somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ভাস্কর রায় ( সৌরভ রাজধন )
বাংলাদেশি বাঙালি, উগ্র সাম্প্রদায়িক ও ধর্মান্ধতা মুক্ত , বিজ্ঞান চিন্তক একজন লেখক হিসেবে লিখতে চাই মানুষ ও মানবতার কথা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধনের কথা , ধরিয়ে দিতে চাই ধর্মের নামে গড়ে উঠা কুসংস্কার ও ভন্ডামিগুলোকে । পাঠকদের স্বাগতম।।

পাকিস্তান ভাঙার জন্য দায়ী কে?

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাকিস্তান ভাঙার জন্য দায়ী কে?--- আজকে এই প্রশ্নটির উত্তর খুঁজবো

খালেদ মাহমুদের মতে : পূর্ব পাকিস্তানের আলাদা হয়ে যাবার ব্যাপারটির জন্য যদি কাউকে দায়ী করতেই হয় তাহলে সে দায়িত্ব বর্তায় পশ্চিম পাকিস্তানের ক্ষমতা লোভী রাজনীতিকদের ওপর, যাদের বেশিরভাগই পাঞ্জাবী। ওরা সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশের জনগণের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে চায়নি।” কিন্তু এই উত্তর একটি ব্যতিক্রম বলে ধরে নিতে হবে। এই প্রশ্নে দেখা যায়, কি নীতিনির্ধারক, কি সাধারণ মানুষ—সবাই এই প্রশ্নের উত্তরের ক্ষেত্রে প্রায় পার্থক্যবিহীন। এরা দায়ী করে দু'পক্ষকেই নতুবা ইয়াহিয়া-ভুট্টো-মুজিব বা ভুট্টো-ইয়াহিয়া-মুজিবকে

লারী বলেছেন, দু'পক্ষই দায়ী। তাদের মতে, পশ্চিম পাকিস্তান হয়ত বেশি দায়ী। তবে, পূর্ব পাকিস্তান এতটা বাড়াবাড়ি না করলেও পারত। এমনকি আসগর খানও তাই বলেছেন। তবে, দ্বিতীয় উত্তরটির পক্ষেই অধিকাংশ মানুষ। শুধু ভুট্টো-ইয়াহিয়াকে এক-দুই নম্বরে স্থান দিয়েছেন। শেখ মুজিব তিন নম্বরে কিন্তু আছেন।

“পূর্ব পাকিস্তানকে ছেঁটে দেবার একটা নিজস্ব পরিকল্পনা পাকিস্তানীরা তৈরি করেছিল। আর সেটির পক্ষে খোলাখুলি ওকালতিও শুরু হয়েছিল। ..... পাকিস্তান পরিকল্পনা কমিশনের কিছু সদস্য ও আমলাতন্ত্রের নেতা বলা শুরু করেন, পূর্ব পাকিস্তান তো আমাদের কাঁধে বোঝা হতে চলেছে। কাজেই তাঁদের ওকালতি বা যুক্তি হলো, আমাদের এখন পূর্ববঙ্গ থেকে রেহাই পেতে হবে।" - এম ভি নকভী

উপরে এতক্ষণ যা পড়লেন তা " পাকিস্তানের দৃষ্টিতে একান্তর " বই থেকে নেওয়া । এক মাস আগে এই বইটি পড়েছি । একে বই বলার চেয়ে সাক্ষাতকার মূলক প্রতিবেদনই বলা বেশি যুক্তিযুক্ত । কারণ এই বইয়ে উল্লেখ আছে মোট ২৮ জন ব্যাক্তির(পাকিস্তানি ) সাক্ষাৎকার । তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন ব্যাক্তি হলেন

•জেনারেল নিয়াজী

•মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী

• বেনজীর ভুট্টো ( ভুট্টো সাহেবের মেয়ে , সাবেক পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী )

• এম. ভি . নকভী

• ব্রিগেডিয়ার এ আর সিদ্দিকী সহ নেতা আমলা সে সময়ের উচ্চ পর্যায়ের সেনা সদস্য বৃন্দ।

