somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফেইক প্রোফাইল ও একটি গল্প

১৪ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পত্রিকার কাজটা পিছিয়ে যাওয়ায় মনটা বেশ খারাপ ছিল। তাই নববর্ষ খুব একটা ভাল গেল না। কিন্তু তবুও বাড়িতে তো বসে থাকা যায় না। পহেলা বৈশাখ বলে কথা। বন্ধুদের সাথে যশোর উদীচির অনুষ্ঠান দেখতে গেলাম। অনুষ্ঠান দেখতে-দেখতে সম্পুর্ণ অপ্রাসঙ্গিক ভাবে মাথায় এই গল্পটার আইডিয়া এল। কিন্তু শরীরের অবস্থা বিশেষ ভাল না। সারাদিনের ক্লান্তি সাথে এলার্জির অষুধের কেরামতিতে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। তবুও চেষ্টা করি। কারণ জানি ফেলে রাখলে আর লেখা হবে না!


আমাদের ব্লগার সাদমান সাদিক ভাই। অতি ভদ্র ছেলে। সফটওয়ার ইঙ্গিনিয়ারিং পড়েন। সেহেতু মেধাবি বলতেই হবে সেই সাথে একজন ভাল মানুষও বটে। মুল চরিত্রটা তার ঘাড়ে দেই।
ব্যস্ত মানুষ আমাদের সাদমান ভাই। সারা দিন ক্লাস, আড্ডা, হ্যান-ত্যান বহুত কাজ। তবে আশ্চর্য হল এইসব কাজ গুলোর মধ্যে ফেবুতে বসা তার হয় না। রাতের দিকে বসে একবার।
এমনি একদিন বসেছে সাদমান ভাই ফেবুতে। প্রথমে নটিফিকেশন চেক। তারপর মেসেজ। আজ একটা মেয়ে মেসেজ দিয়েছে সাদমান ভাইকে।
" ভাইয়া আপনার লেখা আমি পড়ি নিয়মিত। আমার খুব ভাল লাগে ব্লগ পড়তে। তবে বেশ কিছু দিন আপনার লেখা পাচ্ছি না। লেখেন না কেন?" মেসেজটা পাঠিয়েছে সেজুতি রহমান।
ভালই লাগে যখন এমন মেইল করে। এখনি রিপ্লাই করা ঠিক হবে কিনা ভাবছেন তিনি।
হঠাৎ চমকে উঠলেন সাদমান ভাই। এই সেজুতি রহমানকে তিনি চেনেন। আজ থেকে ৫ বছর আগে একে সাদমান ভাই নিজে সৃষ্টি করেছিলেন। এটি তার নিজের তৈরি ফেইক আইডি।
৫ বছর আগে ফেসবুক তেন জনপ্রিয় ছিল না। তাই ফেইক আইডি দিয়ে মানুষ ধোকা দেয়াও সহজ ছিল। সাদমান ভাই অবশ্য শুধু বন্ধুদের মজা করার জন্য এটি তৈরি করেছিলেন। তবুও যে এটি ফেইক তা বোঝার কোন ব্যবস্থা ছিল না। প্রোফাইল পিকচার ছিল ৮-৯টা। এগুলো তার এক বন্ধুর কাজিনের। সাদমান ভাই তখন কলেজে পড়তেন। বন্ধুর কাছ থেকে শুনেছিলেন ঐ আপু ভার্সিটিতে ২য় বর্ষে পড়তেন।

যাহোক সাদমান ভাই বহু কষ্টে পাসওয়ার্ড বের করে আইডিতে ঢুকলেন। আইডিটা বেশ কিছুদিন ধরে ব্যবহার হচ্ছে। এটার হ্যাকার পাসওয়ার্ড বদলায়নি সেটা এক বিরাট রহস্য। তিনি নিজেও বদলালেন না। চোর ধরার মধ্যে মজা আছে।

