somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ঐশিকা বসু
নমস্কার পাঠক, সামহোয়্যারের এই ব্লগে ঐশিকা আপনাকে স্বাগত জানায়। জীবনের নানা হাসি-কান্না, দুঃখ-বেদনার ইতিহাসে লেগে থাকে কতই না কাহিনী। সেসব কিছু নিয়েই আমার এই ব্লগ। সত্য-কল্পনার মিশেলে কিছু গল্পের ব্লগ। যদি পাঠকের ভাল লাগে। নিজেকে সার্থক বলে মনে করব।

অনন্ত গহ্বর

০৯ ই জুন, ২০২২ রাত ৯:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সায়েন্স সিটিতে ঘুরতে ঘুরতে দেখা হয়ে গেল জীবনের সঙ্গে। জীবন আমার ছোটবেলাকার বন্ধু। একসাথে স্কুলে পড়েছি। অবশ্য এইচ এসটা একসাথে হয়নি। কারণ একবছর ফেল করেছিল ও। ‘তারপর কি করলি জীবন?’ আমি প্রশ্ন করলাম। আমরা যে ঘরে ঢুকেছিলাম, সেটার নাম ইল্যুশন। সেখানে নিজেদের বিভিন্ন ধরনের প্রতিবিম্ব দেখতে দেখতে ও বলল, ‘আর কি? ঢুকে পড়লাম, বাবার কারবার। হোটেল কাম বার। দিলখুশ।’ দিলখুশের নাম শুনেছি। সম্প্রতি অসামাজিক কার্যকলাপের জন্য স্থানীয়রা ওটাকে পুড়িয়ে দিয়েছিল। অবশ্য এখন ওটা আবার আগের মতই রমরমিয়েই চলছে। আমরা যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম তার সামনের আয়না দুটোর একটা উত্তল, অপরটা অবতল। ফলে, আমার প্রতিবিম্বটা সোজাভাবে পড়লেও জীবনেরটা উল্টে গেছে।

‘তারপর তোর খবর বল?’ সোৎসাহে বলে ওঠে জীবন। ‘বেশি দূর নয় ভাই। একটা সামান্য বেতনের কেরানি। ছোট একটা অফিসের চাকরি।’ মৃদু হেসে আমি বললাম। এবার যে আয়নার সামনে দাঁড়ালাম, সেখানে আমার প্রতিবিম্বটা দুভাগ হয়ে গেছে। একভাগ উল্টোন আর একভাগ সোজা। ও বলল, ‘বাঃ, বেশ তো। তা তুই শেয়ার মার্কেট বা মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা খাটাস তো?’ ‘না রে ভাই। ক’পয়সা আয় করি বল তো? তাছাড়া ওসব আমার মাথায় ঢোকে না।’ আমার কথা শুনে ও একটা বাঁকা হাসি হাসল।

আয়নাতে নিজের প্রতিবিম্ব দেখা শেষ। এরপর আমরা গেলাম তার ঠিক পাশেই। দেখলাম, লেখা রয়েছে অনন্ত কুয়ো। জীবন দেখলাম কুয়োর মধ্যে তাকিয়ে গভীর আগ্রহ নিয়ে দেখছে। কুয়োর সামনে আয়নাটাকে এমনভাবে বসানো হয়েছে যে তার তল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জীবন আমাকে জায়গাটা ছেড়ে দিল। তারপর বলল, ‘হালিশহরে আমাদের আরেকটা বার কাম হোটেল খুলছে বুঝলি, ভেতরে সুইমিং পুল। ক’কোটি টাকা ইনভেস্ট করতে হয়েছে বল তো? হাঃ হাঃ। টাকা উড়ে বেড়ায় রে, তাকে ধরতে শিখতে হয়। তুই শালা দেখছি সারাজীবন গরীবই থেকে যাবি।’ অনন্ত কুয়োর কালো গহ্বরের মধ্যে দৃষ্টিকে তলিয়ে দিয়ে আমি দেখবার চেষ্টা করলাম, কিন্তু বেশিক্ষণ পারলাম না। মাথা ঝিমঝিম করতে লাগল। জীবনকে আমি বললাম, ‘আমি আসছি বুঝলি ভাই। এত ইমেজ দেখতে দেখতে মাথা ঘুরছে।’ কথাটা বলেই দ্রুত বেরিয়ে এলাম আমি।

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০২২ রাত ৯:৪৯
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×