somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডিমার্কেশন

২৮ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলা কবিতার ধারা, উপধারা, গতিধারা, মূলধারা, বিকল্পধারা নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়ে গেছে। এখনো হচ্ছে। আরো হবে। নিজেকে যখন মাঝে মাঝে প্রশ্ন করি, আচ্ছা, এই যে কবিতা নিয়ে এত শোরগোল, এত হাকডাক, এত উচ্চারণ, দলাদলি, রেষারেষি, মুহূর্তে সারাজীবন কবিতা নিয়ে মেতে থাকা কোনো কবিকে হাতের ইশারায় বাদ করে দেয়া- এগুলোর মানে কী? আদতে কি কোনো মানে আছে! হয়তো আছে। হয়তো নেই। থাকুক বা না থাকুক, কবিতা নিয়ে আরো মাতামাতি, শোরগোল হোক। কোনো অসুবিধা নেই। তবে অসুবিধা হয় যখন হাতের ইশারায় একজন কবিকে অন্য এক জন কবি বাদ করে দেন। বাদ করে দেবার আগে আমাদের ভাবা উচিৎ হাতের ঠিক যেরকম ভঙ্গিমায় তাকে আমরা বা আমি বাদ করে দিচ্ছি, ঠিক সেভাবেই হয়তো আমাকেও বা আমাদেরকেও বাদ করে দেয়া হবে। যদি সেভাবেই আমাকে বা আমাদেরকেও বাদ করে দেয়া হয় তাহলে আমরা কি কষ্ট পাবো না? পাবো। অবশ্যই পাবো। সেটুকু কষ্ট হয়তো আমরা কর্মের মাধ্যমে অর্জন করে নেবার জন্যই অন্যের অর্জনকে খাটো করে দেখি। একটা ভালো লেখারও মূল্যায়ন করতে চাই না। কেন চাই না! হয়তো গোপনে গোপনে বেশ বুঝি, আমার নিজের লেখা তো এতটা ঋদ্ধ না; এখন যদি স্বীকার করি তাহলে পরোক্ষভাবে তো আমাকেই বর্জন করা হবে। এমন ভাবনা থেকেই হয়তো, একে অন্যকে অস্বীকার করে। অন্যের অর্জনকে তুচ্ছ করে দিতে চাই। কবি জীবনানন্দ বলেছিলেন, মানুষের মুখ এরা ম্লান করে দিতে ভালোবাসে। তিনি কাদের কথা বলেছিলেন, কাদের প্রতি ইঙ্গিত করেছিলেন, খুব না ভেবেই এর উত্তর অনুমান করতে পারি। মানুষের মুখ যারা ম্লান করে দিতে ভালোবাসে, আমি জানি, তাদের মুখও অম্লান থাকে না। ম্লান হয়ে যায়। ততোধিক ম্লান। আবার কেউ কেউ বিশেষ্য থেকে বিশেষণে রূপান্তরিত হয়ে যান। সময়ের ভিলেনরূপে তাদের কথা মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে যায়।

