রোদের ভেতরে কি অসংখ্য মাছি থাকে? অসংখ্য মরা জীব ও মাটির আদিম চক্রান্ত?
সে ই তো পুড়িয়ে দ্যায় শরীর, রাসলীলা শেষ হলে আমাদের দেহ থেকে শুষে নেয় রক্তরস, জীবন ও যৌবনের গন্ধলাগা সব অমূল্য কামিজ। ওই কাপড়ের প্রতিটি আলপনায় একদিন লেগেছিলো তাজা শিমুলের রঙ, পাথরের ছবিও ছিলো। ছিলো রাজহাঁস আর বনভোজনের আগে চোখজুড়ে জ্বলে ওঠা চকচকে দৃষ্টি।
এখানে বৃষ্টি জমে না বহু দিন। বহু রাতে অন্ধকারে মুছে যায় রক্তনূপুরের ধাঁধাঁ। অথচ এমন ধাঁধাঁ শীত ও গ্রীষ্মের বারান্দায় একা একা দাঁড়িয়ে ভেবেছি কত, কত বার খুঁজে পেতে চেয়েছি সমাধান সংহিতা। সেসব আঁধার কোথায় আজ!
এমনকি রোদের গহীনেও মাছি আর মরা-পচা দেহের ঘনিষ্ঠ বাক্যালাপ লুকিয়ে আছে ভেবে আমি ক্রমাগত অন্ধকারের দিকে সরে যাই। সেখানেও লম্বা লাইন। দীর্ঘ সারিতে যারা অপেক্ষমান তারা কেউ আমার আত্মীয় নয়। অথচ তাদের যেন বহুবার দেখেছি, প্লাবন ও সংহারে ভিজে ভিজে।
এক ফোঁটা প্রাণবিন্দু, এক ফোঁটা প্রতিশ্রুতি রোজ ঘুম থেকে ডেকে তোলে; যেন ওই প্রাণবিন্দুর প্রতিশ্রুতি আসলে এক অমোঘ পাখির নাম। অবিরত কিচিরমিচির। অবিরত সকালের বারতাবহন। কিংবা ভ্রমণ শেষে পাখিকুটিরের তলা দিয়ে হেঁটে যাবার সময় তাদের সংলাপ, ঠিক সংলাপ নয়, অবোধ্য ভাষার কাকলী ও কলতান কানের গভীরে পুঁতে দেয় প্রত্যাবর্তনের সুর। যে সুরে আমিও মুগ্ধ; যে সুরে ওই পাখিদের দলনেতা রোদের ভেতর থেকে তীব্র চঞ্চুতে তুলে নিতে চায় অসংখ্য মাছির জীবনপালা ও পিপিলিকার নৃত্যনাট্য।