এর আগে গুটি কয়েক গল্প লেখা হয়েছে আমার।এবারের গল্পটা একটু অন্যরকম। অন্যরকম তার অনুভূতি,অন্যরকম তার আবহাওয়া।তাই লিখতেও হচ্ছে একটু অন্যরকম ভাবে।
১৩ই এপ্রিল,২০০৭।বিকাল ৪.০০ টা।ঢাকা ভার্সিটির টি,এস,সির মোড়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি সুমনের জন্য।এমন সময় কাঁধের উপর নরম হাতের একটা স্পর্শ পেলাম।স্বভাবতই চমকে উঠলাম।এখানে এমন ছোঁয়া দেবার মত কেও তো আমার নেই।পেছন ফিরে দেখি কণিকা।দুই বছরের বেশি সময় পর দেখা হলো।সেই একসঙ্গে খুলনায় পড়তাম।জীববিজ্ঞান কোচিং এ।সাথে সাথেই আর একজনের কথা মনের অজান্তেই মনে পড়ে যায় আমার।লীলা রায়।কলেজে থাকতে কত পছন্দ করতাম তাকে।একদিনও বলতে পারি নি।কণিকাকে মাঝে মাঝে বলতাম ওকে আমার হয়ে বলার জন্য।কোনদিনও জানতে পারি নি সে ওকে কিছু বলেছিলো কিনা।
হেসে বললাম কি রে তুই এখানে?
হ্যাঁ,আমিই তো এখানে থাকব।এটাই তো আমাদের আড্ডা দেবার জায়গা।তুই এখানে কেন?
একজনের সাথে দেখা করতে এসেছি।কিন্তু তার তো কোন দেখা নেই।
মোবাইল করলেই পারিস।তাহলে তো জানতে পারবি কোথায় আছে।
মোবাইল তো নেই।আমারও নেই, তারও নেই।
তাহলে চল আজ তোর সাথেই আড্ডা দেই।অনেকদিন পর।
আমরা স্বে্পার্জিত স্বাধীনতা সংগ্রামের ঠিক বিপরীত দিকটায় বসে পড়লাম।
বসেই কণিকা বলল,অনেকদিন পর দেখা তাই না?সেই কবে খুলনায় দেখা হয়েছে তারপর এই।তুই তো বুয়েটে চান্স পাবার পর আমাদের আর খবরই রাখলি না।
বললাম,কথাটা কিন্তু ঠিক নয়।যোগাযোগটা রাখার মত কোন উপায় তো ছিলো না।আমাদের ক্লাসটা সেবার তাড়াতাড়িই শুরু হলো আর চলেও এলাম ঢাকায়।
আমি,লীলা ঢাকা ভার্সিটি ভর্তি হয়েছি শুনিস নি বুঝি।
শুনেছিলাম।কিন্তু এখানে কম ছাত্র তো নয় যে তোদের খুজে বের করব।
এমন নানা কথাবার্তায় অনেকক্ষন কেটে গেলো।মনে যে কথা বার বার ফিরে আসছিলো সেটা হঠাৎ বলেই ফেললাম।
লীলা কেমন আছে?
ভালো,তবে তোর আর কোন চান্স নেই।
মানে!চান্স আগে কখনো ছিলো নাকি?
ছিলো,বছর দুয়েক আগে দেখা হলে।এখানে এসে প্রথন প্রথম তোর কথা প্রায়ই শুনতে হয়েছে আমাকে।তারপর হঠাৎ একদিন দেখলাম সে শিশিরের সাথে চলতে শুরু করেছে।এখনো ওর সাথেই আছে।
শিশির কে?একসাথে পড়ে বুঝি?
হ্যাঁ।একটু আগেও আমার সাথে ছিলো ওরা দুজন।মনে হয় কোথাও বসে পড়েছে।তোর কি খবর সঙ্গী সাথী খুজে পেলি?
না,আমি সঙ্গী খুজি না।
কেন?