অনেকে হয়তো বলবেন যে, কবিতা বিচারের ক্ষেত্রে আবেগ দিয়ে বিচার করলে তো হবে না। করতে হবে যুক্তি দিয়ে। বুদ্ধি দিয়ে। হ্যাঁ, আমিও তাই চাই। শেষ কার লেখার মহত্ব আপনি স্বীকার করেছিলেন মনে আছে? এই প্রশ্ন অনিবার্যভাবে সামনে এসে দাঁড়ায়। আমি যেটা করি তা হলো, ভালো লেখার মহত্বকে স্বীকার করে নেই। ফেসবুকের স্ট্যাটাসকে অনেকেই কবিতার সমপর্যায়ের গুরুত্ব দিতে নারাজ। তারা বলেন, ধুর, ওইসব ্েটকে নাকি? আমি জানি টেকে না। ভার্চুয়াল জগত বলে ইমপ্যাক্ট তৈরির ক্ষমতা আরো কম। অন্তত প্রিন্ট মিডিয়ার চেয়ে। কিন্তু আপনি যখন একটা স্ট্যাটাস পড়ছেন, শেয়ার করছেন, অথবা স্ট্যাটাসের চমৎকারিত্বে মুগ্ধ হয়ে স্ট্যাটাস প্রদানকারীকে বাহবা দিচ্ছেন, তখন তো তার স্ট্যাটাসটি আপনার গভীরেই ঢুকে যাচ্ছে। আপনি নিজেই পরিণত হচ্ছেন হিউম্যান মিডিয়ায়। এরপর থেকে ওই স্ট্যাটাসটি আপনার সাথে সাথে ঘুরতে থাকবে। আপনার মাধ্যমেই হয়তো আরো দুয়েকজন বা আরো বেশি লোক, সৃজনশীল লোক ওই স্ট্যাটাস সম্পর্কে জানতে পারবে। স্ট্যাটাস প্রদানকারীর সাথে পরিচিত হতে পারবে। এভাবে তো আসলে তার চিন্তারই মূল্যায়ন হয়। আর্থিক বা বৈষয়িক লাভ তো কিছু নেই। মেধার মূল্যায়নটুকু অন্তত হয়। একজন ভালো, সৎ পাঠকের এই হলো দায়। তার নিজের ভালোলাগাটাকে জড়িয়ে ধরে নিজের ভেতর গুপ্ত রাখলে হয় না। ছড়িয়ে দিতে হয় যাতে আরো দুয়েকজন পাঠকের কাছে ভালো লেখাটা পৌঁছে যেতে পারে। সেটা স্ট্যাটাসই হোক বা ভালো কোনো লেখাই হোক। এই জন্য অবশ্য আপনাকে দুর্ভোগও পোহাতে হবে। কীরকম? অনেকে বলবেন, আরে প্রশংসা কেন করলো বুঝতে পারো? নিশ্চয়ই কোনো স্বার্থ জড়িত আছে। অথবা বলতে পারেন, গ্রুপিং করছেন, দলভারী করছেন, ফায়দা নেবার জন্য কৌশল অবলম্বন করছেন। এমন নানা কথা একজন সৎ পাঠকের কানে আসবে। এতে বিচলিত হবার কিছু নেই। নিজের কাছে সৎ থাকলেই হলো। অন্যের মেধাকে মূল্যায়ন করার মতো যোগ্যতা থাকলেই হলো। কে কী বললো, না বললো- ওইসব নিয়ে ভাবতে বসলে দিন চলে যাবে। আসল কাজই করা হবে না। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো এই যে, ভালো লেখার মূল্যায়ন করার জন্য আপনাকে যারা স্বার্থলিপ্সু আখ্যায়িত করছে তাদের কোনো যোগ্যতাই নেই। কারণ তারা একটা ভালো লেখার মূল্যায়নই করতে পারে না। অথবা মূল্য নিরুপণ করতে পারলেও সেটা স্বীকার করার মতো সততা তাদের নেই।

এটা কোনো সম্পূর্ণ নতুন পরিস্থিতি না। মাত্রার হেরফের নিয়েও এমনটা চিরকালই ছিলো এবং হয়তো থাকবেও। এগুলোর মধ্য দিয়েই পথ করে নিতে হয়। এগুলোর কণ্টকাঘাত সহ্য করেই পুষ্পের কাছে যেতে হয়। নবকুমাররা নাকি তাদের নিজেদের পরিবর্তন করতে পারে না।

এবছর যে কয়েকটি ভালো লেখা আমি পড়েছি, বিশেষত তাদের যারা বর্তমান সময়ে লিখতে আরম্ভ করেছেন, তেমন কয়েকটি লেখার কথা বলার লোভ সংবরণ করতে পারছি না। উল্লেখ্য, লেখাগুলোর অধিকাংশই ভার্চুয়াল মিডিয়া ভিত্তিক। আরো স্পেসিফিক্যালি বলতে গেলে, ফেসবুক ভিত্তিক। ফেসবুক বা এমন উন্মুক্ত পেজগুলোর সুবিধা হলো, এগুলোতে আপনি আপনার কথাগুলো, লেখাগুলো কারো কাছে ধরনা না দিয়েই প্রকাশ করতে পারবেন। আপনার পরিচিত জনের সাথে শেয়ার করতে পারবেন। কিছুটা লিমিটেশনও আছে। সেটা হলো প্রিন্ট মিডিয়ার মতো আমজনতার কাছে লেখাগুলো যায় না। আবার একথাও তো সত্য যে, প্রিন্ট মিডিয়ার আনুকুল্য পাওয়ার জন্য আপনাকে যে পরিমাণ অপেক্ষা করতে হয়, কাঠখড় পোড়াতে হয়, তা এখানে লাগে না। ফলে অসুবিধাকে ছাপিয়ে উঠে আসে সুবিধাই। ভালো-মন্দ, সুবিধা-অসুবিধা তো সব কিছুতেই থাকে। এটা স্বীকৃত। একে মেনে নেয়াই বরং ভালো।

