somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আস্তিক,নাস্তিক এবং ধর্মান্ধতা

২৮ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আস্তিকঃ ধর্মীয় বিশ্বাসকে মুছে ফেলা অসম্ভব ।
নাস্তিকঃ কাল্পনিক সত্ত্বাকে বিশ্বাস করা অসম্ভব।

আস্তিক-নাস্তিক ক্যাঁচালের এই ব্যাপারটা সবসময়ই থাকবে, কাল্পনিক সত্ত্বাকে প্রমাণ করা যেমন অসম্ভব নাস্তিকদের কাছে, তেমনি ধার্মিকদের ধর্মের প্রতি বিশ্বাস চিরকাল থাকবে ।সব কিছু জেনেও আস্তিক নাস্তিক যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে।
ধর্মে বিশ্বাসীদের কাজকর্মের উদাহারন দিতে গিয়ে কিছু ধর্মান্ধের অনৈতিক কাজের উদাহারন দিয়ে কিছু নাস্তিক,
মুসলিমদের ধর্মের পথ হতে কতটুকু সরিয়ে আনতে পেরেছেন সেইটাও বুঝতে পারছিনা।
ধর্মাদ্ধের ধর্ম নাই । আছে লোভ , ঘৃণা , চতুরতা ।একদিন ধর্ম এনে দিয়েছিল আলো । আজ তার কংকালের হাড় আর পঁচা মাংসগুলো ফেরি করে কিছু স্বার্থান্বেষী ফাউল লোক । মানুষের পৃথিবীকে শত খন্ডে বিভক্ত করেছে । ঈশ্বরের নামে তৈরি করেছে শ্রেণিভেদ । পুরো পৃথিবী যদি একটি পরিবার হয়, তাহলে পৃথিবীর পরিবারের লোকেদের মধ্যে ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন দ্বন্দের কারনে, লজ্জায় একদিন পৃথিবী আত্নহত্যা করবে । আস্তিক নাস্তিক নিয়ে ক্যাঁচাল না করে আপনার আমার নিজেদের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে সব কিছু যাচাই বাচাই করে .........সামনের পথটা পাড়ি দেওয়াই একজন বুদ্ধিমানের কাজ হবে । এবং যার যার ধর্মে তাকে বিশ্বাসী হতে হবে ।


শাহবাগ আন্দোলনরে পর থেকে যা দেখলাম নাস্তিক হওয়াটা এখন একটা ফ্যাশান হইয়া গেছে ...আর ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু লেখলেই, গালি দিলেই ওই লেখক মুক্তমনা, সুশীল... কেউ ওই লেখার বিরুদ্ধে মত দিলে অথবা প্রতিবাদ করলে সে ছাগু, শিবির ব্লাহ ব্লাহ...

আমাদের দেশে নাস্তিকতা এখন ইসলাম ধর্মরে গালি দেওয়া ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না... অথচ তাদের কেউ কিন্তু বাধ্য করতাসে না ইসলাম ধর্ম মানতে...

সবই লোক দেখানো আর লাইমলাইটে আসার কৌশল ...

ধর্ম বিশ্বাস করে অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি খুব অসাধারণ একটা ব্যাপার। Muhammad Jafar Iqbal স্যারের একটা কথা খুব ভালো লাগে! "আমি যে ধর্মেরই হই না কেন, অন্য ধর্মের মানুষদের সম্মান করতে হবে।"

নাস্তিকতাও একজন মানুষের নিজের ধর্ম! একজন মুসলিম/হিন্দু ধর্মপ্রচারক যেমন তার ধর্ম প্রচার করতে পারেন, একজন নাস্তিকও যুক্তি দিয়ে তার নাস্তিকতা প্রচার করতে পারেন। কিন্তু কক্ষনোই একজন মানুষ অন্য ধর্মকে কটাক্ষ করে কথা বলতে পারেন না! আপনি না জেনে মুহাম্মদ (স) এর বহুবিবাহ নিয়ে কথা বলতে পারেন না, পঞ্চপান্ডবের এক স্ত্রী দৌপদ্রীকে নিয়ে কোন কথা বলার অধিকার রাখেন না, বুদ্ধের বাড়ি পালানো নিয়ে উপহাস করতে পারেন না, ভার্জিন মেরীর পবিত্রতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন না! কোনভাবেই না!!! একেক জনের নিজের ধর্মবিশ্বাস তার নিজের কাছে। কিন্তু একজন নাস্তিক হিসেবে আপনি মুহাম্মদ (স) কে মোহাম্মক বলবেন, রমজানের ইতিহাস নিয়ে নোংরা বিদ্রুপ করবেন, মেরীর সতীত্ব নিয়ে ইচ্ছেমতো কথা বলবেন, সেটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আপনার নাস্তিকতার যুক্তি আপনার অধিকার। কিন্তু আপনার বিন্দুমাত্র অধিকার নেই আমার বিশ্বাস, আমার ধর্মকে নিয়ে কটাক্ষ করার, উপহাস করার; সে আমি যেই ধর্মেরই হই না কেন।

আমি অবশ্যই জামাত-শিবিরের বিচার চাই। কোনভাবেই ব্লগারদের কোন ধরনের হেয় করা গ্রেপ্তার অথবা হত্যা, সহিংসতা সমর্থন করি না। কোন সমাজ, কোন ধর্ম তা সমর্থন করে না! কিন্তু একই সাথে ধর্মকে হেয় করে, কটাক্ষ করে লেখা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আসিফ মহিউদ্দিন, ওমর ফারুকদের মতো উগ্র নাস্তিকরাও কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়! আমি তাদের উপর আক্রমণ চাই না। কিন্তু তারা যৌক্তিকভাবে নিজেদের নাস্তিকতা প্রচার করবেন সেটাই কাম্য। অন্য কোন ধর্মকে গালিগালাজ করবেন, সেটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়!