বেশ কিছুদিন পরের কথা। সেজুতি রহমানের (ফেইক আইডি) কথা তার মাথায় নেই। তাছাড়া অন্য এক ক্যচালেও আছেন। ব্লগার মহাপুরুষ অয়ন ওরফে পাগলা অয়ন নাকি এক অনলাইন সাহিত্য পত্রিকা না কি বাল-ছাল বানাবে তাই নিয়ে প্রতিদিন জ্বালায়ে মারছে। ঘণ্টায়-ঘণ্টায় ফোন করে জ্বালাতন। কিছু বলতেও পারেন না পোলাপাইন বলে। এমন একদিন হঠাৎ তিনি দেখেন যে সেজুতি রহমান অনলাইন। নক করলেন সাদমান ভাই। টুকটাক কথা হল। ব্যাফুক চাল্লু মাল। ফেইক আইডি চালাতে ওস্তাদ মনে হল।
এভাবে প্রায়ই চ্যাট করতেন ঐ আইডিটার সাথে। এ যেন এক মজার খেলা। একদিন ঝোকের বসে ফোন নাম্বার চেয়ে বসলেন সাদমান ভাই। আশ্চর্য ব্যপার হল সে দিয়েও দিল। ফোনও করলেন সাদমান ভাই। কন্ঠ পিউর মেয়েদের। তবুও শিউর হকেন না তিনি। আজকাল চাইনা মোবাইলে ভয়েজ চেঞ্জ বা হাতের খেল। একদিন দেখা করতে বললেন সেজুতিকে। ভেবেছিলেন এইবার ধরা খাইয়া যাবে বাছাধন। আশ্চর্য এ তাতেও রাজি!!

সাদমান ভাই সন্ধ্যা বেলা টিএসসি তে চায়ের দোকানে অবস্থান করছেন। নিজের উপর রাগ হচ্ছে। এভাবে আসা উচিৎ হয়নি তার। যতই গোপনীয় ফেইক আইডি হোক এমনও তো হতে পারে তার বন্ধুদের কেউ জেনে ফেলেছিল। আজ তাকে আবুল বানানোর জন্যই ডেকেছে। হারায়ে যাবেন কিনা ভাবছেন।
হঠাৎ চায়ের দোকানের অদুরে গাছের তলায় একটা মেয়েকে দেখতে পেলেন। নীল জামা পরা। চিনতে পারলেন এবং টাস্কি খেলেন। সেইম জামা পরা ঐ গাছের নিচে দাড়ানো অবস্থায় অবিকল এই ছবিটাই ফেইস বুকে সেজুতির একাউন্টে দেয়া। মেয়েটি কাউকে খুজছে। নিশ্চই তাকে।
সামনে গিয়ে দাড়ালেন সাদমান ভাই।
কেমন আছ?
এই তো। আপনি হ্যা ভালই। তবে......

প্রচন্ড আওয়াজ হল খুব কাছেই কোথাউ।রাজনৈতিক দুই গ্রুপের মধ্যে মারপিট লেগে গেছে। সবাই যে যার মত ছুটতে লাগলো। সাদমান ভাই কোনরকমে একটা সিএনজি পেলেন। তারপর সোজা বাসায়। কাউকে কিছু না বলে ঘুম দিলেন।
ঘুম ভাংলো ২ ঘন্টা পর। সেজুতিকে ফোন দিলেন। ফোন বন্ধ।
ভাব্লেন ফেইসবুকে সরি লিখে একটা মেসেজ দিবেন। আশ্চর্য তার ফ্রেন্ড লিস্টে নাই!!! সার্চ করেও পেলেন না।
সেজুতির আইডিতে লগইন করতে গিয়েও পারলেন না। এমন কি মেইলেও না।
সাদমান ভাই বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারলেন তার কাজিন দেড় বছর ধরে স্বামী বাচ্চা সহ ফিনল্যান্ডে আছে।

**সকল ঘটনা কাল্পনিক। সাদমান ভাই প্রেমিকার কাছে ব্যান খাইলে লেখক দায়ী নয়।**
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৩:৩৮
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×