বর্তমান দশকে লিখতে আরম্ভ করা কবি তানভীর আশিকের দুইটা স্ট্যাটাস অত্যন্ত কাব্যিক লেগেছিলো। জেনারেশন অব থিমটা খুব সুন্দর। চিন্তা উস্কে দেবার মতো। চলুন দেখা যাক,

বর্ষার ফুল হয় শাদা - কারণ বৃষ্টিতে রঙ ধুয়ে যায়
অন্যটি
পৃথিবীতে সবুজ রঙের কোনো ফুল নেই।

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, বর্ষার সব ফুলই কি সাদা হয়? এটা কি তথ্য? বর্ষার সব ফুল সাদাই হোক বা নাই হোক, আমাকে ভাবানোর মতো একটা নতুন দৃষ্টিকোণ তো কবি তৈরি করতে পারলেন। পাশাপাশি তৈরি করলেন একটা লজিক্যাল সিকোয়েন্স, বৃষ্টিতে রঙ ধুয়ে যাওয়ার। বৃষ্টিতে সহজাত রঙ না ধুয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। তবু তিনি যে নতুন একটা চিন্তার সাথে আমাদের পরিচিত করিয়ে দিলেন এখানেই তার মূল কৃতিত্ব। অন্যটির বেলায় বলা যায়, সবুজ রঙের ফুল থাকাটাই স্বাভাবিক। আমার জানা কেয়া ফুল তো সবুজই হয়। কিন্তু তার বক্তব্যের সবুজ আসলে সবুজের আদলে গড়ে ওঠা এক চলমান প্রতীক, ফুলও তাই। প্রতীকের কথা বাদ দিলেও তার ভাবনার নতুন ভঙ্গি পাঠককে মুগ্ধ করে দিতে পারে।

খুব ভালো লেগেছিলো। কেন জানি না কারণ ভালোলাগার কারণ নির্ণয় করা অনেক সময়ই সম্ভব হয় না। কারণ যাই হোক, নিজের ভালো লাগার কথাটা ছড়িয়ে দিলেই হলো। অন্যকে যাচাই বাছাই করার সুযোগটা দিলেই হলো। এবার আসি বর্তমান সময়ে লিখতে শুরু করা আরেকজন কবির লেখার কাছে। তানিম কবির। ফেসবুকে তার একটি স্ট্যাটাস আমাকে বেশ মুগ্ধ করেছিলো। আগেই বলেছি, ফেসবুক নয় শুধু, ভার্চুয়াল মিডিয়ার কিছু টেকনিক্যাল ড্র ব্যাক আছে। এই য্যামন এই মুহূর্তে তানিম কবিরের সেই স্ট্যাটাসটি হুবহু কোট করতে পারলে ভালো লাগতো, কিন্তু তা পারছি না। যাই হোক, তার মতে, একজন চর্মকার আসলে জুতা সেলাই করেন না। তিনি সেলাই করেন অনেক অনেক গন্তব্য এবং হাজার হাজার মাইল পথ। ব্যাপারটা বেশ ভাবিয়ে তোলার মতো। আমাদের বাস্তবতা থেকে সময়ের শর্তটি শিথিল করে নিলে তো এমনটাই হয়ে দাঁড়ায়। বিস্মিত হয়েছিলাম। মুগ্ধ হয়েছিলাম।

এত ঋদ্ধ ভাবনার কাছে ভাষা হয়ে ওঠে গৌন অনুষঙ্গ। যে ভাষাতেই ট্রান্সলেট করা হোক না কেন, তানভীর আশিক, বা তানিম কবিরের লেখাগুলোর তাৎপর্য ন্যূনতম আকর্ষণ হারাবে না। কেননা এখানে ভাষাই তাদের একমাত্র হাতিয়ার নয়। ভাষা হলো গৌণ হাতিয়ার। মূখ্য হাতিয়ার হলো তাদের আইডিয়া। ভাবনার উপস্থাপন। অথচ এমন ভাবনা থেকে আমরা তো প্রায় দূরেই সরে যেতে বসেছি।