হেসে বললাম,সঙ্গ দেব না বলে।আজ তবে চলি।সন্ধ্যা হয়ে আসছে পরে দেখা হবে।
কণিকার সাথে দেখা হবার পর আমার দিনলিপির কোন পরিবর্তন হয় নি।সেই একই আবর্তে জীবন।রাত জেগে বার্সেলোনার খেলা দেখা কিংবা শুয়ে শুয়ে সিনেমা দেখা কিংবা একটু লেখালেখি আর দিন হলে ঘুম।ক্লাসের নামে ভজঘটো।কোনরকমে টার্মগুলো পাস করে যাওয়া আর জুনিয়র হোক সিনিয়র হোক সবার সাথে তাস খেলা।
এরপর মাঝে মাঝেই দেখা হতো কণিকার সাথে কিন্তু লীলার সাথে কখনো দেখা হয় নি।চাইলে দেখা করা যেত নিশ্চয়ই কিন্তু আমি সে কাজটায় মনের কোন মত পাই নি।কণিকার সাথে দেখা হতো সত্যি কিন্তু সে কখনো দেখা করতে আমার হলে আসে নি।আমিই মাঝে মাঝে ওর হলে যেতাম।বস্তুত আমি সেই সব হাতে গোনা কয়েকটা ছেলের একজন যাদের হল জীবনে কেউ গেস্ট রুমে দেখা করতে আসে না।কিন্তু ১৭ই এপ্রিল ২০০৮ ব্যতিক্রম ঘটল ব্যাপারটার।কনিকার সাথে দেখা হওয়ার প্রায় এক বছর পর।
সকাল ১১ টা বাজে।তখনো ঘুমিয়ে আছি আমি।২ টার আগে কখনোই আমার সকাল হয় না।এমন সময় দারোয়ান এসে বলল আমার একজন গেস্ট এসেছে।হকচকিয়ে উঠলাম ঘুম থেকে।এমন তো হবার কথা নয়।মনের ভিতর একটা জিজ্ঞাসা চিহ্ন কাজ করতে লাগলো।কে হতে পারে?আমার হাজার চিন্তার জলাঞ্জলি দিয়ে নিচে নেমে দেখি কণিকা দাড়িয়ে।অবাক সেটাতেও কম হলাম না আমি।
কি ব্যাপার তুই?এতো সকালে।
সকাল না দুপুর।একটা মজার কাণ্ড ঘটেছে।সাথে চল।পথে বলব।
আমরা রিক্সা নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে রওনা দিলাম।আমি সামান্যতমও ধারণা করতে পারলাম না মজার কাণ্ডটা কি হতে পারে।ওকে বার বার জিজ্ঞাসা করলাম কিন্তু ও বলল না।আজব ব্যাপার আমাকে বলবে বলে সে এসেছে অথচ এখন আর বলছে না।বাধ্য হয়েই আমাকে ওর বলার সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হলো।
অনেকক্ষন পরে ও বলল,তোকে যে কিভাবে বলব ঠিক বুঝতে পারছি না।এজন্য একটু পরে বলব,একটু পরে বলব করছি।আবার না বলেও পারছি না।
বললাম,আরে বল কি বলবি।টেনশন নিস না।
তাহলে বলেই ফেলি।
বল।
লীলা গত পরশু বিকালে ধরা খেয়েছে।
মানে?ঠিক বুঝলাম না।
নয়ন ওকে গত পরশু বিকালে লিটনের ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়েছিলো।লিটনের ফ্ল্যাট বুঝিস তো?
হ্যাঁ,বুঝি।কিন্তু এতে ধরা খাওয়ার কি আছে এইটা বুঝতে পারছি না।
কণিকা এবার যা বলল তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না আমি।বলল লীলারা যে বাসায় গিয়েছিলো সেখানে নাকি একটা গোপন ভিডিও ক্যামেরা বসানো ছিলো।কাজটা নাকি শিশিরই করেছে।চলে আসার একটু আগে লীলা সেটা দেখতে পায়।শিশিরের সাথে আগেও নাকি ওখানে গেছে সে।তখনও এটা থাকতে পারে বলে লীলার ধারণা।
আমি ঠিক ধরতে পারলাম না এতে মজার ব্যাপার কি ঘটেছে।এই নিদারুন গর্হিত কাজটায় কোথায় বা এর মজা আর কোথায় বা এর আনন্দ।লীলা তার কলেজ জীবন থেকে বান্ধবী।তাই সেদিন হলে ফিরে লীলা হয়ত কণিকার সাথে ঘটনাটা বলেছে।আর কণিকা ঘটনাটার ভেতর অসাধারন এক মজা খুজে পেয়েছে!বুঝতে বাকী থাকে না কণিকা এই দুই দিনে অনেক মানুষের সাথে গল্পটা করেছে এবং অনেক মজা পেয়েছে।বন্ধুত্বের পরিচয় বুঝি এভাবেই দিতে হয়!