প্রকাশকের মতে সাক্ষাৎকারগুলো নেওয়া হয় ইংরেজিতে, তবে ফাঁকে ফাঁকে উর্দুরো ব্যাবহার হয়েছে। টেপ রেকর্ডার থেকে এই সাক্ষাৎকারগুলি কাগজে কলমে দাঁড় করানো এবং তাকে বাংলা ভাষায় রূপান্তর করার কাজটি করেছেন " দৈনিক ইত্তেফাক" পত্রিকার কর্মরত সাংবাদিক আফতাব হোসেন । সাক্ষাৎকারগুলো ১৯৯৯ সালে ধারাবাহিকভাবে " দৈনিক জনকণ্ঠ " এ প্রকাশিত হয়।
এই বইটি পড়লে পাকিস্তানের সে সময়ের অবস্থা সম্পর্কে বেশ ভালো একটা ধারণা জন্মাবে । সে সময়ের রাজনৈতিক সামরিক নেতাদের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব অনেক ইস্পস্টভাবে ফুটে উঠেছে সাক্ষাৎকার দেওয়া ব্যাক্তিদের বক্তব্যে । একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত কথা বার্তা পাওয়া যাবে জেনারেল নিয়াজী ও অন্যান্য সেনা সদস্যদের মধ্যে। এখানে একটা তথ্য জেনে পাঠকরা বেশ অবাক হবেন - জেনারেল নিয়াজীর লেখা একটি বই তিনি উৎসর্গ করেছেন রাজাকারদের উদ্দেশ্যে । অবশ্য এই রাজাকার আলবদর ও আল- শামস বাহিনীদের নিয়ে তিনি সিভিল ফোর্স গঠন করেছিলেন।

পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান তৈরির বিষয়ে এক বিশেষ তত্ত্বের কথা বলা হয়েছে , যার নাম "লায়াবিলিটি" তত্ত্ব । অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তান কোনো সম্পদ নয় , সেটি না থাকলেই পাকিস্তানের অর্থাৎ পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নতি হবে । পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের কাঁধে বোঝা স্বরূপ ।এই তত্ত্বের উদ্ভব ষাটের দশকে। এম ভি নকভী ও কামরুল ইসলামের সাক্ষাৎকারে এই বিষয়টি পাঠকেরা খুঁজে পাবেন। পাকিস্তানের ক্ষমতার মসনদে বসা শাসকেরা নিজেরাই চাইছিলো না যে পূর্ব পাকিস্তান পাকিস্তানের অংশ থাকুক।

চরম বৈষম্যের কিছু কথা বল হয়েছে , যেগুলো পড়ে আমার গা পর্যন্ত শিউরে উঠে ছিলো । যেমন এম ভি নকভী বলেছেন

“পঞ্চাশের দশকে পাশ্চাত্যের একদল অর্থনীতিবিদ দুই প্রদেশে এক সমীক্ষা চালিয়ে উপসংহারে পৌঁছেছিলেন যে, পশ্চিম পাকিস্তানে কৃষিতে ও পূর্ব পাকিস্তানে শিল্পে বিনিয়োগ করা হোক। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী মোহাম্মদ আলী বলেছিলেন, পূর্ব পাকিস্তানে শিল্প-কারখানা কী জন্য? ওটা তো একদিন সটকে পড়বে।”

কামরুল ইসলাম দুই প্রদেশের পার্থক্যের কথা বলেছেন, সর্বস্তরে বাঙালীদের স্বল্প প্রতিনিধিত্বের কথা বলেছেন। তাঁর ভাষায়, “বাস্তবতা অনস্বীকার্য যে, পশ্চিম পাকিস্তানেই একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছিল, আর পূর্ব পাকিস্তানের পাট থেকে অর্জিত বিদেশী মুদ্রা কাজে লাগানো হচ্ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। পূর্ব পাকিস্তানের জন্য আরও উন্নয়ন, আরও অর্থের দরকার ছিল।" তিনি সামরিক স্থাপনাগুলির সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কের প্রসঙ্গ টেনে তার যে সামাজিক প্রাসঙ্গিকতা উল্লেখ করেছেন, তা কৌতূহলী পাঠকের দৃষ্টি এড়াবে বলে মনে হয় না।

