ছবিঃ গুগল মামা থেকে।
রাজাকার (رضا کار) হলো ব্যুৎপত্তিগতভাবে একটি আরবি শব্দ যার শাব্দিক অর্থ হল সেচ্ছাসেবী। এটি একটি ধার করা শব্দ হিসেবে উর্দু ভাষায় এসেছে। বাংলাদেশে, রাজাকার একটি অপমানজনক শব্দ, যার অর্থ বিশ্বাসঘাতক বা প্রতারক।
রাজাকার (পাকিস্তান)
রাজাকার বা রেজাকার হলো ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক গঠিত একটি আধাসামরিক বাহিনী। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী বাঙালি এবং উর্দুভাষী অবাঙালি অভিবাসীদের নিয়ে গঠিত হয়। অবরুদ্ধ বাংলাদেশে স্বাধীনতার জন্যে লড়াইরত মুক্তিবাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য ১৯৭১ সালের মে মাসে খুলনায় প্রথম রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়।
রাজাকার শব্দটি ফার্সি ভাষা থেকে আগত, এর অর্থ স্বেচ্ছাসেবী। ১৯৪০-এর দশকে ভারতের হায়দ্রাবাদের নিজাম ওসমান আলী খানের শাসনামলে একটি সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলেন কাসেম রিজভী, যে বাহিনীর নাম দেয়া হয়েছিল রাজাকার৷ হায়দ্রাবাদের সেই সশস্ত্র বাহিনীর অনুকরণেই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে রাজাকার বাহিনী গঠন করে পাকিস্তানের সামরিক সরকার।
রাজাকার (বাংলাদেশ)
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানকল্পে মে মাসে খুলনায় খান জাহান আলী রোডের একটি আনসার ক্যাম্পে ৯৬ জন পাকিস্তানপন্থী কর্মী নিয়ে হায়দ্রাবাদের ‘রাজাকার’-এর অনুকরণে রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়। পরবর্তী সময়ে দেশের অন্যান্য অংশেও রাজাকার বাহিনী গড়ে তোলা হয়।
প্রথম পর্যায়ে রাজাকার বাহিনী ছিল এলাকার শান্তি কমিটির নেতৃত্বাধীন। ১৯৭১ সালের ১ জুন জেনারেল টিক্কা খান পূর্ব পাকিস্তান রাজাকার অর্ডিন্যান্স ১৯৭১ জারি করে আনসার বাহিনীকে রাজাকার বাহিনীতে রূপান্তরিত করেন। তবে এর নেতৃত্ব ছিল পাকিস্তানপন্থী স্থানীয় নেতাদের হাতে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ৭ সেপ্টেম্বর জারিকৃত এক অধ্যাদেশ বলে রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের সেনাবাহিনীর সদস্যরূপে স্বীকৃতি দেয়।
রাজাকার বাহিনীর প্রাথমিক পর্যায়ের প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছিল ১৫ দিন। ১৯৭১ সালের ১৪ জুলাই কুষ্টিয়ায় রাজাকার বাহিনীর প্রথম ব্যাচের ট্রেনিং সমাপ্ত হয়। পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক অধিনায়ক জেনারেল এ.এ.কে নিয়াজী ১৯৭১ সালের ২৭ নভেম্বর সাভারে রাজাকার বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডারদের প্রথম ব্যাচের ট্রেনিং শেষে বিদায়ী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন। পরবর্তী পর্যায়ে রাজাকার বাহিনী একটি স্বতন্ত্র অধিদপ্তরের মর্যাদায় উন্নীত হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের সঙ্গে সঙ্গে রাজাকার বাহিনীর স্বাভাবিক বিলুপ্তি ঘটে। [মুনতাসীর মামুন]
এবার আসি বিঃ দ্রঃ বক্তব্য-
উপরের ভাষ্যমতে স্বাধীনতার সময় মুক্তিকামী মানুষের বিপক্ষে যারা ছিল তারাই মূলত রাজাকার। আশা করি কথাটি সঠিক। এখন আমার প্রশ্ন হল এই মুহুর্তে বাংলাদেশে যা ছাত্র-ছাত্রী এবং আমজনতা রাস্তায় নেমে আসল তাদের কাংখিত মুক্তির আশায়, তাদের মুক্তির পথে যারা বাথা প্রধান করছে আর মুক্তি কামীদের বিপক্ষকে যারা সহযোগীতা করছে (সামরিক বা আধা-সামরিক বাহীনি হয়) তাদের কি যুক্তিক ভাবে সত্যিকারের "রাজাকার" বলা যায় না?? তারা কি রাজাকার নয়???
পুরা জাতি এখন মনে হয় এর সঠিক ব্যখ্যা জানতে চায়।