ভার্চুয়াল মিডিয়া ভিত্তিক প্রকাশনার সাথে সাথে একটা বিষয় বেশ উঠে আসছে যে, লেখা প্রকাশের স্বাধীনতা এখন সবার আছে। নিজের নিজের মেধা অনুযায়ী, নিজের নিজের সার্কেল সাপেক্ষে কথা, ভাবনা, লেখা এখন শেয়ার করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং এটাও ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে যে, বাংলা কবিতা তার চারিত্র বদলাতে শুরু করেছে। ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষা আমার জানা না থাকায় অন্যান্য ভাষার কবিতা নিয়ে কোনো কথা আমি বলতে পারছি না। বোদলেয়ার থেকে শুরু করে এলিয়ট পর্যন্ত ইউরোপের কবিতায় আধুনিকতার যে বিবর্তন তা থেকে ইউরোপের কবিতাও বেরিয়ে এসেছে। যদিও বেশ বয়স্ক এবং তাকে বর্তমান সময়ের কবিদের প্রতিনিধি আর বলা যাবে না, তবুও বলতে হয়, টমাস ট্রান্সট্রয়মারের কবিতা পড়লেও আমাদের মনে হয়, কোনো বাদ বা তত্ত্ব নয় কম্পোজিট লিটারেচারের যুগের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। প্রথাগত ফর্ম, রেস্ট্রিকশান, স্ট্রাকচার ক্রমশ ভেঙে পড়ছে। উপন্যাস, গল্প, কবিতা বা অন্যান্য লেখাতেও এখন ইউনিফর্মিটি চলে এসেছে।

একটা সময় ছিলো মহাকাব্যের। এমনকি চিকিৎসাশাস্ত্রের গ্রন্থ রচনা করলেও তা করতে হতো মহাকাব্যের ঢঙে। অর্থশাস্ত্র, কামশাস্ত্র বা দর্শনশাস্ত্রও এই ফর্মের বাইরে যেতে পারে নি। কিন্তু এখনকার যুগে মহাকাব্যের সেই রমরমা আর নেই। কবিতা হয়ে গেছে অনেক ক্ষুদ্র কলেবরের। অনেক বেশি কমপ্যাক্ট। ছন্দসহ অন্যান্য অনেক আনুষঙ্গিক যেগুলোকে একসময় কবিতার অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে কর হতো, মনে করা হতো, এগুলো ছাড়া কবিতা কোনোভাবেই সম্ভব না, সেগুলোকেও ঝেড়ে ফেলেছে কবিতা নিজেই এবং এখন আমরা বুঝতে পারছি এগুলো ছাড়াও কবিতা সম্ভব। তাহলে কি আমরা এমন একটা ধারণার কাছাকাছি পৌছাতে পারি না যে, কবিতা আসলে দেখার বিষয় নয়। কবিতা বা গল্প বা উপন্যাস, অথবা গদ্য, যাই বলি না কেন, সবই আসলে কনটেন্ট নির্ভর। তাহলে কীভাবে আমরা আলাদা করবো? কবিতা বা গল্প বা উপন্যাস যাই বলি না কেন এগুলো আলাদা হবে ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে। একই বিষয় নিয়ে কবিতা, গল্প, উপন্যাস রচিত হতে পারে। বিষয় এক তারপরও একটা গল্প, একটা উপন্যাস, একটা কবিতা আলাদা। কেন? ট্রিটমেন্টের কল্যাণে। এই ট্রিটমেন্ট এবং ওয়ে অব প্রেজেন্টেশন- এর মাধ্যমেই পার্থক্য সূচিত হবে।