খালেদ মাহামুদের ভাষ্য অনুযায়ী - "

অর্থমন্ত্রী গোলাম মোহাম্মদের কক্ষে বৈঠক ছিল। করাচীতে দাফতরিক ও বাসস্থানের প্রয়োজনে কিছু ইমারত ও কোয়ার্টার নির্মাণ হচ্ছিল। এ সবের জন্য স্যানিটারি মানপত্র আমদানি করার প্রয়োজন ছিল। বৈঠকে চার মন্ত্রী ও কিছু কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রীদের মধ্যে মৌলভী ফজলুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন। তিনি ছিলেন স্বরাষ্ট্র, তথ্য ও শিক্ষার দায়িত্বে। কিছুক্ষণ আলাপ-আলোচনার পর স্যানিটারি মালপত্র আমদানির পরিমাণ নির্ধারিত হয়। শিক্ষামন্ত্রী মৌলভী ফজলুর রহমান নিচু কণ্ঠে প্রস্তাব করেন, এসব আমদানিকৃত পণ্যের কিছু অংশ ঢাকার জন্য নির্ধারণ করে দেয়া উচিত।

তার এই প্রস্তাবে মিটিংয়ে হাসির রোল পড়ে যায়। কেউ বলেন, ঢাকায় এখনও বিশেষ কোন নির্মাণ কাজ শুরুই হয়নি। সুতরাং সেখানে স্যানিটারি ফিটিংস পাঠানোর কোন প্রয়োজন নেই। কেউ বললেন, এসব ঢাকায় পাঠানো হলে চোরাই পথে কলকাতায় চলে যাবে। এক সাহেব উপহাস করে বললেন, বাঙালীরা তো এখনও প্রাকৃতিক প্রয়োজনের সময় কলা গাছের ভেলায় বসায় অভ্যস্ত। তারা এখন কমোড আর ওয়াশ বেসিন নিয়ে কী করবে? মৌলভী ফজলুর রহমান হাসলেন, কিন্তু উত্তেজিত হলেন না। অত্যন্ত সুন্দরভাবে তিনি পুনরায় জোর দিয়ে বললেন, বেশি না হোক অন্তত প্রতীক হিসাবে কিছু মালপত্র আপনারা ঢাকার জন্য বরাদ্দ করুন। কারণ মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকেও এটা উত্তম পদক্ষেপ হবে। আরও কিছু আলাপ-আলোচনা এবং হাসি-ঠাট্টার পর মৌলভী ফজলুর রহমানের প্রস্তাব মেনে নেয়া হয়। ঢাকার জন্য কিছু স্যানিটারি মালপত্র বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু দুধের মধ্যে এক ফোঁটা চোনা ঢেলে দেয়ার মতো তিক্ততার সঙ্গে বিষয়টি সমাধান করা হয়। (কুদরতুল্লাহ শাহাব, আমার কথা, অনুবাদ: আবদুল আউয়াল, জনকন্ঠ, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০০৪)

আরো কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা রয়েছে -

•গণহত্যা

•বদ্ধিজীবী হত্যা

• আত্মসমর্পণসহ অন্যান্য বিষয় ।

এর মধ্যে আরো ইন্টারেস্টিং একটা বিষয় রয়েছে " লারকানা পরিকল্পনা " লারকানা নামক জায়গায় ভুট্টো আর ইয়াহিয়া খানের মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগির একটা পরিকল্পনা এটি ।

বইয়ের কয়েক জন এমন মানুষদের কথা উল্লেখ করতে পারি যারা পাকিস্তানী জনসাধারণ হয়েয়েও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে , নির্যাতন ও গণহত্যা বন্ধের প্রতিবাদ করেছেন । কেউবা মিছিল , কেউ বা পদ থেকে সরে এসেছিন , কেউবা লিখেছেন কবিতা ।