বললাম লীলা এখন কেমন আছে?ওর মানসিক অবস্থা তো ভালো নয় কি করছে এখন?
কনিকা বলল সারাদিন রাত কান্নাকাটি করছে,হলেই আছে।ভালোই হয়েছে ওরকম করলে তো এমন হবেই।
আমার লীলার জন্য যতটা খারাপ লাগছে তার চেয়ে অনেক বেশি অসহ্য লাগতে শুরু করেছে কণিকাকে।সে সেটা বুঝতে পারছে না।অবশ্য তার মত মেয়েদের সে বোঝার অনুভূতি নেই।
লীলার সাথে কখনো দেখা করি নি।আজ তার সাথে দেখা করা উচিত আমার।কিন্তু দেখা করলেই লীলা বুঝতে পারবে কণিকা আমার সাথে গল্পটা বলেছে।কি বিশ্রী একটা অবস্থার সৃষ্টি হবে তখন।আর দেখা হলে কিবা বলব আমি।আজ আমার কিছুই করার নেই।শুধু কণিকার কাছ থেকে দূরে থাকা ছাড়া।তাই তাকে বললাম,আমি তবে চলি।রাতে ঘুমাই না তো খুব ঘুম পাচ্ছে।
হলে ফিরতে ফিরতে ভাবলাম কি আজব এই দুনিয়া।লীলার মত মেয়েরা হয়ত মাঝে মাঝেই এমনভাবে বিপদে পড়ে।কেউ জানতে পারে কেউ জানতে পারে না।যে জানতে পারে তার কাছে ব্যাপারটা একটা অশ্লীল মৃত্যু রুপে ধরা দেয় আর যে জানতে পারে না তার কাছে সুখস্মৃতি রুপে।কিন্তু অবাক ব্যাপার হলো সেই মৃত্যুর খবর শুনে কণিকার মত মেয়েরা মজা পায়।একটু কষ্টও পায় না সহানুভুতিও বোধ করে না।
দিন চলে গেছে।আমিও ব্যাপারটা ভুলে গিয়েছিলাম।শুধু শুনেছিলাম কণিকা লীলার ঘটনাটা সারা ক্যাম্পাস ছড়িয়ে দিয়েছে আর শিশির ভিডিওটা।এবং আরো পরে ঐ কণিকার মুখেই শুনেছিলাম ওদের বিভাগের এক বড় মুসলিম ভাই সবকিছু জানার পরেও খুব স্বাছন্দ্যের সাথে লীলাকে বিয়ে করেছে।খবরটা শুনে খুশিও হয়েছিলাম অনেক।দুনিয়ায় আর যাই হোক ভালো মানুষের অভাব নেই।
প্রায় বছর দুয়েক পরে সেদিন শণিপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে তার সাথে দেখা হলো।আগের থেকে অনেক বেশি সুন্দরী হয়েছে সে।মাঝে মাঝে মন্দিরে যাওয়া আমার ছেলেবেলাকার অভ্যাস।তাই গিয়েছিলাম পুরান সেই অভ্যাসের টানে।অপেক্ষার কোন কারন ছিলো না তাই হনহন করে মন্দিরের ভেতর থেকে আসছি এমন সময় পেছন থেকে একটা ডাক শুনতে পেলাম,একটা অন্য নামে। অঞ্জন,পৃ্থিবীতে খুবই কম সংখ্যক মানুষ আমাকে এ নামে ডাকে।এবং অতি অবশ্যি তারা সকলেই মেয়ে।
থমকে দাড়ালাম।পেছন ফিরে তাকাতেই দেখতে পেলাম কাপড় পরা এক নারী। চিনতে তেমন অসুবিধে হলো না।বছর দুয়েকের পুরনো হিসেব।সে হিসেব চুকিয়ে যাওয়ার পর অংক নিয়ে আর কখনো বসা হয় নি আমার।সে হিসেব চুকানোর সময় আমি একটা মৃত্যুর গল্প শুনেছি।একটা অশ্লীল মৃত্যুর।সে অশ্লীলতার গল্প আনলে মৃত্যু ফিরে ফিরে আসে আমার বুকে,বুকটা ধড় ফড় করে।অন্য কোন মৃত্যুর গল্প মনের কোণে ধাক্কা মারে।লীলা রায়।দুই বছর আগেকার অশ্লীল মৃত্যু।
কেমন আছো,অঞ্জন?
