somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেষ চিঠি

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


হাইওয়ের পাশে টঙ্গের দোকান,একটা মোড়ের ঠিক পরেই। প্রতিদিন একটা না একটা দূর্ঘটনা এখানে হবেই। আশেপাশে জনবসতি তেমন নেই,থাকলে মানুষ এই মোড়ের যে একটা খারাপ দিক আছে এতো দিনে তা সবাই জানতো।এই দোকানে বিক্রিও হয় না তেমন,সারাদিন চুলা জ্বালিয়ে রাখার পয়সাও ওঠে না। তবুও রহমত শাহ এখান থেকে দোকান সরিয়ে গঞ্জে নেয় না।অ্যাকসিডেন্ট হলেই নড়েচড়ে বসে রহমত শাহ। কোনও এক অদ্ভুত কারনে অ্যাকসিডেন্টের পরে অনেক মানুষ তার দোকানে ভীড় করে। ভাঙা হাত নিয়ে অন্য হাতে সিগারেট টানছে কেউ। কেউ ছিলে যাওয়া,কেটে যাওয়া হাত পা নিয়ে অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে। টাকা চাইতে হয় না, দামের চেয়ে অনেক বেশি দিয়ে যায় কেউ কেউ।হয়তো মৃত্যুর কাছাকাছি থাকে বলেই টাকাকে তুচ্ছ মনে করে,কিন্তু সবাই তা করে না। তবে ভিন্ন চিত্র হয় যখন কোনো অ্যাকসিডেন্টে সবাই মারা যায়। রহমত শাহ দ্রুত সব দামিদামি জিনিস কুড়িয়ে নেয়। আজও ট্রাকের নিচে পরে একটা মরট সাইকেল। ট্রাকটা একবারের জন্যও থামায় নি,একই গতিতে এগিয়ে গেছে।গাড়ির কিছু অংশ ছিটকে পড়েছে আশেপাশে।রহমত শাহ দ্রুত গিয়ে ব্যাগটা কুড়িয়ে নিল। লোক জমতে শুরু করেছে, হাসপাতালে নিতে চাচ্ছে কেউ কেউ।কিন্তু কেউ সাহস করছে না। চায়ের দোকানে ভিড় জমতে শুরু করেছে, একটু পরে কেউ একজন লাশটা নিয়ে গেল। এখন চারিদিক একদম ফাকা। ব্যাগ থেকে সব বের করতে লাগলো রহমত। একটা ক্যামেরা, কিছু ফাইল আর একটা চিঠি। চিঠিটা পড়তে শুরু করল রহমত।

প্রিয় তুমি,
কতবার চেয়েছি তোমার কথা আর ভাববো না , ও চোখে তাকাবোনা। কিন্তু আমি যে ক্রমশ্য ডুবে যাচ্ছি গভীরে। যেখানে তুমি আমার। প্রখর রোদে এক টুকরো মেঘ হয়ে তুমি আমার আকাশে এলে । যেন এ আমার অনেক দিনের চাওয়া। এতোটা মুগ্ধ না করলেও পারতে , এখন আমি এই রাজপথে একা হাটতে পারি না। এ পরিচিত পথও এখন সঙ্গী খোজে। শুধু একটিবার চলো না দুহাত এক করে খোলা আকাশের নীচে গিয়ে দাড়াই, নয়তো কোনো সাগর পাড়ে। কিছু সুখের ঢেউ ছুয়ে যাক তোমার চরন, যে চরনে আমি পরিয়ে রেখেছি ভালোবাসার নুপুর। তুমি সাগর তীর থেকে কিছু ভালোবাসার নূড়ি কুড়াবে, আবেগের দু হাত পেতে আমি তুলে রাখবো সব ভালোবাসা। সন্ধ্যা হলেও বাড়ি ফিরে যাবোনা, আর ফিরবোইবা কেন? আমার পৃথিবীতো খোলা চুলে সাগর পাড়ে দাঁড়িয়ে।সত্যিই ভাবিনি এতোটা মিশে যাবো তোমাতে। আরো কিছুক্ষন না হয় থেকে যাও, আরো কিছু তপ্ত দুপুর ,রক্তিম সন্ধ্যা আথবা জোছনা মাখা চাদনী রাত ।
ইতি তোমার আমি।

কাগজটা ছিড়ে ফেলে দিল রহমত, কারো প্রিয় তুমি হারিয়ে ফেলল হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসা।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:১৭
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×