তেমনি কয়েক জন হলেন -

•এম বি নকভী

সাংবাদিক । নীতিনিষ্ঠ ও সাংবাদিক হিসেবে পাকিস্তানে তিনি শ্রদ্ধেয়। এনার সাক্ষাৎকারের ভাষায় এতো সুন্দর ও পরিশুদ্ধশীল শব্দের ব্যাবহার সত্যিই অসাধারণ লেগেছে। এনার সাথে বাংলাদেশের প্রক্ষাত বুদ্ধিজীবীদের একাংশের সাথে ভালো সম্পর্ক ছিলো । শহীদুল্লাহ কায়সার ও অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতার নাম উনি নিজেই উল্লেখ করেছেন ।

এক সময় তিনি বেশ আক্ষেপ নিয়ে বলেছেন - পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর লোকেরা যাচ্ছেতাই, ন্যক্কারজনক কাজ করেছে। এ বাহিনী ছিল সবচেয়ে বিশৃঙ্খল, কু নেতৃত্বাধীন। তারা যা করেছে তাতে আর যা-ই হোক যুদ্ধ বা লড়াই বলতে যা বোঝায় তার লেশমাত্র ছিল না। যে কোন বিবেচনায় এ বাহিনী ছিল পঙ্কিল, দুর্নীতিগ্রস্ত। লুটেরা এ বাহিনী লুটপাট করে তাবৎ অপরাধে লিপ্ত হয়, নারীধর্ষণও বাদ থাকেনি। এ বিষয়ে তো আমাদের অননুকরণীয় জেনারেলের (টিক্কা খান) ভাষ্য অনুযায়ী 'মাত্র' ৩০০০ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে পূর্ব পাকিস্তানে!

•আই এ রহমান

পাকিস্তানের একজন প্রগতিশীল সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত।এ কারণে চাকরি জীবনে তাঁকে নানা রকম নিগ্রহ সহ্য করতে হয়েছে । যুদ্ধকালীন সময়ে তার নিন্দা জানানোর জন্য তিনি লাহোরে এক গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেন । সে সময় তিনি সাহসী ৪৮ জন ব্যাক্তির সই নিতে সক্ষম হন ।

•কুররাতুল আইন বখতিয়ারি

•মিনহাজ বার্না

নারী অধিকারকর্মী । গণহত্যা সহ অত্যাচার নির্যাতনের প্রতিবাদে যে পাকিস্তানী নারীরাও আন্দোলন করেন। তার সম্মুখ সারিতে ছিলেন এই নারী অধিকার কর্মী ।

•ড. তারিক রহমান

ড. তারিক রহমান ১৯৭১ সালে ক্যাডেট হিসেবে ছিলেন কাবুলে সামরিক একাডেমিতে । সেখানে তিনি খবর পান ঢাকায় গণহত্যার। এর প্রেক্ষিতে তিনি সেনাবাহিনীর কমিশন ত্যাগ করেন এবং শিক্ষকতা- গবেষণায় যোগ দেন। এ বিষয়ে তার বক্তব্য উল্লেখ - ঢাকায় সামরিক ব্যবস্থা নেবার কথা প্রথমবারের মতো আমার কয়েকজন বন্ধু আমাকে জানায়। আগে কখনও এসব নিয়ে ভাবিনি। একদিন ফায়ারিং রেঞ্জে টার্গেট প্র্যাকটিস করার সময় গুলি লক্ষ্যভেদ করতেই চকিতে এ প্রশ্ন আমার মাথায় বিদ্যুৎ হেনে যায়, কেন আমি এ সব করছি? আমি যাকে গুলি করতে চাই না একদিন হয়ত আমাকে তাকেই গুলি করতে বলা হবে। আমি রাজনীতি সচেতন কেউ ছিলাম না। হিন্দু, মুসলিম, ইহুদী ধর্ম, কোন জাতি, বর্ণ– কারও বিরুদ্ধে আমার কোন বিদ্বেষ ছিল না। রাজনীতি সম্পর্কে এর বেশি তেমন কিছু জানাও ছিল না। তবে হঠাৎ আমার কেন যেন মনে হলো, রাজনীতি কেমন যেন আমার মাথায় চেপে বসছে। আমি তো সেনাবাহিনীর সদস্য। ঠিক-বেঠিক যা-ই হোক, আমাকে আদেশ দেয়া হবে। আর আমি না চাইলেও তা পালন করতে হবে। তাই বন্ধুর কাছে ঢাকার সামরিক ব্যবস্থা নেবার কথা শুনে প্রথমে আমার মুখ থেকে যে কথাগুলো বেরিয়েছিল তা হলো, এ ব্যবস্থা ছিলো অত্যন্ত বর্বর, অন্যায়। বন্ধুটি ঢাকায় নেয়া ব্যবস্থার পক্ষে বলতে চাইল, 'দেখ ঠিক-বেঠিক যা-ই হোক, এই তো আমার দেশ!' আমার জবাব ছিল, 'আমার কাছে মানবতা আগে বিবেচ্য, পরে দেশ। প্রয়োজনের ডাক দেশের মাটির নয়, বরং কিছু লোকের, সিদ্ধান্ত প্রণেতার। দেশের নামে ঢাকায় যা ঘটছে তাকে যৌক্তিকতার মোড়ক দিতে পারি না। যদি তা করি, আমাদের অন্যায় হবে। আসলে এটি করে আমরা 'কতিপয়তন্ত্রের' অন্যায় কাজকে যৌক্তিকতা দিচ্ছি।' এ কথাও আমি বললাম যে, দেশকে গড়ার চেয়ে ভাঙার সম্ভবত এটি একটা সেরা উপায় । বন্ধুটি একমত হতে পারল না আমার সঙ্গে।

