১৯৭১ সালে বাংলাদেশ এবং কাতার স্বাধীনতা লাভ করে। এ বছর এই দুটি দেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উজ্জাপন করছে! কত মিল দুটি দেশের মধ্যে। দুটি দেশই ছোট, দুটি দেশই মুসলিম দেশ। কিন্তু দুই দেশের আর্থসামাজিক, অর্থনৈতিক, বিশ্বে মর্যাদার আসন প্রায় সবই বিপরীত অবস্থানে। কাতার ভিত্তিক আল-জাজিরা টেলিভিশন শেখ হাসিনার লোকজন নিয়ে যে সচিত্র রিপোর্ট করেছে তা দেশের জনগণ আগেই বুঝতে পেরেছে। চরম দুর্নীতি, নির্যাতন, অব্যবস্থাপনা, সার্বভৌমত্ব বিসর্জন, রিজার্ভ চুরি এগুলো তারই প্রমাণ। আল-জাজিরার রিপোর্ট বিশ্বাসীর নজরে এনেছে মাত্র। বিশ্বে এখনও অনেক দেশ আছে যারা বাংলাদেশ সম্পর্কে খুব একটা জানেনা। মাঝে মধ্যে কিছু নেতিবাচক শিরোনামে বিশ্বগণমাধ্যমে বাংলাদেশের নাম আসে। এতে বহির্বিশ্বে যারা বাংলাদেশকে চেনে তার অধিকাংশ চেনে নেতিবাচক বাংলাদেশ। তারপরও বিশ্বে উন্নত দেশে বাংলাদেশী শ্রমিকের বেশ কদর কারণ সস্তা শ্রম, কর্মঠ কর্মী। স্বাভাবিক ভাবেই প্রবাসীরা দেশে মুদ্রা পাঠায় কারণ মাতৃভূমি প্রবাসীদের শেষ কথা। নাড়ীর টান, মাটির টান, ফেলে আসা শৈশব আর ফিরে জন্মভুমিতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের আশা। প্রবাসীদের এই প্রবল দেশপ্রেমকে দুর্বলতা মনে করে এই অবৈধ সরকার।পাসপোর্ট, ভিসা, বিমান, এম্বেসি,এয়ারপোর্ট প্রতিটি ধাপে প্রবাসীরা হেনস্তার শিকার।
কাতার এবং বাংলাদেশ একই সময় স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই দুই মুসলিম দেশ একই সময়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করেতে যাচ্ছে। কিন্তু স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরে বাংলাদেশ এবং কাতার এর মধ্যে আকাশ আর জমিন পার্থক্য। কাতারে মাথাপিছু বার্ষিক আয় প্রায় ৬৩ হাজার মার্কিন ডলার আর বাংলাদেশে মাথাপিছু ২ হাজারও হয়নি। কিন্তু দুর্ভাগ্য হল বাংলাদেশে যখন একটি শিশু জন্ম নেওয়ার সাথে সাথে তার মাথায় প্রায় আশি হাজার টাকার মত ঋণ। ২০২০ সালে এক রিপোর্টে দেশের মানুষের মাথাপিছু ঋণের বোঝা ৭৯ হাজার টাকা বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। দেশের ৯৮ ভাগ মানুষ এ ঋণ নেননি। কিন্তু যেভাবেই হোক শেষ পর্যন্ত তাদেরকে এ ঋণ ফেরত দিতে হবে বলে জানিয়েছে অর্থনীতি সমিতি। এই ঋণের বোঝা জনগণকেই বহন করতে হবে। কাতারে আছে বিশ্ব মানের কাতার এয়ারওয়েজ, আছে আল-জাজিরার মত আন্তর্জাতিক মানের টেলিভিশন। আর বাংলাদেশে আছে সরকারী মদদে গড়ে ওঠা মাফিয়া গং। আন্তর্জাতিক যেকোন নেতিকবাচক খবর দেশে অবৈধ সরকার হলেও প্রত্যাখান করবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু সচিত্র প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে শুধু প্রত্যাখান করলে হয় কিভাবে? তথ্য প্রমাণ দিয়েই তো ভুল প্রমাণ করে তবেই না প্রত্যাখান করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ সুদিনের অপেক্ষায় আর সেটা খুবই সন্নিকটে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৫