বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে নিয়ে আমাদের আশা আকাঙ্খা অনেক। আমরা সবাই চাই আমাদের দল একদিন বিশ্বসেরা হবে। কিন্তু শুধু আগ্রহ আর আবেগ থাকলেই কি তা সম্ভব? যদি সম্ভব না হয় তবে আরো কি দরকার? এসব নিয়েই ধারাবাহিক ভাবে কিছু লেখার চিন্তা করলাম। আমার ধারণার সাথে অনেকেই দ্বিমত প্রকাশ করতে পারেন। তবে বাংলাদেশ দলকে যারাই এগিয়ে যেতে দেখতে চান তাদের মতামত সানন্দে গ্রহণ করব। আজ প্রথম খন্ড লিখলাম-
আইপিএল ভারত ক্রিকেট দলকে অনেক এগিয়ে দেবে। কোহলি, ভালহাতি, রাইডুর মত অনেক ক্রিকেটার প্রস্তুত হয়ে থাকবে শচীন, দ্রাবিড়দের জায়গা নিতে। আর ভারতের ঘরোয়া লীগও অনেক শক্তিশালী। পুজারা, রোহিত শর্মাদের মত অনেক খেলোয়ার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আসার আগেই যথেষ্ট পরিণত হয়ে উঠছে। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কি হবে? এটা ঠিক যে দলটা আগের থেকে অনেক ভালো, অনেক তরুন প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে দলে যারা আরো অনেক দিন খেললে দল হয়তো আরো ভালো অবস্থানে আসবে। কিন্তু একটা দেশের ক্রিকেটকে উচ্চ পর্যায়ে নেয়ার জন্য অবকাঠামো গড়ে তোলাটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার মনে হয়। আমাদের সাকিব, তামীমরা অনেক প্রতিভাবান হলেও পরিণত না হয়েই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলে এসেছে। এর পরেও তারা ভালো করছে কারণ তারা সত্যিই প্রতিভাবান। তাই খেলতে খেলতেই শিখে নিচ্ছে। টেস্ট পর্যায়ে পারফরমেন্স সবথেকে খারাপ হওয়ার কারণও এই ঘরোয়া ক্রিকেট। সাকিব, তামীম বা বাংলাদেশের অন্য কোন ব্যাট্সম্যানেরই ঘরোয়া ক্রিকেটের লংগার ভার্সন ক্রিকেটে তেমন বড় ইনিংস নেই। তারা খেলেছেও খুব কম। তাই আজ যদি বাংলাদেশ জাপান কিংবা আরো দূর্বল দলের সাথে টেস্ট খেলে, বড় ব্যবধানে হয়তো জিতবে, রানও হয়তো অনেক করবে কিন্তু বড় বড় (১৫০+) ইনিংস হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
সত্যিকারের অবকাঠামোই পারে দলে ও দলের বাইরে একটা শক্তিশালী পুল তৈরী করতে এবং ধারাবাহিক পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে। দীর্ঘ মেয়াদে ভালো করার জন্য আমাদের অবশ্যই স্কুল ক্রিকেটের মান বাড়াতে হবে। ভালো ভালো পিচে প্রচুর খেলার আয়োজন করতে হবে অল্প বয়সীদের জন্য এবং অবশ্যই লংগার ভার্সনের ম্যাচ অর্থ্যাৎ ৩-৪-৫ দিনের। তাহলেই সত্যিকার টেম্পারমেন্ট গড়ে উঠবে। আমাদের দেশের স্কুলের ছেলেরা বেশীরভাগই খেলে ২০-৩০ ওভারের ম্যাচ। শচীন-কাম্বলীর ৬৬৪ রানের জুটির কথা ভাবুন। ১২০ ওভারে ৭২৪ রান করেছিল ওদের দল। অল্প ওভারের খেলা হলে তা তো সম্ভব হতো না। সেই সময় থেকেই ভারতের স্কুল পর্যায়ে লংগার ভার্সনের খেলা হয়। কিন্তু আমাদের সাবেকরা, বোর্ডের কর্মকর্তারা এসব নিয়ে কতটা যে ভাবেন আমি জানিনা। বরং তারা আমাদের অল্প বয়সী ছেলে গুলোর পান থেকে চুন খসলেই সমালোচনা করার জন্য এক পায়ে দাড়া। আর সুযোগ সন্ধানী মিডিয়া তো আছেই। ভালো করলে এক রকম আর খারাপ করলে আর এক রকম। ভারতের মিডিয়াও অনেকটা এ রকম। তবে তাদের সাবেক ক্রিকেটাররা অনেক শক্তিশালী ও অনেক ভালো ভুমিকা পালন করে। আমি ভারতের উদাহারণ দিচ্ছি এজন্য যে আমি মনে করি ভারত পারলে আমরাও পারব। তবে এজন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা ও তার প্রয়োগ। আশাকরি যারা বোর্ড, সাবেক ক্রিকেটার ও মিডিয়ার সাথে সংযোগে আচেন তারা তাদেরকে এ ধরণের ব্যপারে আগ্রহী করে তুলতে পারবেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