ভালো,তুমি?
এই তো আগের থেকে অনেক ভালো।এখন কোন কিছুর অভাব নেই আমার।আগের লীলার সাথে তো আজ মিলাতে পারবে না আমাকে।এখন আমি মিসেস লীলা পারভেজ।
মুসলমান হয়েছো এটা আমি কণিকার কাছ থেকে শুনেছি।কিন্তু মন্দিরে এসেছো কেন?
মুসলমানদের কি মন্দিরে আসতে নেই?
না তা হবে কেন?
পুজা দেখতে এলাম।শণিপুজা আমার খুব প্রিয় ছিলো।এখানে এবার প্রথম শুরু করেছে জানতে পেরে এলাম দেখতে।আচ্ছা,কণিকা কেমন আছে?
জানি না,দেখা হয় না কখনো।
কণিকা আমার অনেক ক্ষতি করেছিলো।সারা ক্যাম্পাস আমার নামে আজে বাজে কথা রটিয়েছিলো।কিন্তু কোন লাভ হয় নি।তোমাকেও বলেছিলো নিশ্চয়।
হ্যাঁ,শুনেছিলাম।সেদিন তোমার সাথে দেখাও করতে চেয়েছিলাম কিন্তু হয়ে উঠে নি নানা কারনে।যাই হোক ওসব কথা বাদ দাও।তোমার মেয়ের খবর কি?কেমন আছে সে?
ভালো।কিন্তু তুমি জানলে কিভাবে?
শুনেছি।তোমার স্বামীর খবরও।বিশাল ব্যবসায়ী।
দূরে একটা মহিলার কোলে একটা বাচ্ছাকে দেখিয়ে দিলো সে।দেখলাম মহিলাটি বোতলে করে দুধ খাওয়াচ্ছে তাকে।
বললাম,কি নাম রেখেছো?
সোনালী পারভেজ।তোমার দেওয়া নাম।বলে একটু হাসলো সে।
বুঝলাম সোনালী নামটার ইতিহাস।কিন্তু নামটা তো আমি দেই নি।যতদুর মনে পড়ে তোমার জন্য একটা গল্প লিখে দিয়েছিলাম কণিকার কাছে কোথায় যেন দেবে বলে।তার নায়িকার নাম ছিলো সোনালী।
আমি ওই নামটাই বেছে নিয়েছি।আচ্ছা কি করছো এখন?এতদিনে তো বি,এস,সি শেষ হওয়ার কথা।
শেষ করেছি মাস তিনেক হলো।কোন কাজ নেই।খাওয়া দাওয়া,ঘুম আর সেই পুরনো অভ্যাস কলমের সাথে ভিত্তিহীন যুদ্ধ।
চাকরি খুজো না?
না,আমি চাকরি খুজি না।
কেন?
হেসে বললাম,চাকর হবো না বলে!
বাকিটা জীবন চাকরই হতে হবে।কোথাও জয়েন করে ফেলো।আর হ্যাঁ,কণিকার কাছে একবার শুনেছিলাম কার সাথে নাকি ঘুরতে।তার খবর কি?হলেই থাকে এখনো?
বললাম,হলেই থাকে।আছেও ভালো শুধু আমার আর ভালো লাগে না।
কেন?
