somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবন দৃশ্যের পরতে পরতে-----------------------------------

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছয় সাত বছর বয়স--- তখন থেকেই পুত্র আবিষ্কার করলেন তিনি একা--- আর সবার এত এত ভাই বোন আছে শুধু উনার কেন নেই--- একদিন বলে উঠলেন, ''বাবা তোমারা তো অনেক লাকি ছিলে, অনেক ভাই বোন, সবসময় খেলাধুলা করতে--- বলেই বেরসিকের মতই বলে উঠলেন,'' দাদু ওয়াজ অল স গ্রেট, হি প্রডিউসড লটস অফ চিলড্রেন '' ! মুচকি হেসে বুঝাতে চেষ্টা করলেন এই জায়াগায় আমি উনার দাদুর মত হতে পারিনি। নদীর এপার কয় ছাড়িয়া নিঃশ্বাস ঐপারেতে সকল সুখ আমার বিশ্বাস । আমি উল্টোটাই ভাবি-- ওর মত একমাত্র সন্তান হলে হয়তো মনোযোগ বেশিই পেতাম--পুত্রকে একমাত্র হওয়ার সুবিধা বুঝাতে বুঝাতে দিন যায়। উনি নাছোড়বান্দা-- আমরা বাবা চাচারাই ভাগ্যবান ! হয়তোবা তাই ।

দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলি, আমাদের বাবা অনেক ব্যস্ত ছিলেন-- কালো চশমার ফাক গলে মাঝে মধ্যে তাকাতেন-- আমরা সবাই ভীষণ ভয় পেতাম-- এমনকি উনি ঘুমে থাকলে জুতো খুলে বাবার রুমের বারিন্দার অংশটুকু পার হতাম--ম্যক গাইভার দেখতে বসলে হটাৎ বাবা আসার শব্দে পড়িমরি দৌড় দিতে গিয়ে উলটে পড়তাম। পুত্র আমার এইসব গল্পকে আকাশ কুসুমই হয়তো ভাবেন--- চোখ বড় বড় করে তাকায়-- তার বিশ্বাস হয়না-- এত ভয় পাওয়ার কারন কি?? বলে বসে, দাদু কি তুমাদের ভালোবাসতো না?? বলি '' নারে খোকা, এত এত বেশি ভালোবাসতেন যে আমাদের কে লালন পালনের জন্যে অনেক কাজ করতেন যে নিজের ঘুমানোর সময়টা ও পেতেন না। পুত্র ঠোট উলটিয়ে বলে, কি জানি , হাগ ও করতনা এটা আবার কিরকম ভালোবাসা !
মাঝে মাঝে ভাবি ছেলে তার ''আমরা লাকি ছিলাম'' এই বিশ্বাস নিয়ে বেচে থাকুক-----------------------।

৮ বছর বয়সে মায়ের কাছে আবদার করলেন উনার একটা কিউট সিস্টার চাই-- মা বললেন, নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে সিস্টারের জন্যে চাইতে--- পুত্রের অগাধ বিশ্বাস আল্লাহর প্রতি। উনি নামজ পড়ে দোয়া শুরু করলেন।
২ বছর পর উনার দোয়া কবুল হল--- সেকি আনন্দ চোখে মুখে--পুত্রের নিঃসঙ্গতার অবসান হল---দিন রাত উনার বোনকে নিয়ে ব্যস্ত--- মায়ের অর্ধেক কাজ উনি নিজেই করে ফেলেন। আল্লাহর প্রতি সবসময়ই কৃতজ্ঞতা। আল্লাহ ইজ গ্রেট।
দিন যায়-- বোন হামাগুড়ি দিতে শুরু করে-- এটা ওটাতে ভাগ বসায়--- পুত্রের খেলনার একটা বক্স আছে-- সেটাতেও সে খেলবে-- পুত্র আমার লজ্জায় কিছুই বলেন না-- একমাত্র বোন তো-- খেলুক, নিয়ে যাক-- এরকম একটা ভাব। বোন হাঁটাহাঁটি পা পা শুরু করে---
পুত্র যাহাই হাতে নেন সন্ত্রাসীর মত উনার বোন হামলে পড়ে--- উনি যেখানেই যান বোন ও উনার পিছু পিছু-- সবকিছুতেই উনার ভাগ চাই। আমি মুচকি হাসি--- পুত্র নিরুত্তর।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান খাল খনন করেছিলেন--- কথিত, উনি খাল কেটে কুমির এনেছিলেন---পুত্রের ও একি দশা-----দোয়া করতে করতে বোন এনেছেন------ সেই বোন উনার বাবার আদর টাও উনাকে পেতে দিচ্ছেনা ।
আমি বৈরাগী--- মাঝে মাঝে গিয়ে হাজির হই । একদিন পুত্রকে জড়িয়ে ধরে গল্প করছি, উনার বোন এসে মাঝখানে জোর পূর্বক পুত্রকে সরিয়ে শুয়ে পড়লো--- আমি শুধু তারই বাবা--- পুত্রের না। করুন দশা আরও বেড়েছে--- বেচারা পুত্রকে যখন মা বকা দেন তখন মায়ের সাথে দাড়িয়ে উনার বোন ও উনাকে আঙ্গুল তোলে বপ বপ করতে থাকেন--------------------------।

বাবাকে নিয়ে পুত্র কন্যার টানাটানি--- কন্যার সারাক্ষন নতুন বুলি ফুটা মুখে তাকে নিয়ে আমারই শিখিয়ে দেয়া গান, আমাকে ভাবাতুর করে তোলে------
জীবন এভাবেই--- দৃশ্যের পরতে পরতে সুখ লুকিয়ে রাখে---অনেক পাওয়া না পাওয়ার হিসেব ভুলিয়ে দেয়--- অমরত্তের স্বাদ জাগায়--- অতীতের সাতকাহন ভুলিয়ে নিয়ে যেতে চায় আগামীর স্বপ্নলোকে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×