somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তোমার দেয়া অঙ্গুরীয় খুলতে পারিনি

১৪ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



খুব সম্ভবত ২০১৩ সালের রোজার ঈদ ছিলো সেটা (কোরবানিরও হতে পারে)। সন্ধ্যা পেরিয়ে সবে রাত। আটটা বেজে থাকবে। ঢাকার বিশেষ এক অভিজাত ক্যাফে। প্রথমবার সেখানে গেছি। খদ্দের ছিলোই না বলতে গেলে, দুয়েকজন। তখন কাউন্টারে বিশেষ একজন তরুণী ছিলো, (যাকে নিয়ে অনেক কবিতা লিখেছি এই ব্লগে, কিন্তু রুমা নয়) আর ছয় ফিট লম্বা কদাকার চেহারার দাড়িওয়ালা দানব। ক্যাফে আমেরিকানো খেয়েছিলাম। কুচকুচে কালো কফি। দাম সম্ভবত ভ্যাট সার্ভিস চার্জসহ ১৫৫ টাকা নিয়েছিলো। ওটাই সবচেয়ে সুলভ কফি ছিলো সেখানে। যাক, এগুলো নেহাত তুচ্ছ অর্থহীন বিষয়। আমি বরং সরাসরি প্রসঙ্গে আসি। কাউন্টারের সেই মেয়েটি ছিলো অপূর্ব সুন্দরি। সত্যি, অস্বাভাবিক সুন্দরি। নিটোল সুশ্রী মুখশ্রী তাকে পৃথক করেছে আর দশজন সাধারণ মানুষের থেকে। এমনকি তার চেহারার বর্ণনা দিতেও দ্বিধা হচ্ছে। তার রূপের বর্ণনা দিলে, যারা তাকে একাধিকবার দেখেছে, সেই বিশেষ ক্যাফেতে যাওয়া আসা ছিলো বা আছে এমন যে কেউ খুব সহযে চটজলদি শনাক্ত করে বসবে: আরে, এ তো সেই মেয়েটা।

যাই হোক ঈদের দিন, খদ্দেরশূন্য ক্যাফে। আমি বেশ দীর্ঘ সময় ছিলাম। যেমন বলেছি, সেটাই ছিলো আমার সেখানে প্রথম যাওয়া। কিন্তু সেদিন সে আমার দিকে একবারের জন্য তাকায়নি অব্দি! এজন্য তাকে দোষ দিতে পারি না। সেদিন আমার পোষাক বেশভূষা ভালো ছিলো না। পুরনো জামাকাপড়, পায়ে চোটি, চুল আলুথালু। আসলে ব্যক্তিগত জীবনে বিশেষ কিছু সমস্যার দরুন অনেকটাই উদ্ভ্রান্ত ছিলাম। কিন্তু সেখান থেকেই এক অদ্ভুত ভালোবাসার গল্প শুরু হয়েছিলো দুজনের। এভাবেই পরবর্তীতে যেতে আসতে আসতে যেতে আমরা পরস্পরকে ভালবেসেছিলাম। এবং এক পর্যায়ে এমন অনিবার্য পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছিলো যে, সেই মেয়েটা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে একদিন একেবারে কেঁদে ফেলে। মনে পড়ছে, তার সে অশ্রু সজল নিষ্প্রাণ ব্যথাতুর চোখ, কথা জড়িয়ে আসা। হয়তো আর তেমন কিছু নেই তাকে বা এ বিষয়ে বলার। হতে পারে সে আজও সেখানেই আছে। সেই ঘটনার পর আর কোনওদিন যাইনি। এরপর দুয়েকবার তাকে সড়কে দেখেছিলাম।

আমি তাকে ভালবেসেছিলাম। এখনও ভালবাসি। জীবনভর ভালবেসে যাবো। জানি, একইভাবে সেও আমাকে মনে রাখবে, গভীর ভালবাসায় শ্রদ্ধায়। মনে পড়ছে, ক্যাফের ভিতর কতো লুকোচুরি আমাদের। বারবার আড়চোখে তাকানো। স্মিত মুখ। চোখে চোখে কথা বলা। পথ চলতে গিয়ে এরকম বহু রমণী অল্পবিস্তর আমাকে ভালবেসেছিলো, আমার প্রতি আকর্ষিত হয়েছিলো। সেই ক্যাফেতে আসতো এরকম আরেকজন তরুণীর ব্যাপারেও শতভাগ নিশ্চিত। এদের মাঝে অনেকে অনেক প্রতিকূলতার মাঝেও সে ভালবাসা প্রকাশ করেছিলো, অনেকে করেনি। যারা করেনি, হয়তো তাদের ভালবাসাতেও অনেক গভীরতা ছিল। যাই হোক এইসব রমণীদের মাঝে শুধুমাত্র দুজনের চোখ থেকে আমি অশ্রু ঝরতে দেখেছিলাম। এদের একজন রুমা আরেকজন এই মেয়েটি। কিন্তু এর নাম নেয়া ঠিক সমীচীন হবে না। হতে পারে সে এখনও সেখানে আছে। আর আমি তার কোনওরকমের কোনও ক্ষতি বা বিড়ম্বনার কারণ হতে চাই না, চাইনি। না এখন, না তখন। কিন্তু রুমা আজ আর তার আগের জায়গায় নেই। আসবেও না কোনওদিন। এমনকি ওর নাম যে রুমা, সেটাও নিশ্চিত নই, আরেকজনের কাছে জেনে নিয়েছিলাম। সেই ব্যক্তি যে সত্য বলেছিলো বা সঠিক মেয়েটিকেই শনাক্ত করেছিলো, এ ব্যাপারেও পূর্ণরূপে নিশ্চিত হতে পারি না।

যাই হোক এ গল্প রুমার নয়, সেই মেয়েটির। সেই ২০১৩’র রোজার ঈদে যাকে প্রথম দেখেছিলাম। তারপর যেতে আসতে আসতে যেতে পরস্পরকে ভালবেসেছিলাম। জানি না, আর কি লিখবো! একটি কথা আজ এখানে অকপটচিত্তে বলতে পারি, পৃথিবীতে একজন রমণী যদি একজন পুরুষকে সত্যিকার ভালবেসে থাকে, তবে সেটা ছিলো ওর আর রুমার আমার প্রতি এ ভালবাসা। আমি কখনওই সেভাবে তদের প্রতি তেমন আগ্রহ প্রকাশ করিনি। ওরা খুব সুখী স্বচ্ছন্দ জীবনযাপন করুক প্রিয়তম মানুষ ও আপনজনদের সঙ্গে নিয়ে। ঢের অকৃত্রিম শুভকামনা রেখে যাচ্ছি আজ আমার এ সামান্য লেখার মাধ্যমে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:২৬
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×