হওয়ার কথা ছিল তাহরির স্কয়ার কিন্তু হয়ে গেলো ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর। এখন সেখানে লীগ নেতাদের ভাষণ শোনান হছে। অবস্থান কর্মসূচির নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে ছাত্রলীগের হাতে। দুঃখিত বামপন্থী বন্ধুরা। এবারও আপনারা আন্দোলনের রেশ ধরে রাখতে পারলেন না। আপনারা যে আন্দোলনের কথা বলে আমাদের মত সাধারণ জনগণকে ঘর থেকে বের করে শাহবাগে আনলেন তা আর জনগণের আন্দোলন রইল না। এটা এখন আওয়ামী লীগের দলীয় আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। যে শাহবাগ তাহরির স্কয়ার হওয়ার কথা ছিল তা এখন রাসেল স্কয়ার হয়ে গেছে।
সন্ধ্যায় অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করতে আসা সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর ওপর বোতল ছুড়ে মারা হয়। এর পর থেকেই শাহবাগের নিয়ন্ত্রণ ধীরে ধীরে ছাত্রলীগ আর যুবলীগের নেতাকর্মীদের হাতে চলে যেতে থাকে। আরও একবার জনগণের আন্দোলন ছিনতাই হল। ব্লগার এবং অনলাইন আক্টিভিস্টরা যে গণজাগরণের ডাক দিয়েছেন তার ক্রেডিট এখন সরকার নিতে চাইছে। আর উল্টা-পাল্টা কথায় পারদর্শী আওয়ামী নেতাদের একজন আইন প্রতিমন্ত্রী বেফাঁস কথা বলে জামাত-শিবিরের হাতে আরেকটা সুযোগ তুলে দিলেন।
‘জনগণ আগে এভাবে মাঠে নামলে রায় হয়তো অন্যরকম হতো’
এখন চাইলেও শাহবাগে বসে সরকারের আঁতাত আর দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলা যাবে না। । চাইলেও হলমার্ক, ডেস্টিনি আর আওয়ামী লীগে ঘাপটি মেরে থাকা রাজাকারদের বিচার চাওয়া যাবে না। যদি চাই তাহলে আর শাহবাগে আধ ঘণ্টাও বসতে দেয়া হবে না, যেখানে দুই রাত পার করে ফেলেছে। অথচ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের পর এই প্রথম আরেকটা গন আন্দোলন শুরু হয়েছিলো যেখানে সর্বস্তরের জনগণ সমর্থন করেছিলো, যার নেতৃতে ছিল ব্লগার এবং অনলাইন আক্টিভিস্টগন। সবার অংশগ্রহণ দেখে বন্ধুদের সাথে গাজীপুর থেকে ছুটে গিয়েছিলাম শাহবাগে গত সারারাত পার করেছি আন্দোলনকারীদের সাথে। কিন্তু এখন এর রং কেমন ফিকে হয়ে আসছে। যেভাবে দলীয় লোকজন এসে এর ক্রেডিট নিতে চাইছে তাতে আশঙ্কা হয় এর সুফল কি আমরা আদায় করতে পারব?