এই শীতে মনে পড়বে তোমাদের। আমাদের টগবগে যৌবনের দিন। টেলিভিশনে দেখা কিয়েভ শহর। তখন যুদ্ধ ছিলো না। রাস্তাজুড়ে ম্যাপল গাছের সারি। ঝলমলে সূর্যমুখী। পরিপাটি উদ্যান, এভিনিউ। সুখী মানুষের হুল্লোড়। পাখিরা প্রদোষের আরক্তিম আলোয় নির্বিরোধ ঘরে ফিরে যেতো।
কামনার মিরা বাজিয়ে আমরা গিয়েছিলাম বহুদূর। অজানা শহরের উন্মুক্ত মিলনায়তনে অগণ্য দর্শনার্থীর সঙ্গে সার্কাস দেখেছিলাম। দারুণ উপভোগ্য ছিলো। মনে পড়ছে কিশোর সার্কাস শিল্পীর চার বলের জাগলিং। যার পর নেই মুগ্ধকর। বলেছিলে, ইতিপূর্বে চার বলের দেখোনি। প্রথমবার। তারপর শেষার্ধে ভয়ঙ্কর খেলা। ত্রিশূল সদৃশ তীক্ষ্ণ ফলাযুক্ত গোলাকার ধাতব কাঠামো শূন্যে ছুড়ে শুয়ে পড়েছিলো জনৈকা নারী। মুহূর্তকাল উড়ে তাকে ঘিরে তীব্রভাবে গেথে গিয়েছিলো। খেলা চলাকালীন আতকে উঠে শার্টের আস্তিনে মুখ লুকিয়েছিলে। সত্যি, ঘটনাক্রমের এ ধারাবাহিকতা কাকতালীয়। বারবার অনুষ্ঠান অসমাপ্ত রেখে ফিরতে হয়েছিলো।
মনে পড়বে তোমাদের নাম। দীর্ঘ কথোপকথন শেষে চলে যাওয়া উজবেক পর্যটক। ভাঙাভাঙা ইংরেজিতে স্মিত হেসে বলেছিলো, সেখানকার নরম ঘাশ সোনালী, অবিকল স্থানীয় স্বর্ণকেশী কিশোরীর মতো। মনে পড়বে হলদে অপরাহ্নগুলো। তুর পাহাড়ে পাতা পরা আদিম মানুষের মুখ। ঢাল বেয়ে নির্বিকার নেমে যাচ্ছে ধীর পা’য়ে। পুনঃপুন তার সে স্বেচ্ছামৃত্যুও মনে পড়বে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:০৫