এ জীবনে কারো দায়িত্ব আমি নিতে পারব না।
পাগলামি করো না।এ দায়িত্বের ফল খুব মিষ্টি খেয়ে দেখতে পারো।
ঠিক আছে যদি পারি দেখব।কিন্তু আমি আবার বেশি মিষ্টি খেতে পারি না বংশপরম্পরায় ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে।
প্রায় এক ঘন্টা কথা বললাম আমরা।আর আশ্চর্য হয়ে একটা কথা মাঝে মাঝে ভাবলাম।মেয়েরা তাদের যারা পছন্দ করে তাদের কথা সারাজীবন মনে রাখে। একথা আমি অনেকের মুখে শুনেছি কখনও সত্যতা পাই নি আজ নিজেই সাক্ষী হলাম।লীলার সাথে কখনো আমার সেভাবে কথা হয় নি।শুধু কণিকার মুখে সে শুনেছে তাকে পছন্দ করতাম সেটাই সে এখন মনে রেখেছে।এমন কি নিজের মেয়ের নামটাও আমার দেওয়া নাম থেকে রেখেছে।আজব এ নারী চরিত্র।আজব তার কায়া আজব তার মন।
হঠাৎ লীলা তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে একটা কার্ড বের করে বলল,
এটা রাখো।আমার স্বামীর কার্ড।কখনো চাকরি করতে ইচ্ছে হলে যোগাযোগ করো।আমি বলে দেব।
হাত বাড়িয়ে কার্ডটা নিলাম।বললাম,তোমার কোন কার্ড নেই?
আমার কার্ড নেই নম্বর আছে।নেবে নাকি?
দিতে পারো যদি আপত্তি না থাকে।
কি করবে?
রেখে দেব।যদি কখনো প্রয়োজন পড়ে।
কিন্তু আমি তো নম্বরটা দিতে পারব না তোমাকে।আমাকে তোমার প্রয়োজন পড়বে না।যার প্রয়োজন হতে পারে তার কার্ডটা দিয়েছি।পাগলামি না করে যোগাযোগ করো।
নম্বরটা না দেবার কোন কারন খুজে পেলাম না।অবশ্য মেয়েদের অনেক কিছুই বোঝা যায় না।এর কারন খোজাও তাই ঠিক নয়।
বললাম,আসি তাহলে।
এসো,তবে একটা কথা বলতে চাই নি তবুও বলছি।কণিকার অনেক এক্সক্লুসিভ ভিডিও নীলক্ষেতে পাওয়া যায়।খবরটা কণিকাকে জানিয়ে দিও।
বলেই মুখটা অন্যদিকে ফিরিয়ে নিলো সে।কি বলব বুঝে উঠতে পারলাম না।তাই কিছু না বলেই চলে এলাম।
হাটতে হাটতে পলাশী এসে পৌঁছেছি কখন বুঝতেই পারি নি।রাজধানী কনফেকশনারীতে দাঁড়িয়ে একটা ঠাণ্ডা খেয়ে টাকা দেওয়ার সময় চোখটা ম্যানি ব্যাগে চলে যায়।দেখি পাশাপাশি কয়েকটা কার্ড একে অপরের সাথে গল্প করছে।মিসেস লীলার স্বামীর কার্ডের মত মিসেস স্বপ্নার স্বামীর কার্ড আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।স্বপ্না সেই স্বপ্না যাকে আমি আমার জীবনের একমাত্র চুমুটি দিয়েছি।সেও সেই সাত বছর আগে।আজ সে কোলকাতা থাকে।সে আর এক ইতিহাস।সে আর এক মৃত্যু। স্বপ্নীল মৃত্যু।
আমি প্রতি বছর ১১ই ডিসেম্বর মৃত্যুদিবস পালন করি।তাই গত চার বছর বুয়েটে এনট্রান্স ডে পালন করা হয় নি আমার।ভাবতে অবাক লাগে আমার কল্পিত মৃত্যু আমি হাস্যরসে পালন করি।আর লীলা রায়ের মত মেয়েরা জীবনের একবার অশ্লীল মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেও পুনরায় জীবনে ফিরে আসে।নতুন করে জীবন গড়ে।কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো কণিকার মত মেয়েরা যারা মৃত্যুর গল্প শুনে এক সময় নিজেরা মজা পেয়েছে,আনন্দ করেছে তারাও সেই একই গল্পে জড়িয়ে পড়ে বুঝতে পারে না।এ মৃত্যু পরম্পরা হয়ে যায় যতদিন শিশিরের মত ছেলেরা বেঁচে থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১০ সকাল ১১:০৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