ফর্মের দিক থেকে হবে ইউনিফর্ম। ধরা যাক জনাব এক্স কবিতা, গল্প, উপন্যাস সবকিছুই চর্চা করেন। তো এই অবস্থায় তার নিজের একটি ভাষা থাকবে এবং সেই একই ভাষাতেই তিনি কবিতা, গল্প, উপন্যাস বা অন্যান্য ধারায় লিখবেন। তার সেই ভাষাভঙ্গিটিই হবে তার নিজের পরিচায়ক যাতে ভাষা দেখেই বলে দেয়া যায় লেখাটি জনাব এক্সের। কিন্তু তার নিজের কবিতা, গল্প, বা উপন্যাসে একই কাঠামোর ভাষার ব্যবহারের পরও যে ধারাগুলো আলাদা আলাদা থাকবে সেটা থাকবে ট্রিটমেন্ট এবং ওয়ে অব প্রেজেন্টেশনের কারণে। আর খুব বেশি দিন বাকী নেই যখন আমরা সাহিত্যের এই কম্বো নেচারের সাথে পরিচিত হবো। হ্যাঁ, কেউ যদি মনে করেন প্রচলিত ফর্মের, ছন্দের সাহায্য নেবেন, তা তিনি নিতেই পারেন। সেটার মাধ্যমেই কেবল যে পার্থক্য রচিত হবে বিষয়টা এমন হবে না।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুই বিঘা জমি কবিতাটি তো আসলে একটি গল্পই। তারপরও আমরা এটাকে কবিতা হিসাবে চিনি। ঠিক একই অনুষঙ্গ নিয়ে তিনি তো গল্পও লিখতে পারতেন, একটা উপন্যাসের মেইন বা সাব প্লটে ব্যবহার করতে পারতেন, যদি করতেন, তাহলে কি কবিতায় তিনি বিষয়টাকে যেভাবে প্রেজেন্ট করেছেন সেভাবেই করতেন? না, অবশ্যই করতেন না। ট্রিটমেন্ট এবং ওয়ে অব প্রেজেন্টেশন অবশ্যই আলাদা হতো। যেভাবেই বলি না কেন, কবিতাই বলি, গল্পই বলি, উপন্যাসই বলি, বা অন্য যাই বলি এগুলো তো আদতে সাহিত্যের সাব-ডিভিশন। প্রকৃত কথা হচ্ছে এগুলো সাহিত্য। এবং সাহিত্য নিজের উপধারাগুলোকে সবসময়ই একটা বিবর্তনের মধ্যে রাখে। লাইন অব ডিমার্কেশন ক্রমশ তার চারিত্র বদলাতে থাকে। ক্রমাগত বদলে দিতে থাকে আন্তঃসম্পর্কের বেড়াজাল। যেহেতু সাহিত্যের নিজেকে বদলানোর ক্ষমতা নেই, কারণ এটা ইনএনিমেটেড, তাই এর মূল হাতিয়ার হয়ে ওঠে লেখক, কবি, সাহিত্যিকগণ। বিবর্তনের প্রেক্ষাপট হিসাবে কাজ করে ভাষার হালফিল অবস্থা, যুগের বিচার-ভঙ্গি, জীবন ও বাস্তবতার অন্যান্য সকল উপকরণ। এগুলোর মধ্য দিয়েই, এগুলোর সাহায্যেই সাহিত্য, তা কোনো বিশেষ ভাষার সাহিত্য নয়, সামগ্রিকভাবে সাহিত্য, বদলাতে থাকে। আমরা নিজের চোখেই দেখতে পাই চর্যাপদ থেকে শুরু করে বর্তমান সময় অবধি কীভাবে বাংলা সাহিত্য নিজেকে বদলাতে বদলাতে এসেছে। বর্তমান সময়ে ফেসবুকের মতো ভার্চুয়াল মিডিয়াতেও নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে। কেউ স্বীকার করুক বা না করুক সাহিত্য তার রূপ এভাবেই বদলাতে থাকবে। শুধু ভার্চুয়াল মিডিয়া নয়, আরো কোনো প্রযুক্তি ভিত্তিক মিডিয়াও যদি আসে, সেখানেও সাহিত্য থাকবে। বিবর্তিত অবস্থায় থাকবে।

আগেই বলেছি, একটা সময় ছিলো মহাকাব্যের। আবার প্রথম মহাযুদ্ধ উত্তর প্রেক্ষাপটের কথা যদি ধর যায় তাহলে বলতে হবে, সেটা ছিলো কথা-সাহিত্যের সময়। অন্যান্য ধারাগুলো ততটা পাঠকপ্রিয় ছিলো না। থাক বা না থাক, প্রথম মহাযুদ্ধের পরে কবিতা কি বিবর্তিত হয় নি? এখন এই বিষয়টাকে অনেকে অনেকভাবে ব্যাখ্যা করেন। অনুবাদ করেন এবং বলে থাকেন, কনটেন্ট বা থিম বা বক্তব্য বলতে কিছু নেই। কবিতার ভাষাটাই সব। ঘোরের নির্মাণটাই সব। সেটা উন্মাদের মনোজাগতিক জগৎ হলেও ভালো। তবে আমাদের একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, এমন ধারা যে এখনই সাহিত্যে উঠে এসেছে তা নয়। এগুলো বহু আগেও ছিলো। বর্তমানেও আছে। ভবিষ্যতেও থাকবে। সাহিত্যের ক্ষেত্রে বড়জোর, নীরিক্ষার তকমা পাবে কিন্তু কনটেন্ট ছাড়া সাহিত্য হবে না। আপনার যদি কোনো বক্তব্য না থাকে তবু আপনার কথা শোনার মতো সময় কার হবে?

