নিউরনে আজ, আমার সাধুবেশী সাজ
লাল নীল সবুজ আলোর হেলায়।
কোন সে অজানা সরাব পানের পরে
উঠেছি মেতে মুখোশ মুখোশ খেলায়।
অদৃশ্য আবরণের কল্পিত সে মুখোশ
যাতে ঢাকা পরে গেছে আমার হত্যা, লুণ্ঠন, খুন।
যার স্পর্শে হৃদয়ে জেগেছে মানবতা
নিউরনে লেগেছে মহত্ব লাভের ঘুণ।
রুদ্ধ ক্ষিতির আর্তনাদে গড়া সে মুখোশ
সত্যি যদি হতো;যাতে ঢেকে যেত প্রাগৈতিহাসিক বন্যতা।
আলতো পরশে তার, রক্তাক্ত ক্ষতাক্ত সভ্যতাও
ভুলতে পারতো ধর্ষিত হওয়ার তীক্ততা।
হতোই না হয় সে এক মুখোশধারী ধরা
হতোই না হয় সে সব ভান করা সততা।
তবুতো সে মুখোশের ছোঁয়ায় আসত
মুর্ছিত এ ধরায় এক চিলতে সুখের বহতা।
কিন্তু আমি তো জানি আমার এ নেশাতুর চিন্তা;
বিজন বনে করে চলা নিষ্ফল আর্তির মতো।
একাকী হারিয়ে গিয়ে দেখে যাবে কেবল
আজিকার মুখোশহীন সভ্যতার বিভেদের ক্ষত।
বিলিয়ার রহমান
ঢাকা
৩০ মার্চ
২০১৭ ইং
কবিতার কথা:- রঙ্গশালায় কোন এক অজানা পানীয় পান করে কবি নেশায় বুদ হয়ে গেছেন।নেশায় আচ্ছন্ন কবি ভাবছেন তিনি একটা মুখোশ পরে আছেন। কবির ভাবনাটা এমন যে এই মুখোশ পরার ফলেই তিনি সৎ হয়ে গেছেন!
কবির কল্পিত সেই মুখোশের আড়ালে ঢাকা পরে গেছে তার সকল হত্যা, খুন, লুন্ঠন ।তাই তার মনে এখন ভালো কাজ করার ঘুন ধরে গেছে।
কবির ভাবছেন যদি সত্যি সত্যিই শৃঙ্খলিত পৃথিবীর কাতরতায় গড়ে ওঠা এ রকম একটা মুখোশ হতো । তবে তো মানুষ সময়ের সূচনা লগ্ন থেকে যে পশুত্ব ধারন করে আসছিলো তা ভুলে যেতো; হয়তো কবির মতো ভালোকাজ করার চিন্তায়ও বিভোর হয়ে যেতো। আর তাতে করে ক্লান্ত পৃথিবীটাও সব ভুলে আবার সুন্দর হয়ে উঠতে পারতো!
যদিও সে সুখের পুথিবীটা হতো মুখোশধারী। সকল সততা হত ভান করা। তবুও অল্পকালের জন্য হলেও তো পৃথিবীতে সুখের প্রবাহ বইতো।
কিন্তু কবি জানেন এ কেবলই তার একটা নেশাতুর চিন্তা। এরকম একটা মুখোশ প্রত্যাশা করা জনশূন্য বনে কোন আর্তি করবার মতোই নিস্ফল । তাই কবির এ আকাঙ্ক্ষা কখনোই সত্যি হবে না।তাই কবিকে কেবল দেখে যেতে হবে সুখের আহ্বানকারী সে মুখোশহীন পৃথিবীকে। যেখানে বিভেদ, যুদ্ধ ও বিগ্রহসহ নানা ঘাত প্রতিঘাত পৃথিবীকে প্রতিনিয়তই ধর্ষণ করে চলবে!!!!
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১১