উগ্র ধর্মান্ধতা যেমন গ্রহণযোগ্য নয়, উগ্র ধর্মহীনতাও গ্রহণযোগ্য নয়। কোনভাবেই নয়! দুটোর বিরূদ্ধেই রুখে দাঁড়ানো দরকার।


ধরুন , মফিজ আপনাকে গালাগালি দিবার চায় , এখন আপনি বললেন " মফিজ , তুমি কোনও গালাগালি দিতে পারবা না ।" এটা শুনে মফিজ চিল্লায় উঠলো "আমার বাক-স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে , আপনি একজন ফ্যাসিবাদী লোক, আমার কণ্ঠ রোধ করা হয়েছে , ব্লা ব্লা ব্লা!! " । এর মানে কি দাঁড়ালো? গালাগালি না দিতে পারায় মফিজের বাক-স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে , কি তাই না ? এইবার আপনি বলুন মফিজের এই আচরণ কতটুকু যুক্তিযুক্ত ? মফিজের আর এইসব ব্লগারদের মধ্য পার্থক্য কি জানেন ? হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন । কোনও পার্থক্য নেই ।

বাক-স্বাধীনতা আপনার মতামত তুলে ধরার জন্য। আপনার চিন্তা-চেতনা মানুষকে জানানোর জন্য।আপনার কোন বিষয়ে অমত থাকলেও আপনি সেটা লিখে প্রতিবাদ জানাতেই পারেন। কিন্তু এই কমান্ডার ব্লগাররা কি করেন ? ইনাদের সমস্ত মতামত ধর্মের যেন বিপক্ষেই যায় , আলোচনার একমাত্র বিষয়বস্তু ধর্মের নেতিবাচক পোস্টমরটেম । ইনাদের কাছে মানুষের অনুভূতি নাকি নুনুভুতি !! ওক্কে ভাইজান , আফনাদের বাক-স্বাধীনতার অনুভূতিও আমার কাছে নুনুভুতি !! আপনাদের এই বাক-স্বাধীনতার অর্থ যদি হয় মানুষের অনুভূতি নিয়ে খেলা করার বা আঘাত করার স্বাধীনতা , তাহলে এই ধরনের বাক-স্বাধীনতায় ছরছর করে মুতে দিলাম।

এখন আবার কয়েকজন বিমর্ষ হয়ে দিন কাটাচ্ছেন কারণ তাদের নাকি সাংবিধানিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। অনেকে আবার এইটা শুনে নিজেদের ইজ্জত হরণ হয়েছে টাইপের হাহাকার শুরু করেছে। হ্যাঁ, সংবিধানের তৃতীয়ভাগে ৩৯ অনুচ্ছেদে বলা আছে বাকস্বাধীনতার কথা , এই বাক-স্বাধীনতা আপনাদের কতটুকু অধিকার দেয় ? সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগের ১২ অনুচ্ছেদে বলা আছে ‘’ সর্ব প্রকার সাম্প্রদায়িকতাবিলোপ করা হইবে ‘’। আপনাদের লেখা কি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা¬কে উস্কে দেয় না ? অবশ্যই দেয় । সুতরাং সংবিধানের ৩৯ ধারায় যে স্বাধীনতার কথা বলা আছে তার অপব্যবহারের মাধ্যমে ১২ অনুচ্ছেদকে অমান্য করছেন। সুতরাং সংবিধানের কাছে আশ্রয় চেয়ে লাভ নেই। সংবিধান বা সাংবিধানিক অধিকার তার জায়গায় ঠিক আছে, কিন্তু আপনারা আপনাদের জায়গায় ঠিক নেই।এই ধরনের কিছু আবাল চু** ব্লগারদের জন্য ব্লগার মাত্রই নাস্তিক উপাধি পেয়েছে সবাই ।।

যে যে মত , ধর্মেই বিশ্বাস করুক সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার । আর তাতে অন্যের ভিন্নমত থাকতেই পারে । তার মানে এই না যে সেই ধর্মকে বিশ্রী ভাবে গালাগালি করতে হবে হই আমি নাস্তিক আর ন্যাস্টিক । আজ যদি হিন্দু, খ্রিস্ট বৌদ্ধ ধর্মকে কেউ গালাগালি করত তবে স্বভাবতই সেই ধর্মানুসারীদের সেটা খারাপ লাগত । নাস্তিক হলে হতে পারেন , নিজ মত প্রচার করতে পারেন তবে অন্য ধর্মকে নোংরাভাবে উপস্থাপন করার অধিকার আপনাদের নেই ।


মানুষের সবচেয়ে বড় ধর্ম হল মনুষ্যত্ব । যদি কারো মাঝে এটা বিরাজমান থাকে, তাহলে সে আর যাই হোক, কোন ধর্ম বা ধর্মের প্রবক্তাকে গালিগালাজ করার মত মানসিকতা দেখাবে না ।আমরা উগ্রবাদি ধার্মিকদের ঘৃনা করি । তাদের এমন অনেক কাজ কর্ম আছে, যেগুলো তাদের নিজ ধর্মের অনুসারিদের নিকটও সমালোচিত হয় ।কিন্তু তাই বলিয়া যারা উগ্রভাবে ধর্মদ্রোহী,তারা পার পাইবে কেন??
নিচ মানুসিকতা নিশ্চয় কারো কাম্য নয় । তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে সোচ্চার হইতে পার,,তোমাদের সাথে থাকিবে বহুজন । কিন্তু যার ধর্ম,তাহাকে তুমি গালি দিবা কোন স্পর্ধায়??


আআ
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×