একটা সময় বলা হতো, যা অনুবাদের উর্দ্ধে তাই কবিতার শ্রেষ্ঠ অংশ। এই কথাতেও সাহিত্যিকের ব্যক্তিগত ভাষার সৌন্দর্য-সম্পর্কিত বিষয়টাকেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভাষার ব্যবধান কোনো বিষয় না। ভৌগলিকতার সীমানা ডিঙানোর জন্য মানুষ কমন ল্যাঙ্গুয়েজ বেছে নিয়েছে। ট্রান্সলেশনের মাধ্যমে সারা পৃথিবীতেই মুহূর্তের মধ্যে কারো লেখা ছড়িয়ে পড়তে পারে। নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী মূল্যায়ন পেতে পারে। যে কোনো ভাষাতেই সাহিত্যিকের স্বকীয়তা রচিত হয় নিজের জন্য একটি পৃথক ভাষা নির্মাণে। ওই ভাষার সৌন্দর্য, নান্দনিকতা, লেভেল অব কমিউনিকেশন তাকে আলাদা করে তোলে অন্য দশজনের থেকে। কিন্তু ভাষার পরিধি ভাঙার জন্য যখন অনুবাদের সাহায্য নেয়া হয় তখন তার স্বকীয়তা অনেকাংশেই খর্ব হয়ে যায়। যেটুকু থাকে, তাও থাকে অনুবাদকের যোগ্যতার উপর ভিত্তি করেই। একারণেই হয়তো বলা হতো, যেটুকু অনুবাদের উর্দ্ধে তাই শ্রেষ্ঠ। শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়ে কোনো কথা নয়। স্বকীয়তা তো ভাষা ভিত্তিক। চিন্তা হলো সার্বজনীন। বক্তব্য হলো ভাষা-বিভাজনের অতীত। এখন আপনার লেখায় যদি চিন্তার খোরাক না থাকে, আপনার লেখায় যদি কোনো বক্তব্য না থাকে, নিছক ভাষার স্বকীয়তার উপর ভিত্তি করে পাতার পর পাতা আপনি লিখে যেতে থাকেন, আর ভাবেন অন্য যারা চিন্তার স্বাতন্ত্র্য নিয়ে ব্যস্ত তারা তো অহেতু শ্রম ঢালছে, তাহলেই তো আর আপনার ধারাটিই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে না। হ্যাঁ, এক শ্রেণির পাঠকের কাছে আপনার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হতে পারে। আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, সেই শ্রেণিও চিন্তার কাছাকাছি যেতে চায় না। চিন্তার কাছাকাছি যাবার যোগ্যতা তাদের নেই। ভাবনার স্বকীয়তা তৈরির বিষয়ে তারা সম্পূর্ণ নিতান্তই বালক।

সাহিত্য কেবল ভাষায় স্বকীয়তার কথাই মনে রাখে না; ভাবনা বা বক্তব্যের স্বকীয়তার কথাও মনে রাখে। আমরা সদ্যপ্রয়াত নোবেল লরিয়েট সাহিত্যিক মার্কেজের কথা বলতে পারি। তার মূল ভাষা পড়ার যোগ্যতা আমার নেই। আমি তার যা কিছু লেখা পড়েছি, সেগুলো অনুবাদ। নিজের ভাষায় তার স্বকীয়তা এবং নান্দনিকতার বিষয় উপভোগ না করেই আমি বলতে পারি, এযাবৎ পৃথিবীর যে সকল ঔপন্যাসিকের লেখা আমি পড়েছি, তাদের মাঝে মার্কেজকেই আমার সবচেয়ে ভালো লাগে। আমি তো আসলে বিচ্ছিন্ন কোনো মানুষ নই। হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষের একজন। আমার মতো হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষ হয়তো এমনটাই বলে। স্বীকার করে। এস্পানিওল ভাষা না জেনেই আমরা তাকে স্বীকার করেছি। কীভাবে? অনুবাদের মাধ্যমে যে অনুবাদে ভাষার নান্দনিকতা ধরা পড়ে না। যে অনুবাদে ভাষা-ভিত্তিক সৌকর্য্যরে বিষয়গুলো অধরা থাকে।

