তোমাদের ছড়ানো রক্তের মধ্যে ডুবেছিলো এক মৌন প্রজাপতি;
শিশু প্রজাপতি হতে পারে, অথবা বয়স্ক, প্রৌঢ় Ñ যাই হোক প্রজাপতির বয়স
চেনার ক্ষমতা আমার নেই, তাই ভেবে নিলাম ওটা আসলে প্রজাপতি নয়,
প্রজাপতির খোলসে তোমাদের পাখি হবার বাসনা রক্তের সাথে সাথে ঝরে গেছে;
আর আমরা যারা জোড়াদিঘির পাড়ে ঘুঘু পাখিদের ডাক শুনে বিকাল কাটাই,
সন্ধ্যার আগে আগে আয় আয় তু তু বলে ন¤্র পাখিদের তুলে নেই ঘরের আশ্রয়ে
তাদের রক্তের মধ্যেও কি এক একটা পাখি বাসা বেঁধে আছে? চোখ বন্ধ করে যে
ডাক শুনি তা তো ঘুঘু পাখির নয়; দ্রিম দ্রিম, হাতুড়ির শব্দ কোনো পাখির হতে পারে না।
তবু শিরা ও ধমণির রক্ত যখন টুপটাপ ঝরে পড়তে থাকে, ভয় লাগে, যদি একটা ঘুঘু পাখি
বের হয়ে আসে তবে লোকে কী বলবে, তারা হয়তো ধারণা করে নেবে, লোকটা মনুষ্যদেহধারী
এক উদ্দাম খেচর। পাখিদের ডাক শুনে বিকাল কাটায়, কে জানে সন্ধ্যার পরে কোনো
বৃহৎ বনের দিকেই ছুটে যায় কিনা, তার পিছু পিছু ওই বনে একদিন যেতে হবে;
গেলে দেখা যাবে প্রকৃতই সে মনুষ্যদেহধারী পাখিদের ত্রাণকর্তা কিনা।
সকলের অগোচরে তাই অরণ্যের গভীরে যাওয়ার আগে ভাবি, এইবার শরীরের
সব রক্ত ও কুসুম ফেলে দেবো ঠেসমূল ছড়াতে থাকা কোনো ব্যাপক বটের মূলে।
তোমাদের রক্তে তো পাওয়া গিয়েছিলো প্রজাপতি, তবু তোমরা মথ ছিলে না কখনো
আমাদের রক্তে যদি পাখি পাওয়া নাও যায় তবু ধরে নিও আমরা পাখিই ছিলাম-
শুধু উড়তে শিখিনি কোনোদিন বলে মনুষ্যজীবন কাটিয়ে যাচ্ছি ভূধরাধামে।