somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর যাত্রা এবং অব্বাহত অগ্রযাত্রা...

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৭৪ সালের ১০ই ডিসেম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান দেশের বৃহত্তম নৌ ঘাঁটি বানৌজা ঈসা খাঁনের নামকরণ ও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তিনি নৌ বাহিনীকে আনুষ্ঠানিকভাবে মর্যাদার প্রতীক ন্যাভাল এনসাইন প্রদান করেন, তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যত্রুম এবং প্যারেড পরিদর্শন করেন। বঙ্গবন্ধুর সুদুরপ্রসারী দিকনির্দেশনায় স্বাধীন বাংলাদেশে নৌ বাহিনীর যাত্রা শুরু হয়। রাত দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে তৈরী হতে থাকে জাহাজ সংযোজন, বিভিন্ন স্থাপনা/ঘাঁটি নির্মাণসহ সার্বিক অবকাঠামোর উন্নয়ন। বঙ্গবন্ধুর নৌবাহিনীর সদস্যদের সুশৃংখল ও সুদৃঢ় অবকাঠামো নির্মানে সর্বাত্মকভাবে উদ্বুদ্ধ করেন। বানৌজা ঈসাখাঁনের কমিশনিং প্যারেড পরিদর্শনকালে তিনি সর্বস্তরের নৌ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের সুবিশাল সমুদ্র এলাকা ও সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় একটি সু-প্রশিক্ষিত ও শক্তিশালী নৌবাহিনী অত্যাবশ্যক। তিনি এ বাহিনীকে দক্ষ, সাহসী ও বিশ্বের অন্যতম নৌবাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টায় সংগৃহীত নৌবাহিনীর রণতরীগুলোর পারঙ্গমতা এবং নৌসদস্যদের রণকুশলতা পর্যবেক্ষণের জন্য তিনি বঙ্গোপসাগরে নৌবাহিনীর নৌমহড়া পর্যবেক্ষণ করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে জন্ম নেয়া আমাদের প্রিয় নৌবাহিনী যুদ্ধপরবর্তীকালে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের দূরদর্শিতা ও বিচক্ষণতায় দ্রুত প্রসার ও সমৃদ্ধি লাভ করে।

বঙ্গবন্ধুর মত একজন মহান ও বিচক্ষণ নেতা যে দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নৌবাহিনীকে একটি দক্ষ, সুসংগঠিত ও বিশ্বের অন্যতম নৌবাহিনী হিসাবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। প্রায় তিন যুগ পরে সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব পড়েছে তারই সুযোগ্য কন্যা বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর এবং এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে অত্যাধুনিক রণতরী, স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক রণকৌশল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নৌবাহিনীকে একটি ‘ডিটারেন্ট ফোর্স’ হিসেবে গড়ে তুলতে ঘাঁটি সুবিধাসহ অতি শিগগিরই সাবমেরিন সংযোজন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রথম যুদ্ধজাহাজ বিএনএস পদ্মা কমিশনিং অনুষ্ঠানে ভাষণকালে আরো বলেন, আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি ত্রৈমাত্রিক নৌবাহিনী গঠন করবো ইনশাআল্লাহ, যা আমাদের জলসীমায় যুদ্ধের সময় যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম হবে। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিশ্বশান্তির অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় লেবাননে জাতিসংঘ মিশনে একটি ফ্রিগেট ও একটি লার্জ পেট্রোল বোট যোগ দিয়েছে। আমি আশাবাদী যে, বৈশ্বিক জলসীমার নিরাপত্তায় আমরা বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম হবো।’ সংযোজিত হয়েছে যুদ্ধজাহাজসহ,বানৌজা মধুমতি, বরকত, তিতাস ও বঙ্গবন্ধুর মত বেশ কিছু অত্যাধুনিক জাহাজ।বঙ্গবন্ধুর মানস কন্যা ও বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথমবার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালনকালে নৌবাহিনীর অত্যাধুনিক জাহাজ বিএনএস মধুমতি কমিশন করেন এবং তিনি নৌবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অনুধাবন করে এর অবকাঠামোগত উন্নয়ন সক্ষমতা ও শক্তি বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশ হতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জাহাজ বাংলাদেশ নৌ বহরে সংযোজন করেছিলেন। এর মধ্যে বানৌজা বরকত, তিতাস, কুশিয়ারা এবং বিশ্বের অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র সজ্জিত ফ্রিগেট বানৌজা বঙ্গবন্ধু উল্লেখযোগ্য।

বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে তারই সুযোগ্য কন্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনএস বঙ্গবন্ধু কমিশনিং এর সময় বাংলাদেশ নৌ বাহিনীকে Three Dimensional Navy-তে পরিণত করার বিষয়টি উপলব্ধি করেন। সে চিন্তাধারা থেকেই নৌবাহিনীতে মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফ্ট ও সাবমেরিন সংযোজনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ নৌ বাহিনীকে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্থাপন করা হয়েছে School of Maritime Warfare & Tactics। এর ফলে নৌবাহিনীর সকলস্তরের নাবিক ও অফিসারদের পেশাগত মান বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও BN Hydrography & Oceanography Centre স্থাপনের ফলে সমুদ্র এলাকা জরীপের কাজে আমাদের নৌবাহিনী পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও আন্তর্জাতিক জরীপ সংস্থার সদস্যপদ, যা অত্যন্ত গৌরবের। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যত্রুমে বাংলাদেশের নৌ সেনারা অবজারভার ও কন্টিনজেন্টের সদস্য হিসেবে বিগত এক যুগেরও বেশী সময় ধরে কাজ করে আসছে। শান্তিরক্ষী হিসেবে নৌ বাহিনীর ব্লু হেলমেট তথা শান্তিরক্ষা কার্যত্রুমে আত্মপ্রকাশ ঘটে লাইবেরিয়ার UNMIL মিশনের মাধ্যমে। এ পর্যন্ত নৌ বাহিনীর সর্বমোট ২৪টি মিশনে ১২৯১ জন নৌ সদস্য প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অনুরোধে জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশ নৌবাহিনী থেকে শান্তিরক্ষা মিশনে জাহাজ প্রেরণের সম্মতি জ্ঞাপণ করেন। এরই ফলশ্রুতিতে ২০১০ সালের মে মাসে বানৌজা ওসমান ও বানৌজা মধুমতি ১ম বারের মত জাতিসংঘে Naval Deployment এর অংশ হিসাবে লেবাননে শান্তিরক্ষা মিশনে যোগদান করেছে।

জাতি গঠন কর্মকান্ডে সক্রিয় ভূমিকার জন্য নৌবাহিনীর প্রত্যেক সদস্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, তারা দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন, শৃংখলা রক্ষা ও চেইন অব কমান্ড প্রতিপালনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মর্যাদা বিশ্বমঞ্চে সমুন্নত রাখবে।

...সাথে আমার কিছু বংলাদেশ নৌ বাহিনীর জাহাজে উঠানো ছবি
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×