•আহমদ সেলিম

পূর্ব পাঞ্জাবের একজন জনপ্রিয় কবি আহমেদ সেলিম। ষাটের দশক থেকে তিনি কবিতা লিখতে শুরু করেন, ছোট গল্পকার হিসেবেও তিনি পরিচিত। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের কারণে সামরিক আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হন । তিনি অনেক মানবতাবোধে অনুপ্রাণিত কবি , লেখক , রাজনৈতিক কর্মীর, সাংবাদিক , শিক্ষক , আইনজীবীর কথা উল্লেখ করেছেন যারা বাংলাদেশের সমর্থনে , বাংলাদেশের মানুষের সমর্থনে লিখেছেন অনেক কাজ করেছেন ।

তার সেই বিখ্যাত লাইন দুটো যার জন্য প্রথম তাকে জেলে যেতে হয় । --

" শাহ হুসেন, দ্যাখো তোমার মধু খুন হয়েছে বাংলায় " এর সাথে কাকতালীয় ভাবে মিলে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধু নামে এক ব্যক্তির সাথে , যে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা ক্যান্টিন চালাতো । এটাই সেই বিখ্যাত মধুর দার ক্যান্টিন ।

[ শাহ হুসেন তাদের এক বড় কবির নাম , তিনি ১৬ শতকের মোঘল আমলের কবি । তাঁর এক বন্ধুর নাম ছিলো মধু ]

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সামগ্রিকভাবে পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গি কী ছিল তা বুঝতে গেলে বা এ বিষয়ে কিছু রচনা করতে গেলে সংকলিত এই সাক্ষাৎকারগুলি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত হবে বলে বিশ্বাস করি
বই

[ রোড টু বাংলাদেশ সিরিজ ]
বইয়ের নাম • পাকিস্তানের দৃষ্টিতে একাত্তর
সম্পাদনা : • মুনতাসীর মামুন - Muntassir Mamoon , • মহিউদ্দিন আহমেদ
বই প্রকাশ হয়েছে : " ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড "
The University Press Limited (UPL) থেকে

প্রকাশক : মহিউদ্দিন আহমেদ

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:৪৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুহূর্ত কথাঃ সময়

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



সামুতে সবসময় দেখেছি, কেমন জানি ভালো ব্লগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়! যারা নিয়মিত লেখে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচণ্ড নেগেটিভ স্বভাবের মানুষ। অন্যকে ক্রমাগত খোঁচাচ্ছে, গারবেজ গারবেজ বলে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×