আপনি যদি সার্বজনীনতার দিকে যেতে চান তাহলে আপনার একমাত্র হাতিয়ার হয়ে উঠবে ভাবনার মৌলিকত্ব কারণ যে ভাষাতেই অনুবাদ করা হোক না কেন, ভাবনার মৌলিকত্ব চারিত্র্য হারায় না। ভাষার নান্দনিকতা হারিয়ে যেতে পারে, স্বকীয়তা হারিয়ে যেতে পারে; সব ভাষাতেই ভাবনা সমান ইমপ্যাক্ট তৈরিতে সক্ষম। কিন্তু আক্ষেপের বিষয় হচ্ছে, ভাবনার ট্র্যাক থেকে আমরা ক্রমশ সরে যাচ্ছি। এমনটা হতে পারে যে, নতুন কোনো চিন্তা আমাদের মাথায় আসছে না। অথবা নতুন কোনো ভাবনা কনসিভ করার ক্ষমতা আমরা হারিয়ে ফেলছি এবং এটাই যদি ফ্যাক্ট হয় তাহলে বলতেই হয় যে, বাংলা সাহিত্যের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট অত্যন্ত সংকীর্ণ হয়ে যাবে। বাংলা ভাষাভাষী ছাড়া আর কেউ বাংলা সাহিত্যের ধারে কাছে আসবে না। কারণ আগেই বলেছি, ভিন্ন ভাষার কেউ যখন আপনার লেখা পড়ে, তখন সে আসলে আপনার ভাষার নান্দনিকতা পড়ে না; সে পড়ে আপনার ভাবনার নান্দনিকতা এবং মৌলিকত্ব।

ভাবনার নান্দনিকতা এবং মৌলিকত্বের দিকে একটু তাকানো যাক। খ্যাতনামা কবি নাজিম হিকমতের একটি কবিতার কিছু অংশ উদ্ধৃত করছি ঃ

If half my heart is here, doctor,
the other half is in China
with the army flowing toward the Yellow River.
And, every morning, doctor,
every morning at sunrise my heart
is shot in Greece.
And every night, doctor,
when the prisoners are asleep and the infirmary is deserted,
my heart stops at a run-down old house in Istanbul.

And then after ten years
all I have to offer my poor people
is this apple in my hand, doctor,
one red apple:
my heart.

And that, doctor, that is the reason
for this angina pectoris--
not nicotine, prison, or arteriosclerosis.

I look at the night through the bars,
and despite the weight on my chest
my heart still beats with the most distant stars.
(Angina Pectoris)
খুব সহজ, সাধারণ, সরল কথা। কিন্তু নিজের বুকের ব্যথার সাথে বৈশ্বিক কারণসমূহের সম্মেলনটা সরল, সাধারণ নয়। অনেক কবিই বুকের ব্যথায় ভুগেছেন। এ্যানজিনা পেক্টোরিসে আক্রান্ত হয়েছেন। নাজিম হিকমতের মতো এতটা বৈশ্বিক চারিত্র দিতে পেরেছেন কতজন। আমাদের মনে রাখতে হয় যে, এটা আসলে নাজিম হিকমতের কবিতার অনুবাদ। তার নিজের ভাষার সৌকর্য্য এখানে অনুপস্থিত। তারপরও পাঠক হিসাবে আমরা যখন আপ্লুত হই, তখন ভাবতে সাধ হয়, আপ্লুত কেন হচ্ছি! আপ্লুত হচ্ছি কারণ তিনি তার কবিত্বকে, কবিত্বের মেধাকে কেবল স্বকীয় ভাষার নান্দনিকতা নির্মাণে আটকে রাখেন নি। ছড়িয়ে দিয়েছেন ভাবনার মধ্যে। বক্তব্যের মধ্যে। আর আমরা তাই চমৎকৃত হতে পারি। আমরা তাই তার ভাবনার ঐকতানের ভেতরে চলে যেতে পারি। শব্দের সাথে শব্দের আন্তঃসম্পর্ক দিয়েও কবিতা হতে পারে। কিন্তু সম্পর্কের ব্যাপ্তি যদি কেবল শব্দকে ধরাই হয়, তাহলে তা কবিতার স্তরে উন্নীত হতে পারে না।

