাশীয়ান কম্যুনিজম এর পারস্পারিক দন্দ কতখানি আদর্শিক তার কিছুটা ধারনা এখানে পাওয়া যেতে পারে। ধর্মের মুখোশে মানুষ হত্যা করে সভ্য সেজেছে পশ্চিমারা।

[img|http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/Abid_Jaljala/Abid_Jaljala-1456575993-e3d0a1e_xlarge.jpg

পেট্রোডলার যেখানে শুরু হয়েছিল এবার ঠিক সেখানেই তার সমাপ্তির ব্যবস্থা ছলছে। সৌদি আরব সম্প্রতি চীন-রাশিয়ার সাথে মিলে পেট্রোডলার সিস্টেম থেকে বের হয়ে রিয়েল/ইউয়ান এ তেল বিক্রির চিন্তা করছে। খুব আল্প সময়ের মধ্যে তারা ঘোষণা দিবে বলে আশা করছে আনেকেই। সৌদি আরবের তেল সম্পদ, বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা মূলক বাজারে রাশিয়ার সাথে পেরে উঠতে অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা এই পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে।



জুলাই-২০১৪ প্যারিসে সৌদি যুবরাজের গাড়ি বহরে বন্দুকধারীরা হামলা করে। বিষয়টিকে মিডিয়া ছিনতাইয়ের চেষ্টা বলে চালাতে চাইলেও অনেকেই মনে করেন এটা গোপন নথিপত্র ছিন্তায়ের পরিকল্পনা।



এখন সৌদি আরবের পরিণতি কি হবে? ইরাক কিংবা লিবিয়ার মতো? নাকি এখান থেকেই শুর হবে?
এরই মধ্যে সৌদি আরবে শুরু হয়েছে বিভিন্ন মসজিদে বোমা হামলা এবং আইসিস, হুদি, তালেবানদের মতো জঙ্গি গ্রুপ গুলোর তৎপরতা। সৌদি রাজ পরিবার ভিলেন হিসেবে আবির্ভূত হতে শুরু করেছে। গত বছর অক্টোবরে বৈরুত বিমান বন্দরে ২ টন মাদকসহ সৌদি যুবরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরই কিছুদিন পরে লস-এঞ্জেলসে সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করা হয়।
ডলারের পতন কোন আকস্মিক ঘটনা না কি পরিকল্পিত? ধারনা করা হচ্ছে ডলারের পতনের মধ্য দিয়েই আমেরিকার পতন এবং এলুমিনাটিদের এর উত্থান ঘটবে।বিশ্ব জুড়ে শুরু হবে সংকট আমেরিকার অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঠেকাতে অ্যামেরিকানরা তাদের সরকারকে যুদ্ধ করতে উদ্বুদ্ধ করবে। মধ্যপ্রাচ্য ঘিরে একটা প্লট তৈরী হচ্ছে। সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিষ বাষ্প ছড়াচ্ছে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:১০
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×