somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোট হয়ে আসছে সবই.......

১০ ই মার্চ, ২০০৯ রাত ১১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগে জানতাম পৃথিবী ছোট হয়ে যাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির এগিয়ে যাবার সাথে সাথে। আগে যেখানে কোথাও যেতে অথবা কোন খবর পৌছাতে যে সময় লাগত, এখন তারচেয়ে অনেক কম সময় লাগে শুধুমাত্র প্রযুক্তি অনেকদুর এগিয়ে গেছে বলে। কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি যে আরও অনেককিছুই ছোট হয়ে আসছে যেগুলো ছোট না হলেও তেমন কোন অসুবিধা ছিলনা। কিছু কিছু জিনিস এতবেশী ছোট হয়ে যাচ্ছে যে অদূর ভবিষ্যতে সেগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাবার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।


প্রথমেই চিন্তা করা যাক নামের ব্যাপারটা, সময়ের সাথে সাথে নামও ছোট হয়ে আসছে, সে নাম বাংলাতেই হোক বা ইংরেজীতেই হোক। হয়ত এখন আমরা অল্প কথায়ই মনের ভাব প্রকাশ করে ফেলতে পারছি। আইয়ুব বাচ্চু(Aiyub Bachchu) হয়ে যাচ্ছে AB, Justin Timberlake হয়ে যাচ্ছে JT, এমনকি এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে গালিগালাজের ক্ষেত্রেও, KP, HP, TMC ইত্যাদি জায়গা করে নিয়েছে আমাদের চিরায়ত গালিগুলোর বদলে। শুধু মুখের কথাই নয়, ছোট হয়ে এসেছে আমাদের লেখার ভাষাতেও। 'What's up' কালের বিবর্তনে 'Wassup' থেকে শুধু 'Ssup' এ নেমে এসেছে।


আরেকটা জিনিস যেটা সময়ের সাথে সাথে দিন দিন আশংকাজনকহারে ছোট হয়ে যাচ্ছে সেটি হচ্ছে কাপড়। 'পান্জাবী' ছোট হতে হতে হয়ে যাচ্ছে 'ফতুয়া', 'প্যান্ট' ছোট হতে হতে হয়ে যাচ্ছে 'থ্রী কোয়ার্টার'। এতো গেল পুরুষের কাপড়, মেয়েদের কাপড় শুধু সাইজেই নয়, গুণাগতদিক থেকেও ছোট হচ্ছে। এখনকার মেয়েদের পাতলা কাপড় দেখলে আদিকালের মসলিন শিল্পীরাও ভিরমি খেতেন। শুধুমাত্র যা না ঢাকলেই নয়, তাই ঢাকা হচ্ছে। যেহেতু সময়ের সাথে শীতকালও ছোট হয়ে এসেছে, সেহেতু তাদের অযথা দোষারোপ করেও লাভ নেই।


ছোট হয়ে আসা সবচেয়ে ভয়াবহ জিনিসটি হচ্ছে আমাদের মানসিকতা। আমাদের চিন্তাভাবনা সংকীর্ণ হতে হতে এমন একটা পর্যায়ে চলে এসেছে যে মন খুলে আমরা আজকাল আর চিন্তাই করতে পারিনা। দেশের এতবড় একটা বিপর্যয়ের সময় আমরা ব্যস্ত একে অন্যকে দোষারোপ করতে, যেখানে আমাদের উচিৎ ছিল দলমত নির্বিশেষে দোষী ব্যক্তিদের খুজে বের করা। কয়েকদিন আগে দেশে গিয়েছিলাম এক মাসের জন্য। একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখি আমাদের পুরো পাড়া র‌্যাব আর পুলিশে গিজগিজ করছে। খোজ নিয়ে জানতে পারলাম আমাদের পাড়ার ডাস্টবিনে একলোকের ১৪ টুকরা লাশ পাওয়া গেছে, আর পাড়ার সবাই তুমুল উৎসাহ নিয়ে লাশ দেখতে যাচ্ছে। কয়েকদিন পর আমি আবিষ্কার করলাম আমাদের গেটে সেই হতভাগ্য মানুষটির ১৪টুকরা লাশের পোস্টার লাগানো হচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম কেন এই বীভৎস পোস্টার লাগাচ্ছেন এখানে, তাদের একজন বললেন তারা এই ঘটনার বিচার চান। আমি জিজ্ঞেস করলাম যে মানুষটার ছবি লাগাচ্ছেন তার পরিবারের থেকে কি আপনারা অনুমতি নিয়েছেন? একবার কি ভেবে দেখেছেন যে তার পরিবারের কেউ বা তার সন্তানরা যদি এই পোস্টার দেখে তাদের মনের অবস্হাটা কেমন হতে পারে? কোন উত্তর না দিয়ে পোস্টার লাগাতে লাগাতে ছেলেটি বললো, দেখেন ভাই, আমাকে টাকা দেয়া হয়েছে পোস্টারগুলো লাগানোর জন্য, এত চিন্তা করলে তো আমাদের চলেনা রে ভাই। আপনার যদি ভালো না লাগে তাহলে পোস্টারটা ছিড়ে ফেলবেন পরে। এই বলে সে তার দলবল নিয়ে চলে গেল। আর আমি পোস্টারটি টেনে ছিড়তে ছিড়তে ভাবছিলাম আসলেই কি আমাদের কিছু করার নেই। যাবার পথে দেখলাম পুরো পাড়া ছেয়ে গেছে সেই ভয়াবহ পোস্টারে, সবাই মৌমাছির মত ঘিরে দেখছে সেসব। আমি হতাশ হয়ে তাকিয়ে দেখি আর মনে মনে আতংকিতবোধ করি। এছাড়া আমার আর কিইবা করার আছে?


~বিদঘুটে
১০/০৩/০৯
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০০৯ রাত ১১:৩০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×