খুব মনে পড়ছে---- একদা এক গ্রাম্য বিশাল প্রান্তর। এক আত্মীয়ের বাড়ি। অজপাড়া গাঁ। আইল ধরে হাঁটছি। বাজার বসেছিল। সদাই শেষে ফিরতে ফিরতে প্রায় সন্ধ্যা। দুরের গাঁ কে মনে হচ্ছিল যেন পৃথিবীর শেষ কোন সীমানা।। গোধূলিতে অদূরে দু একটা পাখির নীড়ে ফেরার তাড়াহুড়া। হাঁটছি তো হাঁটছিই... পথের শেষ নেই।। যত যাই মনে হচ্ছিলো ওই গোধূলির শেষ সীমানার গ্রামটা ততই দূরে সরে যাচ্ছে।।ভীষণ হতাশা গ্রাস করছিলো। সাথের কাজিন ভাইয়া প্রবোধ দিচ্ছিলেন।উনি আবার ভৌতিক গল্প করছিলেন।। গা ছমছম পরিবেশ।
আজ সেই প্রান্তরে।।দুরের গ্রামটা নেই। ঐখানে অন্য একটা মানুষ।। যতই যাচ্ছি ততই সে দূরে সরে যাচ্ছে। সাথেও কেউ নেই।।ভাবলেশহীন খুঁজাখুঁজি। চাঁপা কষ্ট। দিগন্ত অস্পষ্ট ---- পাছে ভয় মিথ্যে মরীচিকা যদি হয়। নীড়ে ফেরার পাখিগুলো ঠিকানা খুঁজে পায়।। হয়তোবা আমিও---- হয়তোবা না।।
ছুটো বেলার কথা। বাসার ছাদের আম গাছ। লাল লাল ডুল পিঁপড়া ছাদের রেলিং ধরে হাঁটাহাটি করত । পিঁপড়া গুলো যেন কেমন কেমন। ধরতে গেলেই উলটো শাসানি দিত। আমার আবার আরেক অসুখ ছিল। নিজেকে দুঃখ দেয়ার অসুখ। পিঁপড়া ধরে হাতের উপর ছেড়ে দিতাম।এদিক অদিক গন্ধ শুঁকে। অপেক্ষা করি কখন সেই দুঃখ সুখের কামড় দিবে । দিল কামড় -----উফফ। চোখের মধ্যে পানি এসে যায়। এই কষ্ট পাওয়াতে ও সুখ। অন্য রকমের সুখ। সুখ দাতাকে আবার পিষে মেরে ফেলতাম। কারন উনি দুঃখ দিয়েছেন । এটাও এক ধরনের সুখ। বিজিতের সুখ। সব কিছুতেই সুখ।। মরতে পারলে মনে হয় আর বেশি সুখ। লাশ হয়ে খাটীয়ায় শুয়ে সবার কান্না দেখা, এই কল্পনা সেটাও কি সুখ ? নাকি অসুখ ? নাকি কেহই কাদবেনা !!
বর্ষার অঝোর বৃষ্টি । বাসার সামনের ছুটো খাল। আশেপাশে কচুর লতি শ্যাওলা আর কত কি।মনে হত যেন বাড়ির কাছেই নদী । ঢেউগুলোর কত কথা মনে পড়ে ...কাগজের নৌকা বানিয়ে কয়েকটা একসাথে ছেড়ে দিতাম। নিজের সাথেই নিজের প্রতিযোগিতা । কুনোটা উলটে পালটে শেষ । আবার কুনোটা পাড়ের সাথে ধাক্কা লেগে লেগে অনেক দূরে দৃষ্টির বাইরে চলে যেত। আজ আমি জীবন চয়নে ... সেই নিজ সৃষ্ট কুনো এক কাগজের নৌকায় সঙ্গী অনেককেই পিছনে ফেলে অথবা অনেককেই সামনে রেখে চলি ... দোদুল্যমান স্বপ্নহীন---- গন্ত্যব্যহীন....।।
আবার, কাকে যেন কথ্য অথবা গদ্যে কোথায় অথবা সেথায় ---হয়তবা ভালবেসেছিলাম।
নোট খাতায় লিখা ছিল।খাতাটাও আজ হারিয়ে ফেলেছি।তন্ন তন্ন করে খুঁজি।
খাতাও নেই... তুমি ভালোবাসা ও নেই...।।
অনেকক্ষণ কিবোর্ডে হাত রেখে কিছু একটা লিখার চেষ্টা করছি। কিন্তু লিখতে পারছিনা।হাতগুলো কেমন যেন পাথর হয়ে গেছে।পাথরের কান্না দেখা যায়না, তবে পানিতে রাখলে পাথর ঠিকই বুদবুদ দেয়। আমার শরীর খানি পানিতে ডুবাই, দেখি এইভাবে বুদবুদ দেয় কি না...
আমি লিখছি সাথে সাথে আপনিও এগুলো পড়ছেন--- পাগলের প্রলাপ।ভাউ, পাগল হয়ে গেলেন নাকি??
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৪৪