এবার তাকানো যাক ইসরায়েলী কবি ইয়াহুদা আমিচাইয়ের একটি কবিতার দিকে ঃ


Half the people in the world love the other half,
half the people hate the other half.
Must I because of this half and that half go wandering
and changing ceaselessly like rain in its cycle,
must I sleep among rocks, and grow rugged like the trunks of olive trees,
and hear the moon barking at me,
and camouflage my love with worries,
and sprout like frightened grass between the railroad tracks,
and live underground like a mole,
and remain with roots and not with branches, and not
feel my cheek against the cheek of angels, and
love in the first cave, and marry my wife
beneath a canopy of beams that support the earth,
and act out my death, always till the last breath and
the last words and without ever understanding,
and put flagpoles on top of my house and a bob shelter underneath.
And go out on roads made only for
returning and go through all the appalling
stations- cat, stick, fire, water, butcher,
between the kid and the angel of death?

Half the people love,
half the people hate
And where is my place between such well-matched halves,
and through what crack will I see the white housing projects
of my dreams and the bare foot runners
on the sands or, at least, the waving of a girl's kerchief, beside the mound?
(Half the people in the world)

কেবল বাংলা ভাষা নয়, সব ভাষাতেই বোধকরি, ভাষার নান্দনিকতার সাথে ভাবনার নান্দনিকতা রেখে মহৎ কবিগণ তাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং আমরা এখনও যখন তাদের কবিতা থেকে আনন্দ, উৎসাহ, বিষ্ময় লাভ করি তখন মূলত আনন্দিত, উৎসাহিত, বিষ্মিত হই তাদের ভাবনার চমৎকারিত্বে। কিন্তু হ্যালুসিনেটিভ ওয়ার্ল্ডের মধ্যে শব্দের খেলা থেকে ভাবনা উৎসারিত হতে পারে না। স্প্যানিশ কবি লোরকার একটা বহুল পঠিত ও সমাদৃত কবিতার দিকে তাকানো যাক।
I have shut my windows.
I do not want to hear the weeping.
But from behind the grey walls,
Nothing is heard but the weeping.

There are few angels that sing.
There are few dogs that bark.
A thousand violins fit in the palm of the hand.
But the weeping is an immense angel.
The weeping is an immense dog.
The weeping is an immense violin.
Tears strangle the wind.

Nothing is heard but the weeping.
(The Weeping)
লোরকার এই কবিতাতে কি হ্যালুসিনেশন নেই? আছে। তবে তার হ্যালুসিনেশনের মধ্যে যে সংগতি ও সংহতি আছে, নিছক শব্দের আন্তঃসম্পর্কের উপর ভিত্তি করে বা দৃশ্যের পরে দৃশ্যের অবতারণা করে এই পর্যায়ে আসা অসম্ভব। কেননা লোরকার হ্যালুসিনেশন মটো-অরিয়েন্টেড। আর শব্দ-খেলুড়েগণ মটো তৈরিতে অপারগ। শব্দ, চিত্র সব কিছুর মধ্যে একজন কবি শৃঙ্খলা স্থাপন করেন। শৃঙ্খলা স্থাপনের লক্ষ্য থাকে নিজের বক্তব্যকে পাঠকের কাছাকাছি নিয়ে আসা। এমনটাই হয়ে থাকে মহৎ কবিদের ক্ষেত্রে। মেধাবী কবিদের ক্ষেত্রে। কারণ মেধার স্ফুরণ থাকে বক্তব্যে, অধ্যবসায়ের প্রমাণ থাকে ভাষায়। একটিকে ছাড়া অন্যটি বস্তুহীন মোড়কের মতো হয়ে যায়। মোড়ক যত আকর্ষণীয়ই হোক না কেন, ভেতরে কিছু না থাকলে, মোড়ক খোলার পরে আমাদের আশাহত হতে হয় কারণ আমরা কেউই হয়তো মোড়কের জৌলুস চাই না।
###

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৩৪
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×